Friday, July 4, 2025

ব্যাপক আর্থিক বৃদ্ধির জেরে ঋণের ভার কমছে বাংলার, জানালো খোদ কেন্দ্র

Date:

Share post:

রাজ্যের দিনের বোঝা নিয়ে গেল গেল রব তুলেছে বিরোধীরা। তবে কেন্দ্রীয় সংস্থার সাম্প্রতিক রিপোর্ট বলছে রাজ্যের ঋণের(Loan) ভার ক্রমশ কমছে। রাজ্যের ঋণ হয়তো বেড়েছে কিন্তু পাল্লা দিয়ে বেড়েছে রাজ্যের আর্থিক অবস্থা। যার প্রেক্ষিতেই খোদ কেন্দ্রীয় সংস্থা ও রিজার্ভ ব্যাঙ্ক অফ ইন্ডিয়া(RBI) জানাচ্ছে, ঋণের ভারে বাংলা ডুবছে না বরং ঋণের বোঝা কমছে। আরবিআইয়ের রিপোর্ট বলছে, রাজ্যে লাগাতারভাবে কমছে ঋণ এবং জিএসডিপির(GSDP) অনুপাত।

গোটা বিষয়টি খোলসা করলে যা দাঁড়ায় তা হল, গত অর্থবর্ষ শেষে রাজ্য সরকারের ঋণের অঙ্ক ছিল ৫ লক্ষ ২৮ হাজার কোটি টাকা। চলতি অর্থবর্ষ শেষে, অর্থাৎ মার্চের মধ্যে তা ৫ লক্ষ ৮৬ হাজার কোটি টাকায় পৌঁছতে পারে। বাংলায় ঋণের পরিমাণ বাড়লেও আর্থিক বৃদ্ধির হারের নিরিখে তা লাগাতার চলে যাচ্ছে পিছনের সারিতে। কীভাবে? ধরে নেওয়া যাক, এক ব্যক্তির আয় ১০০ টাকা। তাঁর ঋণের পরিমাণ ৫০ টাকা। পরের মাসে দেখা গেল, তাঁর ঋণ হয়েছে ৭০ টাকা। অর্থাৎ লোনের পরিমাণ বেড়েছে। কিন্তু একইসঙ্গে যদি দেখা যায়, আয় বেড়ে হয়েছে ১৫০ টাকা? আনুপাতিক হারে তাহলে কিন্তু ঋণের অঙ্ক আর আগের মাসের মতো বোঝা হয়ে ঘাড়ের উপর চাপবে না। একই অঙ্ক খাটছে রাজ্যের ক্ষেত্রে। আরবিআই সম্প্রতি রাজ্যগুলির আর্থিক অবস্থার উপর একটি রিপোর্ট পেশ করেছে এই কেন্দ্রীয় ব্যাঙ্ক। সেখানে বলা হয়েছে, ২০১১ সালের মার্চ শেষে রাজ্যে ঋণের ভার ছিল ৪১.৯ শতাংশ। সহজ কথায়, রাজ্যে ১০০ টাকার পণ্য উৎপাদন হলে, ঋণের ভার ছিল প্রায় ৪২ টাকা। তারপর তা ধাপে ধাপে নেমে আসে ৩৪.৬ শতাংশে। কিন্তু ২০১৫-১৬ অর্থবর্ষ শেষে তা আচমকাই বেড়ে পৌঁছায় ৩৯.৫ শতাংশে। এরপর অবশ্য লাগাতারভাবে কমেছে সেই ঋণভার। ২০২১ সালের মার্চ শেষে তা দাঁড়ায় ৩৮.২ শতাংশে। পরের অর্থবর্ষ, অর্থাৎ ২০২১-২২ শেষে ঋণ ও জিডিপির অনুপাত দাঁড়ায় ৩৫.৮ শতাংশে। চলতি বছর শেষে তা ৩৫.৫ শতাংশে নেমে আসবে বলে মনে করা হচ্ছে, জানিয়েছে রিজার্ভ ব্যাঙ্ক।

