Saturday, November 8, 2025

চাঁদের মাটি ছোঁয়ার স্বপ্ন দেখেছিলেন জয়ন্ত-মানস-কৃষাণুরা,চাঁদের মাটি ছুঁতেই বঙ্গ সন্তানদের মুখে হাসি!

Date:

জয়েন্ট এন্ট্রান্সে ভালো ফল করেও রয্যাগিংয়ের ভয়কে জয় করতে পারেননি। তাই ইঞ্জিনিয়ারিং পড়া হয়ে ওঠেনি। তাই পছন্দের বিষয় অঙ্ক বলে বারাসত কলেজ থেকে গণিত নিয়ে পড়াশুনা করে খড়্গপুর আইআইটি থেকে এমএসসি এবং পরে পিএইচ ডি করেন বাদুড়িয়ার জয়ন্ত পাল। তারপর চাঁদের মাটিতে ইতিহাস গড়ার স্বপ্ন নিয়ে কাজ করেন জয়ন্ত পাল।বুধবার সেই স্বপ্নপূরণ হতেই উচ্ছ্বসিত তিনি।

আরও পড়ুনঃ বাংলার ছেলের অবদান চন্দ্রজয়ে! জয়ন্তকে নিয়ে আবেগে ভাসছে উত্তরপাড়া
যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয় থেকে এম-টেক করা বীরভূমের বিজয় দাই, বাঁকুড়ার কৃশানু নন্দীদের চোখে ছিল চাঁদকে ‘হাতের মুঠোয়’ পাওয়ার স্বপ্ন। প্রথম জন চন্দ্রযান-৩-এর ‘অপারেশন’ দলের সদস্য। দ্বিতীয় জন রয়েছেন সেই দলে, যাঁরা চন্দ্রযান চাঁদের মাটি ছোঁয়ার পরে ‘রোভার’ গাড়ির গতিবিধি সমন্বয়ের বিষয়টি দেখছেন। জয়ন্তদের দায়িত্ব ছিল চন্দ্রযান-৩-এর গতিবেগ কখন কেমন হবে, তা দেখা। সফল অবতরণের পরে তিনি জানান, গত চার মাস নাওয়া-খাওয়া ভুলে পরিশ্রম করেছে গোটা দল। তাতেই এসেছে সাফল্য।
চন্দ্রযান-২ যে শেষ পর্যন্ত সাফল্য পায়নি, তার ভয়ে উৎকন্ঠায় ছিল পরিবার।বীরভূমের মল্লারপুরের বিজয় দাইয়ের বাবার মন ভেঙে দিয়েছিল চন্দ্রযান ২ এর ব্যর্থতা কে। এবারও খুব চিন্তায় ছিলেন।তাই চাঁদের মাটিতে সফল অবতরণের পরই বললেন, ‘‘কালকে বাড়িতে লক্ষ্মীপুজো দেব।’’ মা শ্যামলী বলেন, ‘‘ছেলে আজকে দুপুরেও ফোন করে টিভি দেখতে বলেছিল। আমরা টিভির সামনে প্রবল উৎকণ্ঠায় বসেছিলাম। এখন খুব আনন্দ হচ্ছে।’’
বীরভূমেরই সৌম্যজিৎ চট্টোপাধ্যায় চন্দ্রযান-৩-এর অপারেশন ডিরেক্টর (মিশন সফ্টওয়্যার)। তাঁরা বাবা-মাও এ দিন উৎকণ্ঠার মধ্যে ছিলেন। পরে বলেন, ‘‘মনে হচ্ছে জীবন সার্থক হল। চন্দ্রযান চাঁদের মাটি ছোঁয়ার মূহূর্তের সাক্ষী থাকতে পেরে গোটা দেশের মানুষের সঙ্গে আমরাও গর্বিত।’’ দু’জনই জানালেন, ‘‘সৌমজিৎ ফোন করেছিল। বলল, রাতে ছবি পাঠাচ্ছে।’’ তার পরে একটু থেমে যোগ করেন, ‘‘আমরাও টিভি থেকে ওর ছবি তুলে রেখেছি।’’
যাদবপুরের আর এক প্রাক্তনী, বাঁকুড়ার পাত্রসায়রের কৃষক পরিবারের ছেলে কৃশানু নন্দীর স্কুল থেকে ইসরোর মহাকাশবিজ্ঞানী হওয়ার পথটা খুব একটা মসৃণ ছিল না। তাঁর দিদির কথায়,কখনও ছাত্র পড়িয়ে, কখনও মেধাবৃত্তির টাকা থেকে পড়ার খরচ জোগাড় করেছেন ভাই। মঙ্গলবার থেকে অফিসেই পড়ে আছেন ভাই।আজ এই দিনটা দেখার অপেক্ষায় ছিলাম আমরা।
মুর্শিদাবাদের বেলডাঙার বড়ুয়া কলোনির তুষারকান্তি দাস ইসরোর বিজ্ঞানী। তিনি সরাসরি চন্দ্রযান-৩ প্রকল্পের সঙ্গে যুক্ত। চন্দ্রযানের চাঁদের মাটি ছোঁয়া যেন তাঁর গোটা মহল্লার জয়। তাই তুষারের বন্ধু অরিন্দম ভট্টাচার্য বলছিলেন, ‘‘ও বরাবরই পড়ুয়া ছেলে। এখন তো চাঁদও ছুঁয়ে ফেলল!’’ তুষারের দাদা কুমারকান্তি হাসতে হাসতে বললেন, ‘‘ভাইয়ের আলোয় আমরাও যেন এখন ছোটখাট সেলিব্রিটি!’’

