যাদবপুরে হস্টেলে চলত তোলাবাজি!এবার গ্রেফতার প্রাক্তনী জয়দীপ ঘোষ

জয়দীপ পূর্ব বর্ধমানের কাটোয়া মহকুমার কেতুগ্রামের বাসিন্দা। তিনি বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাক্তনী। ‘আন্তর্জাতিক সম্পর্ক’ বিভাগের ছাত্র ছিলেন।

গত ৯ অগস্ট যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের মেন হস্টেলের এ-২ ব্লকের তিন তলার বারান্দা থেকে পড়ে গিয়ে প্রথম বর্ষের এক নবাগত পড়ুয়ার মৃত্যু হয়। অভিযোগ উঠেছিল, সেই রাতে পুলিশকে হস্টেলে ঢুকতে বাধা দিয়েছেন হস্টেলের আবাসিকদের একাংশ। তার ভিত্তিতে পৃথক মামলাও রুজু হয়। সেই মামলাতেই শনিবার জয়দীপ ঘোষকে গ্রেফতার করেছে যাদবপুর থানার পুলিশ। পুলিশের কাজে বাধা দেওয়ার অভিযোগে তাঁকে গ্রেফতার করা হয়েছে। মামলাও রুজু হয়েছে জামিন অযোগ্য ধারায়। পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, জয়দীপ পূর্ব বর্ধমানের কাটোয়া মহকুমার কেতুগ্রামের বাসিন্দা। তিনি বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাক্তনী। ‘আন্তর্জাতিক সম্পর্ক’ বিভাগের ছাত্র ছিলেন।

জয়দীপের বাড়ি কেতুগ্রামের কাঁদরা স্টেশনের কাছে। পরিবার সূত্রে জানা গিয়েছে, ঘটনার দু’দিন পর ১২ অগস্ট কাঁদরার বাড়িতে চলে আসেন জয়দীপ। এর পর গত ১৭ অগস্ট, বৃহস্পতিবার তাঁর কাছে একটি নোটিশ আসে।অবিলম্বে তাঁকে যাদবপুর থানায় দেখা করার জন্য বলা হয়। চিঠি পেয়েই কলকাতায় চলে যান জয়দীপ। তার পরেই গ্রেফতার হন তিনি। পুত্রের গ্রেফতারির কথা শুনে অসুস্থ হয়ে পড়েছেন মা উত্তরা ঘোষ।

যাদবপুরের হস্টেলের সিনিয়র আবাসিকেরা জানিয়েছেন, হস্টেলে অতিথি হিসাবে যাঁরা থাকতেন, অর্থাৎ, যাঁরা খাতায়কলমে হস্টেলের আবাসিক নন, তাঁদের কাছ থেকে ১০০০ টাকা করে নেওয়া হত।  সিনিয়রদের একাংশের দাবি, হস্টেলে থাকার খরচ না লাগলেও খাওয়াদাওয়ার খরচ দিতে হত সকলকেই। সেই খাবারের খরচ বাবদ হাজার টাকা করে নেওয়া হত। মৃত ছাত্রও হস্টেলে অন্য এক জনের অতিথি হিসাবে থাকছিলেন। তাঁর কাছ থেকেও কোনও রকম টাকা নেওয়া হয়েছিল কি না, এখনও জানা যায়নি।

এই ঘটনায় এখনও পর্যন্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাক্তন এবং বর্তমান পড়ুয়া মিলিয়ে মোট ১৩ জনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। জানা গিয়েছে,গ্রামেই জয়দীপের বাবার মিষ্টির দোকান রয়েছে। ছোটখাটো এই ব্যবসার পাশাপাশি চাষবাসও করেন জয়দীপের বাবা। জয়দীপ যাদবপুরে আন্তর্জাতিক সম্পর্ক নিয়ে পড়াশোনা করতেন। কাঁদরা স্কুল থেকে পাশ করে প্রথমে বিশ্বভারতী। তার পর যাদবপুর। সেখান থেকে পাশ করেন ২০২১ সালে।তার বাবা বলেন, ‘‘ছেলে চাকরির পরীক্ষার জন্য প্রস্তুতি নিচ্ছিল। ও হস্টেলে থাকে না। বিক্রমগড়ে ঘরভাড়া নিয়ে থাকে।’’ বাবার দাবি, ‘‘ঘটনার রাতে আমার ছেলেকে ফোন করে হস্টেলে ডাকা হয়েছিল।’’

পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, ঘটনার দিন রাত ১২টা নাগাদ দু’জন যাদবপুর থানায় আসেন। তাঁরা নিজেদের বিশ্ববিদ্যালয়ের পড়ুয়া এবং হস্টেলের আবাসিক বলে পরিচয় দেন। তাঁরা জানান, তার কিছু ক্ষণ আগে এক জন পড়ে গিয়ে আহত হয়েছেন। এর পরেই যাদবপুর থানার পুলিশ হস্টেলের উদ্দেশে রওনা দেয়। গেটের কাছে গিয়ে পুলিশকর্মীরা জানতে পারেন, এক জনকে জখম অবস্থায় হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। এর পরে পুলিশ হস্টেলে ঢুকতে চাইলে তাদের বাধা দেওয়া হয় বলে অভিযোগ। পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, যাঁরা পুলিশকে হস্টেলে ঢুকতে বাধা দিয়েছিলেন সেই রাতে, তাঁদের মধ্যেই জয়দীপ অন্যতম।

 

 

Previous articleবিশ্বকাপের সূচি নিয়ে ফের সমস্যা, কেন আপত্তি এই রাজ‍্য ক্রিকেট সংস্থার?
Next articleযাদবপুরের ঘটনার দায় সবার, সিসিটিভিতে অনীহা নবনিযুক্ত অন্তর্বর্তী উপাচার্যের!