লোহিতসাগরে ঝাঁঝ বাড়াচ্ছে আমেরিকা-ইংল্যান্ড, সরে দাঁড়ালো ‘ইউরোপ’

২৮টি বিভিন্ন জায়গার ৬০টি টার্গেটে হামলা চালানো হয়। মূল লক্ষ্য হুথিদের মিসাইল ও ড্রোন হামলা চালানো ঘাঁটিগুলি গুঁড়িয়ে ফেলা।

হুথি জঙ্গীগোষ্ঠীর হামলার প্রত্যুত্তরে লোহিত সাগরে (Red sea) আক্রমণের ঝাঁঝ বাড়নোর ইঙ্গিত আমেরিকা-ইংল্যান্ড যৌথ সেনার। লোহিত সাগরে হুথিগোষ্ঠীর বাণিজ্য জাহাজে লাগাতার আক্রমণ চালানোর ঘটনার পরই গুরুত্বপূর্ণ এই বাণিজ্যপথকে জঙ্গীমুক্ত রাখার পদক্ষেপ গ্রহণ করে আমেরিকা ও ইংল্যান্ড যৌথভাবে। তবে শক্তিশালী আক্রমণের মুখে দমে না গিয়ে পাল্টা আক্রমণ শানায় ইয়েমেনে (Yemen) লুকিয়ে থাকা হুথি জঙ্গিরা। এবার তারই উত্তরে আরও হামলার প্রস্তুতিতে আমেরিকা। যদিও ইংল্যান্ড ও আমেরিকার এই যৌথ হামলায় কোনওভাবে পাশে নেই ইতালি, ফ্রান্স, স্পেন। অন্যদিকে জার্মানি, ডেনমার্কের মতো ইউরোপীয় দেশগুলি হামলায় সহযোগিতার চুক্তিপত্র সই করেছে।

বর্তমান বিশ্ব বাণিজ্যের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ পথ লোহিত সাগর। ইজরায়েল যুদ্ধের পরিপ্রেক্ষিতে ইজরায়েলকে সাহায্য করার মূল্য হিসাবে এবার বিশ্ববাণিজ্যে আঘাত হানার পরিকল্পনা ছিল হুথি জঙ্গীগোষ্ঠীর। ইয়েমেনের সহযোগিতায় তাদের এই পরিকল্পনা বানচাল করতে একটু দেরি করেনি আমেরিকা ও ইংল্যান্ড। ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী ঋষি সুনক এই আক্রমণকে সেল্ফ ডিফেন্স (self defense) বলে দাবি করেন। আক্রমণের প্রাথমিক ধাপে হুথি জঙ্গীদের ড্রোন হামলার ঘাঁটি গুঁড়িয়ে দেওয়ার কাজ শুরু করে যৌথ বাহিনী।

তবে যৌথ বাহিনীর হামলা শুরু হতেই পিছু হটতে থাকা হুথিরা প্রবল প্রতিরোধ ও প্রতিশোধের হুঁশিয়ারি দেয়। পাল্টা হামলা চালানো শুরু করে। তাঁদের মদতে হাজার হাজার ইয়েমেনি জনতা শনিবার পথে বেরিয়ে বিক্ষোভ দেখাতে শুরু করে। তুর্কির প্রেসিডেন্ট রেসেপ তাইপ এরগোডান (Recep Tayyip Erdogan) দাবি করেন যৌথবাহিনীর হামলার লোহিত সাগরের জলের রঙ হতে চলেছে। নরম-গরম সবভাবেই মধ্য প্রাচ্যের দেশগুলি হুথি গোষ্ঠীর পাশে দাঁড়িয়ে আক্রমণ ঠেকানোর চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে।

তবে যৌথবাহিনী শনিবারও ইয়েমেনের রাজধানী সানা অবরুদ্ধ করার মতো আক্রমণ চালিয়ে যায়। পাশাপাশি টার্গেট করা হয় অন্যতম শহর তাইজ (Taiz) ও মূল বন্দর শহর হাজ্জাহকে (Hajjah)। আমেরিকার মুখপাত্র জানান ২৮টি বিভিন্ন জায়গার ৬০টি টার্গেটে হামলা চালানো হয়। মূল লক্ষ্য হুথিদের মিসাইল ও ড্রোন হামলা চালানো ঘাঁটিগুলি গুঁড়িয়ে ফেলা। আর এই আক্রমণে বিশ্বে বাণিজ্যে ক্ষতির মুখে পড়া দেশগুলি যৌথবাহিনীকে সাহায্য করার চুক্তিতে স্বাক্ষর করে। তার মধ্যে অস্ট্রেলিয়া, নিউজিল্যান্ড যেমন রয়েছে তেমনই রয়েছে দক্ষিণ কোরিয়াও। ভারতও এই হামলায় আমেরিকার পাশে রয়েছে। স্পেন, ইতালি, ফ্রান্সের মতো দেশগুলি চুক্তি স্বাক্ষর না করার পাশাপাশি এই যুদ্ধে ইংল্যান্ডের যোগ দেওয়া নিয়ে প্রশ্ন তুলেছে। পাশাপাশি ইউরোপিয়ান ইউনিয়ন স্বীকৃত নয় বলে এই হামলাকে চিহ্নিত করেছে।