Tuesday, May 20, 2025

শকুনের বাসস্থানে মা শকুন্তলা! কোন্নগরের জাগ্রত পুজো ঘিরে বাড়ছে উন্মাদনা

Date:

Share post:

সুমন করাতি, হুগলি

আগামী ১৩ মে শনিবার হুগলি জেলার কোন্নগরে (Konnagar, Hooghly) ঐতিহ্যবাহী এবং জাগ্রত মা শকুন্তলার (Shankuntala Kali Puja)১৩৪ তম বার্ষিক উৎসব। পুজো উপলক্ষে এলাকার তো বটেই এমনকি পার্শ্ববর্তী এলাকা থেকেও মানুষ ভিড় জামান মন্দির প্রাঙ্গণে। হাতে মাত্র একটা দিন তাই শেষ পর্যায়ে প্রস্তুতি সেরে নিচ্ছেন উদ্যোক্তারা। নিরাপত্তার ঘেরাটোপে মুড়ে ফেলা হয়েছে কোন্নগরকে (Konnagar) ।

মহামারী ও মানুষের বিপদ কাটাতে শকুনদের বাসস্থানে মা শকুন্তলা কালীর আবির্ভাব। পুজোকে ঘিরে প্রাচীন কাল থেকেই একাধিক বিশ্বাস চলে আসছে এলাকার মানুষের মনে । এই দেবী নাকি সূর্যের মুখ দেখেন না। কোন্নগরের শকুন্তলা পুজোর ইতিহাস সম্বন্ধে জানা যায়, বর্তমানে এস সি চ্যাটার্জি (S C Chatterjee) স্ট্রিটের যে রাস্তাটি রয়েছে কয়েকশবছর আগে সেই রাস্তার দু ধার ছিল জঙ্গলে ভরা। কথিত আছে একদিন সন্ধ্যায় এক বৃদ্ধ ব্রাহ্মণ ওই স্থানে একটি অল্প বয়সী মেয়েকে দেখেন যে গঙ্গা স্নান করে একটি অশ্বত্থ গাছের তলায় দাঁড়ায়। এরপর সেই নারী মূর্তিটি হঠাৎই উধাও হয়ে যায় । তারপর সেই রাতেই ওই ব্রাহ্মণ স্বপ্নে মায়ের নির্দেশ পান এবং মা বলেন,” তুমি এখানে আমার মন্দির করে পূজোর ব্যবস্থা কর।” মায়ের সেই আদেশ মেনে সেই ব্রাহ্মণ ওখানে একটি ছোট্ট কুঁড়েঘর করে শকুন্তলা মায়ের পূজা শুরু করেন। যেহেতু এই জঙ্গলে গাছে প্রচুর শকুন, চিল সহ পাখিদের বাসা ছিল তাই এখানকার মা শকুন্তলা মা নামে বিখ্যাত।

পুজো কমিটির সম্পাদক পাঁচু গোপাল গরান (Panchu Gopal Goran) জানান যে এই পুজোর একটা দীর্ঘ ইতিহাস রয়েছে যা কোন্নগরবাসীর মুখে মুখে ফেরে। এবার ১৩ মে শনিবার পুজোর আয়োজন করা হয়েছে। এখানকার বাসিন্দারা বিশ্বাস করেন যে শকুন্তলা মা পল্লীবাসীকে বিপদে রক্ষা করেন। প্রতিবছর বৈশাখ মাসের শুক্ল পক্ষের অমাবস্যা তিথিতে মায়ের পুজো হয়। এই পুজোর বিশেষত্ব হচ্ছে পুজোর দিন যখন সূর্য অস্ত যায় সেই সময় মাকে এখানকার সমস্ত ভক্তরা কাঁধে করে নিয়ে এসে মন্দিরে স্থাপন করেন তারপর সারারাত পুজোর পর সেই মাতৃ প্রতিমা সূর্যোদয়ের আগেই গঙ্গায় বিসর্জিত হন। এইটাই এখানকার রীতি।পুজোর দিন সকাল থেকেই শুধু হুগলি জেলা নয়, আশেপাশের এলাকা থেকেও কয়েক লক্ষ মানুষ এসে এখানে এসে গঙ্গায় স্নান করে মন্দিরে মায়ের বেদিতে জল ঢালেন।

প্রতিবছর মায়ের উৎসব উপলক্ষে এখানে আট থেকে দশ দিনব্যাপী বিশাল মেলা বসে। সেই মেলায় প্রচুর মানুষ আসেন । গত দুবছর করোনার কারণে এখানে ঘট পুজোর আয়োজন করা হয়েছিল কিন্তু এ বছর মায়ের আশীর্বাদে আবার মূর্তি নিয়ে এসে মায়ের আরাধনা হবে।

 

spot_img

Related articles

পাক বিরোধী প্রচারের প্রতিনিধি দলে থাকুন জওয়ানরা, শহিদ-মৃতদের পরিবারও: প্রস্তাব অভিষেকের

পাক বিরোধী প্রচারে বিদেশে পাঠানো প্রতিনিধি দলে থাকুন দেশের অতন্দ্র প্রহরী জওয়ানরা। থাকুন শহিদ ও মৃতদের পরিবারের সদস্যরাও।...

সৌভিক, জ্যোতির্ময়ীদের হাতে উদ্বোধন ক্রীড়া সাংবাদিক ক্লাবের স্পোর্টস মিউজিয়াম

অভিনব উদ্যোগ ক্যালকাটা স্পোর্টস জার্নালিস্ট ক্লাবের(CSJC)। শহরের বুকে নয়, এবার জেলাতে স্পোর্টস মিউজিয়াম(Sports Museum)। ক্যালকাটা স্পোর্টস জার্নালিস্ট ক্লাবের...

এফডি-তে সুদের হার ফের কমাল এসবিআই!  ক্ষতির মুখে আমানতকারীরা

ফিক্সড ডিপোজিটে (FD) বিনিয়োগকারীদের জন্য বড় ধাক্কা। ফের একবার সুদের হার কমাল স্টেট ব্যাঙ্ক অফ ইন্ডিয়া (SBI)। সর্বশেষ...

সরকারি প্রকল্পে পাঁচ বছরের বেশি সময় ধরে পড়ে থাকা টাকা ফেরত নেওয়ার উদ্যোগ রাজ্যের 

পাঁচ বছর বা তার বেশি সময় ধরে বিভিন্ন সরকারি প্রকল্পের খাতে পড়ে থাকা অব্যবহৃত অর্থ ফেরত নেওয়ার প্রক্রিয়া...