তিলজলাকাণ্ডে রাজনৈতিক অ*ভিসন্ধি নেই তো? উঠছে প্রশ্ন

প্রতিবাদের নামে দিনভর চলা তাণ্ডবের পেছনে কী কাজ করছে কোনও রাজনৈতিক অভিসন্ধি? তিলজলায় এক নাবালিকাকে খুনের ঘটনার প্রতিবাদে সোমবার ঘটে যাওয়া তাণ্ডবের পরে আপাতত এই প্রশ্নই ঘুরছে এলাকার বাসিন্দাদের মনে। শুধু তাই নয় মৃতার পরিবারের মনেও একই প্রশ্ন। সত্যিই কী শিশুখুনে তন্ত্রসাধনার যোগ রয়েছে? নাকি অভিযুক্ত মনগড়া গল্প বলছে? কারণ ধৃত তান্ত্রিকের অস্তিত্ব নিয়েও সংশয় প্রকাশ করেছেন লালবাজার গোয়েন্দা দফতর।

আরও পড়ুন:তিলজলাকাণ্ডে অ*শান্তি ছড়ানোর ঘটনায় গ্রে*ফতার ২০
অন্যদিকে, এলাকার বাসিন্দাদের একাংশ জানাচ্ছেন, মহিলাদের সঙ্গে নিয়ে স্থানীয়েরাই প্রথমে বিক্ষোভ শুরু করেছিলেন। শেষের দিকে প্রতিবাদের নামে যাঁরা রাস্তায় নেমে তাণ্ডব শুরু করেছিলেন, তাঁদের অনেককে তাঁরা চেনেন না বলেও দাবি করছেন স্থানীয়েরা।

শিশুটির দাদুর অভিযোগ, ‘পুলিশকে লক্ষ্য করে ইট, গাড়িতে আগুন— এ সব আমাদের উদ্দেশ্য ছিল না। মানুষের ভোগান্তি বাড়িয়ে তো নাতনিকে আর ফিরে পাব না। কেন, কারা এমনটা করল, জানি না। এ সবের জেরে আমাদের মেয়েটা শেষ বারের জন্য বাড়িতেও ফিরতে পারল না।’
প্রসঙ্গত, তান্ত্রিকের নির্দেশমতো সন্তানলাভের আশায় তিলজলার শিশুকন‌্যাকে খুন করেছে বলে অভিযুক্ত জানিয়েছে। নিমতলা ঘাটেই নাকি ওই তান্ত্রিকের সঙ্গে তার পরিচয় হয়েছিল। তান্ত্রিকই শিশুটিকে নবরাত্রির মধ্যে বলি দিতে বলেছিল। ধৃতের বয়ানের সূত্র ধরে মঙ্গলবার তদন্তকারী টিম নিমতলা ঘাটে অভিযুক্ত তান্ত্রিকের খোঁজ করেন। সেখানে থাকা তান্ত্রিকদের জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়। কিন্তু অলোকের বর্ণনা দেওয়া তান্ত্রিকের সন্ধান মেলেনি। এমনকী, যে নাম বলা হয়েছে ওই নামের কোনও তান্ত্রিক নিমতলা ঘাটে নেই বলে তাঁদের জিজ্ঞাসাবাদ করে পুলিশ জানতে পারে। নিমতলার পাশাপাশি কলকাতার প্রতিটি ঘাট ও শশ্মান যেখানে তন্ত্রসাধনা করা হয়ে থাকে সেখানে খোঁজ চালানো হয়।

লালবাজার সূত্রে খবর, ধৃতের দেওয়ার তথ‌্য ধরে তান্ত্রিকের খোঁজ চালানো হচ্ছে। যেখানে তান্ত্রিকের সঙ্গে অলোকের পরিচয় হয়েছিল সেখানে গিয়ে খোঁজ নেওয়া হয়েছে। কেউ ওই নামে কোনও তান্ত্রিককে চেনেন না বলে জানিয়েছেন। ধৃতের বয়ানেও একাধিক অসঙ্গতি রয়েছে। এই ঘটনার সঙ্গে বাস্তবে কোনও তান্ত্রিকের ভূমিকা রয়েছে কি না তা নিয়ে গোয়েন্দারাই সন্দেহ প্রকাশ করছেন। কারণ যে পদ্ধতিতে নরবলি দিতে বলা হয়েছিল তাতে কিছুটা আশ্চর্য লালবাজার গোয়েন্দারা।

দেখা গিয়েছে যে নরবলির শিকার হয়, তাকে প্রতিমার সামনেই বলি দেওয়া হয়। তার শরীরে কোনও খুঁতও থাকা যাবে না। কিন্তু এক্ষেত্রে তান্ত্রিক অলোককে বলেছিল, আট বছরের মধ্যে বয়স এমন এক শিশুপুত্র বা কন্যাকে নবরাত্রির মধ্যে খুন করে একটু রক্ত বের করলেই হবে। মৃত সেই শিশুর আত্মা সোজা প্রবেশ করবে অলোকের অন্তঃসত্ত্বা স্ত্রীর গর্ভে। তাহলে আর স্ত্রীর গর্ভপাত হবে না। কিন্তু অলোক শিশুটিকে যৌন নির্যাতনও করেছিল। তাহলে যৌন নির্যাতন করে খুনের ঘটনা থেকে নজর ঘোরাতে নরবলির গল্প সাজিয়েছে অভিযুক্ত? নাকি শবসাধনা করতে তান্ত্রিক স্ত্রীর গর্ভপাত রোধের টোপ দিয়ে অলোককে কাজে লাগিয়ে শিশু খুন করায়। এই সব সম্ভাবনাও উড়িয়ে দিচ্ছে না পুলিশ। সেজন‌্য অভিযুক্ত তান্ত্রিককে হাতে পেতে চাইছেন গোয়েন্দারা।রাজ্যজুড়ে চলছে তান্ত্রিকের খোঁজ।

 

 

Previous articleফের ভূ*মিকম্পে কেঁপে উঠল আফগানিস্তান, কম্পনের মাত্রা ৪.৩
Next articleবুধেই কর্ণাটকে বিধানসভার দিন ঘোষণা