রিজার্ভ ব্যাঙ্কের পাশাপাশি কেন্দ্রীয় সংস্থা ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অব পাবলিক ফিনান্সও জানাচ্ছে, ২০১৫-১৬ অর্থবর্ষ থেকে ২০২০-২১ অর্থবর্ষ পর্যন্ত ছ’বছরে রাজ্যগুলিতে যেভাবে ঋণের নিরিখে জিডিপির অনুপাতের বদল হয়েছে, তাতে সবচেয়ে উজ্জ্বল জায়গায় আছে বাংলা। তারপরই গোয়ার স্থান। একমাত্র এই দু’টি রাজ্যই লাগাতারভাবে ঋণের ভার কমিয়ে ফেলতে সক্ষম হয়েছে। বাকি সব ক’টি রাজ্যে ঋণের হার বেড়েছে। সেই তালিকায় সবার আগে আছে পাঞ্জাব। সেখানে ঋণের হার বেড়েছে ১৫.৫ শতাংশ। এরাজ্যে সেই ঋণের ভার কমেছে ১.৬ শতাংশ।

এই আর্থিক বৃদ্ধির জন্য রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রীর দূরদৃষ্টির প্রশংসা করেছেন প্রাক্তন অর্থমন্ত্রী তথা বর্তমান মুখ্যমন্ত্রী ও অর্থ দপ্তরের প্রধান মুখ্য উপদেষ্টা অমিত মিত্র। তিনি বলেন, মুখ্যমন্ত্রী একের পর এক প্রকল্প রাজ্যের মানুষের হাতে নগদ টাকা তুলে দিয়েছে। তা সে লক্ষ্মীর ভাণ্ডারই হোক, বা রূপশ্রী, কন্যাশ্রী। যে টাকা সাধারণ মানুষ পাচ্ছে, তার ৯৮ ভাগই ফিরে আসছে বাজারে। অর্থাৎ মানুষ সেই টাকা খরচ করছেন। তাতে অর্থনীতির চাকা ঘুরছে। রাজ্যের নিজস্ব জিডিপি’তে তার প্রভাব পড়ছে। আর এটাই এই সাফল্যের চাবিকাঠি।

spot_img

Related articles

গিলের চওড়া ব্যাটে রানের পাহাড়ে টিম ইন্ডিয়া

শুভমন গিলের (Shubman Gill) অধিনায়কোচিতো ইনিংস। আর তাতেই রানের পাহাড়ে টিম ইন্ডিয়া। ইংল্যান্ডের বিরুদ্ধে এজবাস্টনে (Edgebaston) ইতিহাস লিখেছেন...

রেলের সিগন্যাল কেবল ক্ষতিগ্রস্ত করার অভিযোগ ওড়াল ডব্লিউবিএসইডিসিএল 

রেলের সিগন্যাল কেবল ক্ষতিগ্রস্ত করার অভিযোগ ওড়াল ডব্লিউবিএসইডিসিএল। সংস্থার স্পষ্ট বক্তব্য, ওভারহেড তারের বদলে আন্ডারগ্রাউন্ড কেবল সিস্টেম করা...

কেন রুদ্ধদ্বার শুনানি? বিজেপির ‘ধর্ষকবন্ধু’ কার্তিক মহারাজের জবাব চাইল হাই কাের্ট 

ধর্ষণের অভিযোগে পুলিশি তলবে সাড়া না দিয়ে গ্রেফতারি এড়াতে হাইকোর্টের শরণাপন্ন হয়েছেন বিজেপির ‘ধর্ষকবন্ধু’ কার্তিক মহারাজ। বিচারপতি জয়...

বেসরকারি হাসপাতালে চিকিৎসকদের হুমকির অভিযোগ! বিজেপি নেতা কৌস্তভকে নোটিশ থানার 

ওয়্যারলেস মোড় লাগোয়া একটি বেসরকারি হাসপাতালে রোগীমৃত্যু ঘিরে অশান্তির আবহে বিজেপি নেতা ও আইনজীবী কৌস্তভ বাগচীর বিরুদ্ধে ‘হুমকি‑হেনস্তা’র...