প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদিকে(Narendra Modi) ‘বিশ্বগুরু’ বলে মনে করে তাঁর ভক্তকুল। তবে বিশ্বের মানুষের কাছে ভারত সম্পর্কে ধারণা কেমন? মোদি আদৌ কি বিশ্বগুরু? সে প্রশ্নের উত্তরই পাওয়া গেল অন্যপথে। সম্প্রতি মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের(Amereica) পিউ রিসার্চ সেন্টারের সাম্প্রতিক সমীক্ষায় উঠে এলো ৬৮ শতাংশ প্রাপ্তবয়স্ক ভারতীয় বহির্বিশ্বে ভারতের প্রভাব বেড়ে চলেছে বলে বিশ্বাস করেন। তবে পৃথিবীর অন্য ১৯টি দেশের প্রাপ্তবয়স্ক মানুষ তা মনে করেন না। তাঁদের মধ্যে মাত্র ২৮ শতাংশ অধিকাংশ ভারতীয় নাগরিকের এই বিশ্বাসের সঙ্গে একমত।

একইভাবে ভারতের ৭৯ শতাংশ প্রাপ্তবয়স্ক মানুষ মনে করেন, প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি ঠিকমতো কাজ করছেন। তাঁর প্রতি তাঁরা আস্থাশীল। কিন্তু ১২টি দেশের মাত্র ৩৭ শতাংশ প্রাপ্তবয়স্ক মানুষের গড় ধারণা তেমন। এসব দেশের ৪০ শতাংশ মানুষ মোদি সম্পর্কে আস্থাহীনতা প্রকাশ করেছেন। এই সমীক্ষা তাঁকে যাঁরা ‘বিশ্বগুরু’ জাহির করতে উৎসুক, তাঁরা আশাহত হবেন। কারণ, সমীক্ষায় দেখা যাচ্ছে, বহির্বিশ্বের অধিকাংশ দেশে ভারত সম্পর্কে ইতিবাচক মনোভাব ক্রমেই কমে যাচ্ছে। যদিও এখনো অধিকাংশ দেশের কাছে ভারত ইতিবাচক। ২৩টি দেশের ৪৬ শতাংশ গড় প্রাপ্তবয়স্ক মানুষ ভারত সম্পর্কে মোটের ওপর ভালো ধারণা পোষণ করেন। আর ৩৪ শতাংশ তা মনে করেন না। এসব দেশের মধ্যে ভারত সম্পর্কে সব দিক থেকে সবচেয়ে ভালো ধারণা ইসরায়েলের।

পিউ রিসার্চ সেন্টার ভারতে জি-২০ শীর্ষ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হওয়ার ঠিক আগে এই সমীক্ষা প্রকাশ করেছে। যেখানে ভারতের পাশাপাশি আরও ২৩টি দেশের ৩০ হাজার ৮৬১ প্রাপ্তবয়স্ক মানুষের সঙ্গে কথা বলে তাঁদের মতামতের ভিত্তিতে এই সমীক্ষা প্রস্তুত করা হয়েছে। মঙ্গলবার ওয়াশিংটনে ওই সমীক্ষার ফল ঘোষণা করা হয়। সমীক্ষা চালানো হয়েছে চলতি বছরের ২০ ফেব্রুয়ারি থেকে ২২ মে পর্যন্ত। নরেন্দ্র মোদির ‘নতুন ভারত’-এর পক্ষে চিন্তার বিষয় এটাই যে ভারত সম্পর্কে ইতিবাচক ধারণা অধিকাংশ দেশে দ্রুত কমে যাচ্ছে। যেমন ফ্রান্স, ২০০৮ সালে ওই দেশের ৭০ শতাংশ প্রাপ্তবয়স্ক মানুষ ভারত সম্পর্কে ইতিবাচক মতামত দিতেন। ২০২৩ সালে তা কমে দাঁড়িয়েছে ৩৯ শতাংশে! গত ১৫ বছরে ভারত সম্পর্কে ৩১ শতাংশ মানুষের ধারণা খারাপ হয়ে গেছে। এই অধোগমন সবচেয়ে বেশি ইউরোপে। জার্মানিতে ২০০৮ সালে ৬০ শতাংশের চোখে ভারত অনুকূল ছিল, এখন সেটা কমে হয়েছে ৪৭ শতাংশ। একমাত্র ব্যতিক্রম নাইজেরিয়া ও কেনিয়া। ভারতের ভাবমূর্তি এই দুই দেশে এখনো অমলিন।