পূর্ব মেদিনীপুরের পাঁশকুড়ার বাসিন্দা, বিজ্ঞানী পীযূষকান্তি পট্টনায়ক ছিলেন চন্দ্রযান-৩-এর তাপমাত্রা নিয়ন্ত্রণের দায়িত্বে। চন্দ্রযানের সফল অবতরণের পরে উচ্ছ্বিসত পীযূষ। ফোনে বলেন, ‘‘আমাদের কন্ট্রোল রুমের মধ্যে কার্যত উৎসব শুরু হয়ে গিয়েছে।’’ তবে একই সঙ্গে মনে করিয়ে দেন, ‘‘চ্যালেঞ্জ এখনও রয়েছে। ঘণ্টা তিনেক পরে রোভার প্রজ্ঞানকে বিক্রমের পেট থেকে বের করতে হবে। প্রজ্ঞানের তাপমাত্রা নিয়ন্ত্রণের দায়িত্বও আমাদের।’’

একই রকম উচ্ছ্বাস বসিরহাটের মানস, উত্তর দিনাজপুরে অনুজ নন্দী, ইসলামপুরে, আশ্রমপাড়ায় অনুজ নন্দীর বাড়িতে। অনুজ চন্দ্রযানের অভিযানের সঙ্গে ওতপ্রোতভাবে জড়িত। তাঁর মা শোভারানি নন্দী বলেন, ‘‘জানতাম, ছেলের পরিশ্রম সফল হবে।’’ অনুজের ভাইপো অরিত্র বলল, ‘‘জেঠুর সাফল্য দেশকে গর্বিত করেছে। আমিও চেষ্টা করব, জেঠুর মতো হতে।’’

 

Related articles

শনির সকালে হাওড়ার বাঁকড়া এলাকার মার্কেটে আগুন! ঘটনাস্থলে দমকলের একাধিক ইঞ্জিন

সকালের আলো পরিষ্কারভাবে ফুটে ওঠার আগেই শনিবার হাওড়ার (Howrah) বাঁকড়া এলাকায় এক ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ড। বাদামতলার একটি জামাকাপড়ের মার্কেটে...

শনির সকালে পারদ পতন কলকাতা-সহ দক্ষিণবঙ্গে, উত্তরে ঘন কুয়াশার দাপট!

উইকেন্ডের ভোরের আলো ভালো করে ফোটার আগেই এক লাফে কুড়ি ডিগ্রির নিচে নেমে গেল কলকাতার সর্বনিম্ন তাপমাত্রা (Kolkata...

কাশ্মীরের কুপওয়ারা সেক্টরে অনুপ্রবেশের চেষ্টা, সেনার গুলিতে খতম ২ জঙ্গি 

শনিবার সকালে ভূস্বর্গে ভারতীয় সেনার (Indian Army) সাফল্য। কাশ্মীরের (Kashmir) কুপওয়াড়ায় খতম দুই জঙ্গি। দুজনেই কেরান সেক্টরের নিয়ন্ত্রণ...

KIFF: শনিবারের সিনেপার্বণে ‘অরণ্যের দিনরাত্রি’, সিনেমার গানের আড্ডায় সুমন – প্রসেনজিৎ

শহর জুড়ে কুড়িটি প্রেক্ষাগৃহে ২১৫টি ছবির আসর নিয়ে শুরু হয়েছে ৩১তম কলকাতা আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্র উৎসব (31st Kolkata International...
Exit mobile version