পৃথিবীর মানচিত্রে নিজেদের রক্ত দিয়ে জমি অধিকার আন্দোলন লিখেছে নন্দীগ্রাম: কুণাল

, "১৭ বছর পরেও শীতের সকালে এত মানুষের সমাবেশ প্রমাণ করে দিচ্ছে ক্ষ.ত কতটা গভীর ছিল এবং রাজনৈতিক বদলার শপথটা কতটা দৃঢ়।"

নন্দীগ্রাম (Nandigram ) ভূমি উচ্ছেদ প্রতিরোধ কমিটির উদ্যোগে ভাঙ্গাবেড়াতে আজ শহিদ স্মরণসভা। শীতের সকালে ঠান্ডার কামড়কে পরোয়া না করে যেভাবে এদিন সাধারন মানুষ ভিড় জমালেন,তাকে কুর্নিশ জানান তৃণমূল কংগ্রেসের রাজ্য সাধারণ সম্পাদক কুণাল ঘোষ (Kunal Ghosh)। ২০০৭ সালে এদিন ভরত মণ্ডল, শেখ সেলিম, বিশ্বজিৎ মাইতি শহিদ হন। আজ তাঁদের উদ্দেশ্যে শ্রদ্ধা জানিয়ে শহীদ তর্পণে অংশ নেন কুণাল। শহীদ বেদিতে মাল্যদান করেন তিনি। অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন তৃণমূলের একগুচ্ছ নেতা- কর্মী -সমর্থকরাও। এই সভামঞ্চ থেকেই নন্দীগ্রামের আন্দোলনের কথা লড়াইয়ের কথা সকলকে স্মরণ করিয়ে গণতন্ত্রে ফের বিপ্লব আনার কথা বলেন তৃণমূল মুখপাত্র। তাঁর কথায়, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নেতৃত্বে জমি রক্ষার লড়াই পৃথিবীর মানচিত্রে নিজের রক্ত দিয়ে লিখেছে নন্দীগ্রাম।

এদিন তিনি বলেন, “১৭ বছর পরেও শীতের সকালে এত মানুষের সমাবেশ প্রমাণ করে দিচ্ছে ক্ষত কতটা গভীর ছিল এবং রাজনৈতিক বদলার শপথটা কতটা দৃঢ়।” এই প্রজন্মের কাছেও যাতে ২০০৭ সালের সেই ভয়াবহ সন্ত্রাসের প্রতিটা ঘটনাক্রম পরিচিত থাকে তার অনুরোধও করেন কুণাল। তিনি জানান, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নেতৃত্বে জমির অধিকার আন্দোলন কাকে বলে তা গোটা বিশ্বকে দেখিয়েছেন নন্দীগ্রাম। গতকাল তাঁকে ঘিরে গো ব্যাক পোস্টার দেয়াকে কটাক্ষ করে কুণাল ঘোষ বলেন, যতবার পোস্টার দেবে ততবার এখানে ছুটে এসে বলব, “শুভেন্দু চোর, জালিয়াত, মীরজাফর, বিভীষণ, ডাকাত।” রাজ্যের বিরোধী দলনেতাকে ‘রাজনৈতিক বেজন্মা’ বলেও তীব্র আক্রমণ করেন তিনি। তাঁর কথায়,vশুভেন্দু যাঁদের চোর বলছেন তাঁদের ক্যামেরার সামনে টাকা নিতে দেখা যায়নি। আমি এখনও মামলা লড়ছি আর তৃণমূলের মঞ্চে দাঁড়িয়ে কথা বলছি, তোমার মতো মেরুদন্ড বিক্রি করে অমিত শাহের জুতোর চাটতে যাইনি।” বিজেপির ধর্মীয় মেরুকরণের রাজনীতিকে ধিক্কার জানিয়ে তৃণমূল মুখপাত্র বলেন, যত বড় বড় কথাই শুভেন্দু অধিকারী এবং বিজেপি নেতারা বলুন না কেন নিজেদের মধ্যে কো-অর্ডিনেশন বাড়াতে পারলে নন্দীগ্রাম আবার গণতন্ত্রে বিপ্লব করবে।

