Sunday, August 24, 2025

উপাসনা গৃহে “কুকথা”র জের, বিশ্বভারতীর উপাচার্যের বিরুদ্ধে মোদিকে নালিশ চিঠি

Date:

উপাসনা গৃহের পবিত্র অঙ্গনে সাপ্তাহিক উপাসনায় উপাচার্য বারবার ‘কুমন্তব্য’ করছিলেন বলে অভিযোগ।‌ এবার বিশ্বভারতীর উপাচার্যর বিরুদ্ধে খোদ প্রধানমন্ত্রীকে চিঠি। উপাসনা গৃহে বসে উপাচার্য বিদ্যুৎ চক্রবর্তীর আপত্তিকর কথাবার্তা, এমনই অভিযোগ করে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদিকে চিঠি লিখল শান্তিনিকেতন ট্রাস্ট।

আরও পড়ুন:বিজেপির দালাল বিশ্বভারতীর উপাচার্য, অপসারণের দাবিতে শান্তিনিকেতনে প্রতিবাদ সভা বাংলা পক্ষর

সম্প্রতি, অমর্ত্য সেনের সঙ্গে জমি বিবাদ থেকে শুরু করে একাধিক ইস্যুতে উপাচার্য বিদ্যুৎ চক্রবর্তীর আক্রমণের নিশানায় ছিলেন বিশ্বভারতীর প্রাক্তনী, আশ্রমিক ও স্থানীয়রা। এনিয়ে শান্তিনিকেতন ট্রাস্টকে স্মারকলিপি দিয়েছিলেন বিশ্বভারতী ও রবীন্দ্রপ্রেমীরা। তারপরেও মন্দিরে বসে উপাচার্য চুপ করেননি। বরং, আরও ঝাঁঝালো ভাষায় আক্রমণ করেন উপাচার্য। এমনকী, দুর্গাপুজো নিয়েও বিতর্কিত মন্তব্য করেন তিনি। এবার তাই উপাচার্যের বিরুদ্ধে পদক্ষেপ নিতে সরাসরি প্রধানমন্ত্রী তথা বিশ্বভারতীর আচার্য নরেন্দ্র মোদিকে চিঠি লিখল শান্তিনিকেতন ট্রাস্ট।

উল্লেখ্য, উপাসনা গৃহ শান্তিনিকেতন ট্রাস্টের সম্পত্তি। সেখানে সাপ্তাহিক উপাসনা সহ রবীন্দ্র জন্মজয়ন্তী, খ্রিস্ট উৎসব প্রভৃতি গুরুত্বপূর্ণ উৎসব আয়োজন করে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। অভিযোগ, সাপ্তাহিক উপাসনার মঞ্চ ব্যবহার করে উপাচার্য প্রাক্তনী, আশ্রমিক ও স্থানীয়দের বিভিন্ন সময়ে কড়া ভাষায় আক্রমণ করছিলেন।আশ্রমিকদের বাক্যবাণে বিদ্ধ করে তাঁদের শিক্ষাগত যোগ্যতা নিয়েও প্রশ্ন তুলেছেন তিনি। এমনকী, ‘অশিক্ষিত’, ‘অল্পশিক্ষিত’, ‘বুড়ো খোকা’ বলেও কটাক্ষ করেন। এছাড়া দুর্গাপুজোর মতো ঐতিহ্যবাহী উৎসব নিয়েও বিতর্কিত মন্তব্য করেন বলে অভিযোগ। ‌তিনি বলেছিলেন, ‘দুর্গাপুজোর প্রচলন হয়েছিল ব্রিটিশদের পদলেহন করার জন্য। দুর্গা মঞ্চে ব্রিটিশদের জন্য নানারকম পানীয় রাখা হতো পান করার জন্য।’ বাঙালি শ্রেষ্ঠ উৎসব নিয়ে উপাচার্যের এহেন মন্তব্যে তীব্র বিতর্কের সৃষ্টি হয়।

