Tuesday, August 26, 2025

ডাবল ইঞ্জিন দিল্লি শেষ করেছে, ত্রিপুরাও শেষ করবে! বিজেপিকে তোপ মমতার, বাম-কংগ্রেসকেও কটাক্ষ

Date:

সোমনাথ বিশ্বাস, আগরতলা: আসন্ন ত্রিপুরা বিধানসভা নির্বাচনে দলীয় প্রার্থীদের সমর্থনে প্রচার করতে এসে আগরতলার বুকে কার্যত ঝড় তুললেন তৃণমূল নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। মঙ্গবার প্রথমে দলের প্রার্থীদের নিয়ে রবীন্দ্র ভবন থেকে প্রায় সাড়ে পাঁচ কিলোমিটার পথ পায়ে হাঁটেন তৃণমূল সুপ্রিমো। তাঁকে একপলক দেখার জন্য রাস্তার দু’পাশে তখন জনসুনামি।

তখন এক মুহূর্তের জন্য বোঝার উপায় ছিল না, তাঁর রোড-শো বাংলার কোনও রাস্তায় হচ্ছে নাকি ভিনরাজ্য ত্রিপুরায়। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় যখন পদযাত্রা শেষ করলেন, তখন রবীন্দ্র ভবনের সামনে তৃণমূলের সভা মঞ্চের সামনে তখন জন জোয়ার। শুধুই কালো মাথার ভিড়। নেত্রী বক্তব্য রাখতে ওঠার সময় শঙ্খধ্বনিতে তাঁকে অভ্যর্থনা করেন ত্রিপুরা তৃণমূলের মহিলা সমর্থকরা। তিনিও ধন্যবাদ জানান।

এদিন তাঁর বক্তব্যের শুরু থেকেই আক্রমণাত্মক
ছিলেন তৃণমূল নেত্রী। ডাবল ইঞ্জিন বিজেপিকে যেমন একহাত নিয়েছেন, ঠিক একইভাবে বাম-সিপিএম অশুভ আঁতাতকেও কটাক্ষ করতে ছাড়েননি তিনি। নেত্রীর কথায়, “আমাদের সাংসদ দোলা সেনের গাড়ি ভাঙচুর হয়েছে। সুস্মিতা দেব, অভিষেকের ওপরও অত্যাচার হয়েছে। কুণালকে একের পর এক মিথ্যা মামলা দেওয়া হয়েছে। সাংবাদিকদেরও ছাড়া হয়নি।”

আগরতলায় ভরা জনসভা থেকে বাংলার মুখ্যমন্ত্রীর অভিযোগ, “এখানকার ডাবল ইঞ্জিন বিজেপি সরকার তৃণমূলের কর্মীদের ওষুধ দিত না, চিকিৎসা দিত না। এসব কথা ভুলব না। ডবল ইঞ্জিন তো দিল্লিও ধুয়ে দিয়েছে, ত্রিপুরাকে কী করে বাঁচাবে? অত্যাচারী সিপিএমের সরকার ছিল এখানে। ভোট থাকলে দেখা পাবেন, ভোট না
থাকলে উধাও। বাংলায় রাম-বাম-শ্যাম এক হয়ে আমাদের বিরুদ্ধে লড়ে। ত্রিপুরাতেও জগাই-মাধাই-গদাইরা এক হয়েছে। তাই কংগ্রেস বা সিপিএম নয়। বিজেপির বিকল্প শুধু তৃণমূলই। সিপিএম ২৫ বছরে ত্রিপুরাকে শেষ করে ফেলেছে। আর কংগ্রেস ত্রিপুরায় সিপিএমের বি টিম হিসাবে কাজ করছেন। মমতার অভিযোগ, কংগ্রেসে দলবদলু ভরতি। তাঁরা চার বছর ক্ষমতায় থাকার জন্য দল বদলান। কংগ্রেস তৃণমূলের এই আঁতাত বুঝতে পেরেই আমি তৃণমূল গঠন করেছিলাম। তৃণমূল না গঠন করলে কংগ্রেসকে দিয়ে বাংলায় পরিবর্তন হত না।”