শনিবার সভামঞ্চের ঠিক পাশেই তৃণমূল মুখপাত্রকে গালমন্দ করে পোস্টার ফ্লেক্স দেখা যায়। পোস্টারে ‘গো ব্যাক কুণাল’ লেখা ঘিরে যথেষ্ট চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে। যেভাবে নন্দীগ্রামের দায়িত্ব পাওয়ার পর তৃণমূল কংগ্রেসের সংগঠনিক কাজকর্মকে কুণাল আরও এক ধাপ এগিয়ে নিয়ে গেছেন তাতে ব্যাকফুটে বিজেপির নেতা কর্মীরা। তাই দলবদলু, গদ্দার শুভেন্দু তাই বারবার খবরে ভেসে থাকার চেষ্টা করছেন বলেই অভিযোগ। কিন্তু কুৎসার রাজনীতি করে বিজেপির লাইমলাইটে আসার চেষ্টাকে একেবারেই গুরুত্ব দিতে নারাজ নন্দীগ্রামের মানুষ। এই দিন তাঁদের স্বতঃস্ফূর্ত উপস্থিতি সেটাই প্রমাণ করে দিল। বিজেপির এই জঘন্য কাজকে কার্যত চ্যালেঞ্জ জানিয়ে কুণাল আগামী দিনে নন্দীগ্রামকে আরও একজোট হয়ে এগিয়ে চলার বার্তা দেন। মা মাটি মানুষের নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় যেভাবে রাজ্যজুড়ে উন্নয়নের ধারাকে বয়ে নিয়ে চলেছেন তাতে সাধারণ মানুষ মুখ্যমন্ত্রীর পাশে আছেন। তৃণমূল কংগ্রেসের রাজ্য সাধারণ সম্পাদক কুণাল ঘোষ এর আগেও নন্দীগ্রামের মানুষের কাছে গিয়ে তাঁদের সমস্যা সমাধানের চেষ্টা করেছেন। সেখানকার বাসিন্দাদের কাছে একেবারে ঘরের ছেলে হয়ে উঠেছেন তৃণমূল মুখপাত্র। এতেই পায়ের তলার জমি সরেছে অধিকারী পরিবারের। শুরু হয়েছে প্রতিহিংসার রাজনীতি। অপপ্রচার আর কুৎসাকে হাতিয়ার করে মানুষের মধ্যে বিভ্রান্তি আর রাজনৈতিক অস্থিরতা তৈরির অপচেষ্টা করে চলেছেন বিরোধী দলনেতা। তবে এই বিষয়টিকে খুব একটা আমল দিতে রাজি নন কুণাল। গতকাল নিজের নামের পোস্টার দেখার পর অধিকারী পরিবারকে কটাক্ষ করে এক্স হ্যান্ডেলে তিনি লেখেন, “নন্দীগ্রামে রবিবার ভোর চারটের পর শহীদতর্পণে যাওয়ার কথা আমার। ভূমি উচ্ছেদ প্রতিরোধ কমিটির সভাও আছে। তার আগে শনিবার রাতেই আমাকে গালমন্দ করে পোস্টার, ফ্লেক্স। বলছে ‘গো ব্যাক’। কী অধিকারী, এত ভয় !!!! আমোদ পেলাম।” আজ শুভেন্দু অধিকারী তথা বিজেপির নেতাদের শহিদ মঞ্চের সভা থেকেই এক হাত নেন তিনি।

Previous articleআজই পদ্মাপাড়ের ভাগ্য নির্ধারণ, সকাল থেকে শুরু ভোটগ্রহণ পর্ব!
Next articleআজ ডায়মন্ড হারবারে বার্ধক্য ভাতা প্রদান করবেন অভিষেক!