অতি বৃষ্টিতে বিপর্যস্ত উত্তর ভারত। লাগাতার বর্ষণের জেরে ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতির মুখে পড়েছে উত্তরাখণ্ড, হিমাচল প্রদেশ, দিল্লি, হরিয়ানা, রাজস্থান, পাঞ্জাব, জম্মু ও কাশ্মীরের মতো রাজ্যগুলি। গত তিন দিনে ভূমিধস এবং হড়পা বানে কমপক্ষে ৩৭জন প্রাণ হারিয়েছেন।
আরও পড়ুন:যৌ.ন নিগ্রহে দায়ী ব্রিজভূষণকে দোষী সাব্যস্ত করে শাস্তি দেওয়া উচিত, চার্জশিটে দাবি দিল্লি পুলিশের
বিগত কয়েকদিন ধরেই অবিরাম বৃষ্টিতে কার্যত ভাসছে উত্তর ভারতের বিস্তীর্ণ অঞ্চল। এখনই বৃষ্টি থামবে না বলে জানিয়েছে মৌসম ভবন। হিমাচলের প্রায় সব অংশেই ভারী বৃষ্টিপাতের লাল এবং কমলা সতর্কতা জারি করা হয়েছে। রাজ্যে বন্যার কারণে মৃতের সংখ্যা বেড়ে হয়েছে ৩০। চন্দ্রতাল, পাগল নাল্লা, লাহুল-স্পিতি ভেসে গেছে। একের পর এক ভূমিধসে লন্ডভন্ড সব। অন্তত ৫০০ পর্যটক আটকে রয়েছেন এইসব জায়গায়। যুদ্ধকালীন তৎপরতায় উদ্ধারকাজ চালাচ্ছে জাতীয় বিপর্যয় মোকাবিলা দল ও রাজ্য বিপর্যয় মোকাবিলা বাহিনী। উনা জেলার অবস্থা আরও ভয়াবহ। জলমগ্ন বেশিরভাগ এলাকা। জলস্রোতে ভেসে গেছে ঘরবাড়ি।
দিল্লিতেও মঙ্গলবার বৃষ্টিপাতের কমলা সতর্কতা জারি করা হয়েছে। যমুনার জলস্তর ইতিমধ্যেই বিপদসীমা পেরিয়ে গিয়েছে বলে কেন্দ্রীয় জল কমিশন জানিয়েছে। নদীর জল প্রত্যাশিত সময়ের আগেই বিপদসীমা অতিক্রম করেছে বলে উদ্বিগ্ন প্রশাসন। দিল্লিতে প্রশাসনের তরফে তুলনামূলক ভাবে নিচু এলাকার বাসিন্দাদের অন্যত্র সরিয়ে নেওয়া হচ্ছে। শহরের বিভিন্ন এলাকায় ত্রাণ শিবির এবং কমিউনিটি সেন্টারও তৈরি করা হয়েছে। বন্যাপ্রবণ এলাকা এবং যমুনার জলস্তর নিরীক্ষণের জন্য দিল্লি সরকার ১৬ টি কন্ট্রোল রুম তৈরি করেছে। বন্যা পরিস্থিতি মোকাবিলার জন্য সরকার তৈরি আছে বলেও জানিয়েছেন দিল্লির মুখ্যমন্ত্রী অরবিন্দ কেজরীওয়াল।
ভারী বৃষ্টির কারণে বিপর্যস্ত উত্তরাখণ্ডের মানুষও। উত্তরাখণ্ডের মুখ্যমন্ত্রী পুষ্কর সিংহ ধামি মঙ্গলবার রাজ্যে ভারী বৃষ্টিপাত, বন্যা এবং ভূমিধসের সতর্কতা জারি করে চারধামের তীর্থযাত্রীদের সতর্ক থাকতে বলেছেন।
টানা তিন দিন ধরে প্রবল বৃষ্টিতে ভিজছে পাঞ্জাব এবং হরিয়ানাও। দুই রাজ্যে এখনও পর্যন্ত কমপক্ষে ন’জন নিহত হয়েছেন। পাঞ্জাব সরকার আগামী ১৩ জুলাই পর্যন্ত রাজ্যের সব স্কুল বন্ধ রাখার নির্দেশ দিয়েছে।
উত্তর ভারতে ভারী বৃষ্টির কারণে বিভিন্ন রাজ্যে হড়পা বানে প্রচুর গাড়ি, রাস্তা, সেতু, দোকানপাট ভেসে গিয়েছে। জলমগ্ন হয়ে পড়েছে চাষের জমি। অবরুদ্ধ হয়ে পড়েছে বহু রাস্তা। উত্তর ভারতের প্রায় সব রাজ্যেই এই একই চিত্র ধরা পড়ছে। একের পর এক রাজ্য জলমগ্ন হওয়ায় তৎপর সেনাবাহিনী এবং জাতীয় বিপর্যয় মোকাবিলা বাহিনী। শুরু হয়েহে উদ্ধারকাজও।