কেন্দ্রের বঞ্চনার কথা তুলে ধরে তৃণমূল নেত্রী বলেন, “পশ্চিমবঙ্গে হাজার হাজার ছেলেমেয়ে চাকরি পাচ্ছে। আর ওরা ভোটের আগে ১৫ লক্ষ টাকা দেবে বলেছিল, কেউ পেয়েছেন? বাজেটের আগে সরকারটাই পড়ে যেতো। ডাবল ইঞ্জিন বেশিদিন থাকলে এলআইসি, ব্যাংকে জমাও টাকাও আর পাবেন না। ওরা আমাদের থেকে টাকা তুলে নিয়ে যায়, কিন্ত। ১০০ দিনের কাজে গরীব মা মানুষের প্রাপ্য আটকে দেয়। তাদের ভোট চাইবার কোনও অধিকার নেই। ওদের দুটি ইঞ্জিন ইডি আর সিবিআই। যখনই কারও সঙ্গে রাজনৈতিক লড়াইয়ে পেরে ওঠে না তখনই তার বাড়িতে ইডি পাঠিয়ে দেয়। ত্রিপুরার ডাবল ইঞ্জিন সরকার শিক্ষকদের প্রতিশ্রুতি দিয়েও কথা রাখেনি। শিক্ষা-স্বাস্থ্যের বেহাল দশা। আমাদের দু-একটা ভুল হয়েছে, যারা করেছে, তাদের আইনি পথে শাস্তি হবে। আর ভোটের দিন ডাবল ইঞ্জিন ভয় দেখালে, ওদের ভোট দেবেন বলবেন, আর বুথে গিয়ে চুপ করে জোড়াফুলে ছাপ দেবেন।”

দলবদলুদের জন্য দলের সংগঠনের ক্ষতি হয়েছে সেটাও বিলক্ষণ জানেন মমতা। তাই ত্রিপুরাবাসীর উদ্দেশে তাঁর আর্জি, “আপনারা বাম অপশাসন দেখেছেন, বিজেপি দেখেছেন, কংগ্রেসের সরকারও দেখেছেন। একবার তৃণমূলকে সমর্থন করুন। আমরা বাংলায় পেরেছি, ত্রিপুরায় পারব। আর যদি প্রত্যাশা পূরণ করতে না পারি তাহলে ফিরিয়ে দেবেন। আমি আগেও ত্রিপুরায় এসেছি। আস্তাবলের মাঠে অনেক সভা করেছি। ভোটের পর আবার আসবো। দেখবো ডাবল ইঞ্জিন, সিঙ্গেল ইঞ্জিন নাকি মানুষের ইঞ্জিন সরকার গড়ে এখানে।”

Related articles

দুর্গাপুজোর আগে রাজ্যে ডেঙ্গি-উদ্বেগ! টানা বৃষ্টিতে বাড়ছে আশঙ্কা 

দুর্গোৎসবের মুখে একদিকে নিম্নচাপের জেরে টানা বৃষ্টি, অন্যদিকে ডেঙ্গি সংক্রমণ রাজ্যবাসীর কপালে ভাঁজ বাড়াচ্ছে। জুলাইয়ের শেষ দিক থেকে...

মহিলা স্বনির্ভর গোষ্ঠীর স্টলে হঠাৎ মুখ্যমন্ত্রী! কিনলেন শাড়ি 

বর্ধমানে প্রশাসনিক সভায় এসে হঠাৎ স্বনির্ভর গোষ্ঠীর স্টলে হাজির মুখ্যমন্ত্রী। শুধু মহিলাদের হাতের কাজই ঘুরে দেখলেন না, কেনাকাটাও...

ধনধান্যে ভরে, মা এসেছে ঘরে: মুখ্যমন্ত্রীর লেখা-সুরে গান এবার দুর্গাপুজোয়

বাংলা ও বাঙালির বড় উৎসব আর পুজোর গান— এক অপূর্ব মেলবন্ধন। এখন দুর্গাপুজোয় মণ্ডপে মণ্ডপে বাজে মুখ্যমন্ত্রীর লেখা...

প্রধানমন্ত্রী বাংলা ছাড়তেই জীবনকৃষ্ণের গ্রেফতারি তৃণমূলকে অপদস্থ করার চক্রান্ত, তোপ কুণালের      

ইডির (ED) হাতে জীবনকৃষ্ণ সাহার (Jiban Krishna Saha) গ্রেফতারি আসলে তৃণমূল কংগ্রেসকে (TMC) অপদস্থ করার চক্রান্ত। প্রধানমন্ত্রী বাংলায়...
Exit mobile version