নিজের হাতের লেখা চিঠি পরে অস্বীকার করতে পারেন জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক (Jyotipriyo Mallick)। আর সেকারণেই এবার তাঁর হস্তাক্ষরের পরীক্ষা (Hand Writing Test) নিতে তৎপর কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা ইডি (Enforcement Directorate)। তদন্তকারীদের দাবি, এসএসকেএম (SSKM) হাসপাতালে বসে একটি চিঠি লিখেছিলেন জ্যোতিপ্রিয়। কিন্তু কেন্দ্রীয় তদন্তকারীদের একাংশ আশঙ্কা করছেন, পরে মত বদল করে চিঠি লেখার বিষয়টি অস্বীকার করতে পারেন জ্যোতিপ্রিয়। সেকারণেই তথ্যপ্রমাণ হাতে রাখতে বড় পদক্ষেপ ইডির (ED)। ইডি সূত্রে খবর, এই তথ্যপ্রমাণ হাতে রাখতে ইতিমধ্যে জ্যোতিপ্রিয়ের হাতের লেখা পরীক্ষা করার তোড়জোড় শুরু হয়েছে। সে ক্ষেত্রে হয়তো তাঁর অন্য কোনও লেখার সঙ্গে চিঠির লেখাটি মিলিয়ে দেখা হবে। ইতিমধ্যে হ্যান্ড রাইটিং এক্সপার্টদের সঙ্গে কথাবার্তা শুরু করেছেন ইডি আধিকারিকরা।

বর্তমানে এসএসকেএম (SSKM) হাসপাতালে চিকিৎসাধীন জ্যোতিপ্রিয়। এদিকে শনিবার ইডির দাবি, হাসপাতালে চিঠির মাধ্যমে জ্যোতিপ্রিয়ের সঙ্গে নাকি যোগাযোগ করা হয়েছে। বাংলা এবং ইংরেজি মিশিয়ে লেখা ছিল সেই চিঠি। ইডির আরও দাবি, চিঠিতে একাধিকজনের নাম উল্লেখ রয়েছে। তদন্তকারী সংস্থাটি সূত্রে আরও দাবি করা হয় যে, কলকাতা হাই কোর্টের নির্দেশে গত ১৬ ডিসেম্বর জ্যোতিপ্রিয়ের ঘর থেকে সিসি ক্যামেরা খোলার সময় ওই চিঠি মেয়েকে দিচ্ছিলেন জ্যোতিপ্রিয়। সেই চিঠি আপাতত ইডির জিম্মায় রয়েছে। তবে পরে যাতে কোনোরকম সমস্যা না হয় সেকারণেই আগেভাগে হস্তাক্ষরের পরীক্ষা নিতে তোড়জোড় শুরু করল ইডি। সূত্রের খবর, খুব শীঘ্রই নাকি এই পদক্ষেপ নেওয়া হবে।
অন্যদিকে, রেশন বন্টন মামলার তদন্ত যত এগোচ্ছে একের পর এক অভিযোগ সামনে আনছে ইডি। এবার ইডি সূত্রে খবর, ধান কেনার টাকা থেকেই কমিশন নিয়ে নাকি জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক কোটি-কোটি টাকা লাভ করেছেন। ৫ বছরে কমিশন বাবদ ১৩৭ কোটি টাকা ঢুকেছে তাঁর পকেটে। তবে সেই সংক্রান্ত বিস্তারিত রিপোর্ট হাতে নেই তদন্তকারীদের। আর এরপরই উঠতে শুরু করেছে একাধিক প্রশ্ন। রাজনৈতিক মহলের মতে, যদি কোনও প্রমাণ থাকে তা সামনে আনুক ইডি। এভাবে একের পর এক তথ্য সামনে এনে তদন্তকে প্রভাবিত করার চেষ্টা হচ্ছে এবং মিথ্যা জ্যোতিপ্রিয়কে কাঠগড়ায় তোলা হচ্ছে। শুক্রবার মধ্যরাতে গ্রেফতার হন বনগাঁ পুরসভার প্রাক্তন চেয়ারম্যান শঙ্কর আঢ্য। শনিবার তাঁকে নগর দায়রা আদালতে পেশ করে এমনই বিস্ফোরক তথ্য সামনে এনেছে এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেট।

আদালতে ইডির আরও দাবি, রেশন বন্টন মামলায় প্রায় দশ হাজার কোটি টাকা তছরুপ হয়েছে। ইডির অভিযোগ, সরকারি হিসাবের তুলনায় অনেক বেশি ধান কেনা হয়েছে। এখন প্রশ্ন, এই পাঁচ বছরেই যদি ১৩৭ কোটি টাকা বালুর পকেটে ঢোকে তাহলে তা প্রমাণ সহ কেন সামনে আনছেন না ইডি আধিকারিকরা, ইতিমধ্যেই উঠছে প্রশ্ন।
