রাজভবনে ৩৫ মিনিট রাজ্যপালের সঙ্গে কুণালের সাক্ষাৎ! ধুয়ে দিলেন অমিত শাহকেও

সোমবার বিকেল চারটে নাগাদ রাজভবনে যান কুণাল ঘোষ। দু'জনের মধ্যে প্রায় ৩৫ মিনিট কথা হয়। রাজ্য-রাজ্যপাল সংঘাতের আবহে আন্দন বোসের সঙ্গে কুণালের এমন সৌজন্যে সাক্ষাতে কি তাহলে বরফ গলার ইঙ্গিত?

পুজোর ঢাকে কাঠি পড়ে গিয়েছে। তারই মাঝে সোমবার রাজভবনে রাজ্যপাল সি ভি আনন্দ বোসের সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎ করলেন তৃণমূলের রাজ্য সাধারণ সম্পাদক তথা মুখপাত্র কুণাল ঘোষ। প্রায় ৩৫মিনিট রাজভবনে কাটিয়ে বাইরে এসে সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়েছিলেন কুণাল।

তিনি জানিয়েছেন, পুজোর আগে রাজ্যপালের হাতে বাংলার মিষ্টি ও কিছু উপহার তুলে দিতেই রাজভবনে এসেছিলেন তিনি। কুণালের কথায়, “কেরলের ওনাম উৎসবের সময় রাজ্যপাল আমাকে মিষ্টি এবং উপহার পাঠিয়ে ছিলেন। সৌজন্যতা বাংলার সংস্কৃতি। তাই পুজোর আগে ওনাকেও বাংলার মিষ্টি ও কিছু উপহার দিলাম। একটি দুর্গা মূর্তি দিয়েছি ওনাকে। সেইসঙ্গে জাগো বাংলার উৎসব সংখ্যার একটি বইও উপহার দিলাম ওনাকে।”

সোমবার বিকেল চারটে নাগাদ রাজভবনে যান কুণাল ঘোষ। দু’জনের মধ্যে প্রায় ৩৫ মিনিট কথা হয়। রাজ্য-রাজ্যপাল সংঘাতের আবহে আন্দন বোসের সঙ্গে কুণালের এমন সৌজন্যে সাক্ষাতে কি তাহলে বরফ গলার ইঙ্গিত? কুণালের স্পষ্ট জবাব, “রাজ্যপাল যদি বিজেপির শেখানো কথায় কোনও বিষয়ে বিবৃতি দেন, তাহলে তো তার সমালোচনা হবেই। সেই সমালোচনা আগেও করেছি , আবারও পরিস্থিতি অনুযায়ী করব। কিন্তু বাংলার সৌজন্যবোধ সেখানে কোনও বাধা হয়ে দাঁড়ায় না। তিনি মাননীয় রাজ্যপাল, তিনি যখন ব্যক্তিগতভাবে সৌজন্য দেখিয়ে তাঁদের ওনাম উৎসবের মিষ্টি আমার কাছে পাঠিয়েছিলেন তাই তার পাল্টা সৌজন্য দেখানোটা আমার দায়িত্বের মধ্যে পড়ে। তবে আমি আমার দলেনেত্রী ও নেতাকে জানিয়েই তাঁর সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাতে এসেছি। রাজ্যপালের যে বিষয়গুলো নিয়ে সমালোচনা করার সেগুলো অবশ্যই দলের দিক থেকে সমালোচিত করা হবে। তার সঙ্গে আমার ব্যক্তিগত সৌজন্য সাক্ষাৎকে মিলিয়ে ফেলা ঠিক নয়।”

অন্যদিকে, এদিন মধ্য কলকাতার একটি পুজো উদ্বোধন করেছেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ। বিষয়টি নিয়ে কুণাল বলেন, “যাঁরা বলতেন বাংলায় দুর্গাপুজো করতে দেওয়া হয় না, তাঁরাই এখন পুজো উদ্বোধন করতে ছুটে আসছেন। সেখানেও বিজেপির গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব। নব্য আর আদির দ্বন্দ্বে বিজেপিতে এখন আড়াআড়ি বিভাজন।” প্রসঙ্গত,গত কয়েক বছর এই পুজোর উদ্বোধন করতেন রাজ্যপাল। এবার সেখানে আমন্ত্রিত শাহ। তাৎপর্যপূর্ণভাবে সেই পুজোর উদ্বোধন চলাকালীন রাজ্যপালকে ত্রিসীমানায় দেখতে পাওয়া যায়নি। বরং সেই সময় রাজভবনে কুণাল ঘোষের সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎ সারলেন রাজ্যপাল।

দুর্নীতির প্রশ্নেও এদিন অমিত শাহকে ধুয়ে দেন কুণাল ঘোষ। তিনি বলেন, অমিত শাহের মুখে দুর্নীতির কথা মানায় না। দুর্নীতিগ্রস্ত শুভেন্দুকে পাশে বসিয়ে উনি দুর্নীতির কথা বলেন। সিবিআই শুভেন্দুর নামে এফআইআর করেছে।ক্যামেরায় দেখা গেছে শুভেন্দুকে টাকা নিতে। এরম দুর্নীতিগ্রস্ত লোককে পাশে রেখে অমিত শাহ কোন দুর্নীতির কথা বলেন। তিনি আবার পরিবর্তনের ডাক দিচ্ছেন। স্বাভাবিকভাবে লোকসভায় তিনি পরিবর্তন চাইছেন। কারণ, সামনে পঞ্চায়েত নেই, পুরসভা নেই, বিধানসভা নির্বাচনও নেই। আসলে অমিত শাহ লোকসভায় ওনাদের পরিবর্তন করে দিতে বলছেন। পরিবর্তনের নামে উনি আত্মঘাতী ডাক দিয়ে গেছেন।”

Previous articleনিঠারিকাণ্ড ‘বিরলতম’! এলাহবাদ হাই কোর্টের রায়ে অ.ভিযুক্তদের ফাঁ.সির সা.জা রদ, কোন পথে এগোয় তদন্ত?
Next articleপথ চলা শুরু দেশের প্রথম সরকারি অ্যাপ ক্যাব পরিষেবা ‘যাত্রী সাথী’