উপাচার্যর একের পর এক অপমানজনক, বিতর্কিত এবং কুকথার জেরে স্থানীয় রবীন্দ্রপ্রেমী মানুষজন উপাচার্যের বিরুদ্ধে সরব হন। গত ২২ ফেব্রুয়ারি তাঁরা শান্তিনিকেতন ট্রাস্টকে চিঠি লিখে উপাচার্যের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে আর্জি জানান। তারপরও মন্দিরে বসে উপাচার্যের বিতর্কিত মন্তব্য বন্ধ হয়নি। তাই বিষয়টিকে গুরুত্ব দিয়ে দেখতে এবার প্রধানমন্ত্রীকে চিঠি লিখল শান্তিনিকেতন ট্রাস্ট।

ট্রাস্টের সম্পাদক অনিল কোনার প্রধানমন্ত্রীকে দেওয়া চিঠিতে লিখেছেন, “বেদনাদায়ক প্রয়োজনে আমরা আপনার দৃষ্টি আকর্ষণ করছি। বিশ্বভারতীর উপাচার্য বিদ্যুৎ চক্রবর্তী বারবার ব্রহ্ম উপাসনা গৃহকে ব্যবহার করে আশ্রমিক, প্রাক্তনী ও স্থানীয়দের অপমান করছেন। এমনকী, দুর্গাপুজোর ঐতিহ্যের বিরুদ্ধে অত্যন্ত জঘন্য মন্তব্য করেছেন। নিরাকার ব্রহ্ম উপাসনা গৃহে বসে দুর্গাপুজোর হিন্দু ঐতিহ্যের বিরুদ্ধে কিছু বিতর্কিত এবং অবমাননাকর মন্তব্য করা অত্যন্ত অসংবেদনশীল। যা উস্কানিমূলক কাজ। এতে এলাকায় শান্তিভঙ্গ করতে পারে। এই পরিস্থিতিতে আমরা আপনার কাছে বিদ্যুৎ চক্রবর্তীকে বিরত করার জন্য আবেদন করছি।” শান্তিনিকেতন ট্রাস্টের এই ভূমিকাকে স্বাগত জানিয়েছেন প্রাক্তনী আশ্রমিক ও বিশ্বভারতীর অধ্যাপক সংগঠন ভিবিইউএফএ।

 

 

Related articles

পরিযায়ী শ্রমিকদের জন্য ‘শ্রমশ্রী’ প্রকল্পে নাম নথিভুক্তি শুরু

পরিযায়ী শ্রমিকদের সুবিধার্থে এবার আরও এক পদক্ষেপ রাজ্য সরকারের। ‘আমাদের পাড়া আমাদের সমাধান’ কর্মসূচির আওতায় দুয়ারে সরকার শিবিরেও...

‘নিখুঁত ভুলগুলি’, উৎপল সিনহার কলম

একটা দুঃখের কথা পথে ও বিপথে ঘুরে প্রত্যাখ্যাত হতে হতে গান হয়ে ওঠে ...একটি দুঃখের কথা পথে ও বিপথে ঘুরে প্রত্যাখ্যাত হতে হতে গান...

ষোলতেই ১৩০ কেজি! ছেলের খাবার জোগাতেই নাজেহাল বাবা-মা

মুর্শিদাবাদ জেলার সাগরদিঘি থানার কাবিলপুর পঞ্চায়েতের মথুরাপুর গ্রাম। এখানেই থাকেন দিনমজুর মুনশাদ আলি। তাঁর ছোট ছেলে জিশান আলি...

কবে থেকে শুরু জয়েন্টের কাউন্সেলিং? দিনক্ষণ জানিয়ে দিল বোর্ড

ফলপ্রকাশের পর এবার ১৫ দিনের মধ্যেই কাউন্সেলিং প্রক্রিয়া তথা ভর্তি প্রক্রিয়া শেষ করবে জয়েন্ট এন্ট্রান্স বোর্ড। এবার কাউন্সেলিং...
Exit mobile version