বয়স যখন শুধুই সংখ্যা! ৭২ বছরের ‘যুবকের’ স্নাতক হওয়ার গল্পে অবাক নেটিজেনরা

সম্প্রতি কলেজ থেকে ৪ বছরের স্নাতকস্তরের পরীক্ষায় সসম্মানে উত্তীর্ণ হয়েছেন তিনি। আর ছেলের সাফল্য নিজের চোখে দেখতে তাঁর সেই ডিগ্রি লাভের অনুষ্ঠানে উপস্থিত হয়েছিলেন তাঁর ৯৮ বছর বয়সি মা।

কথায় আছে, শিক্ষার (Education) কোনো সীমারেখা নেই। তাই শেখার কোনও বয়সও নেই। ইচ্ছা থাকলে যে কোনও বয়সেই যা কিছু শেখা সম্ভব। কিন্ত তাই বলে ৭০ বছর পেরিয়ে যাওয়ার পর স্নাতক হওয়া? যা দেখে রীতিমতো ভিরমি খাওয়ার জোগাড়। হ্যাঁ, ইচ্ছাশক্তি থাকলেই এই বয়সেও অনেক কিছুই করা যায়। আর এই বয়সে পড়াশোনা করা তো দূর, শয্যাশায়ী হয়ে পড়েন অনেকেই। কিন্তু এমনই এক অসাধ্য সাধন করে তাক লাগিয়ে দিয়েছেন ৭২ বছরের স্যাম কাপলান (Sam Kaplan)।

স্কুলের পড়াশোনা শেষ করার পর কলেজে আর ভর্তি হননি তিনি। ফলে অধরাই রয়ে গিয়েছিল স্নাতক ডিগ্রি (Graduation) হওয়ার স্বপ্ন। কিন্তু দীর্ঘ ৫ দশক কেটে যাওয়ার পর জীবন তাঁকে সেই ডিগ্রি লাভের সুযোগ করে দিল‌। আর এমন সুযোগ হাতে পেয়ে আর হারাতে চাননি স্যাম। সম্প্রতি কলেজ থেকে ৪ বছরের স্নাতকস্তরের পরীক্ষায় সসম্মানে উত্তীর্ণ হয়েছেন তিনি। আর ছেলের সাফল্য নিজের চোখে দেখতে তাঁর সেই ডিগ্রি লাভের অনুষ্ঠানে উপস্থিত হয়েছিলেন তাঁর ৯৮ বছর বয়সি মা।

উল্লেখ্য, স্যাম মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের জর্জিয়া লরেন্সভিলের বাসিন্দা। ১৯৬৯ সালে স্কুলের গণ্ডি পাশ করেন স্যাম। কিন্তু কোনও কারণে তারপর থেকে কলেজে ভর্তি হওয়া হয়নি। তারপর জীবন থেকে চলে গেছে প্রায় ৫০ বছরেরও বেশি সময়। জানা গিয়েছে, চার বছর আগে একদিন বাইকে করে রাস্তা দিয়ে যাচ্ছিলেন স্যাম। আর সেই সময় তিনি জানতে পারেন, জর্জিয়া গিনেট কলেজে স্নাতকস্তরের পড়ুয়াদের ভর্তি হওয়ার জন্য বিজ্ঞপ্তি জারি করা হয়েছে। আর এরপরেই আর দেরি করেননি তিনি। স্যামের মনে হয়, এত দিনের অপূর্ণ ইচ্ছে যদি এবার পূরণ করা যায় তাহলে কেমন হয়?

আর যেমন ভাবা, তেমনই কাজ। যে কাজে যাচ্ছিলেন সেই কাজ ভুলে উল্টোদিকে বাইক ঘুরিয়ে সটান ওই কলেজে গিয়ে হাজির হন স্যাম। সেদিনই কলেজে নিজের নাম নথিভুক্ত করে আসেন। স্যাম জানিয়েছেন, চিত্রনাট্য লেখায় আগ্রহ রয়েছে তাঁর। ইতিমধ্যেই দুটি বই লিখে ফেলেছেন তিনি। তাই শেষমেশ সিনেমা এবং মিডিয়া আর্টস নিয়েই স্নাতক স্তরে পড়াশোনা করতে শুরু করেন তিনি।

তবে এই বয়সে নতুন করে পড়াশোনা শুরু করা কঠিন ছিল। তবে এটাকে চ্যালেঞ্জ হিসেবেই দেখেছিলেন স্যাম। যে চ্যালেঞ্জ তিনি সসম্মানে জিতেও গিয়েছেন। স্নাতক ডিগ্রি লাভ করে শেষমেশ মুখে হাসি ফুটেছে তাঁর। এদিকে, ছেলের গ্র্যাজুয়েশনের অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন স্যামের ৯৮ বছর বয়সি মা। সত্তরোর্ধ ছেলেকে স্বচক্ষে স্নাতক হতে দেখেছেন তিনি। আর মা-ছেলে জুটির গল্প শুনে মুগ্ধ নেটিজেনরা।

 

 

Previous articleপুরসভায় নিয়োগ দু*র্নীতি মামলায় সিবিআই ত*দন্ত, স্থগিতাদেশ দিল না কলকাতা হাইকোর্ট
Next articleভারতীয় ক্রিকেট দলের নতুন কিট স্পনসর হল অ‍্যাডিডাস