Friday, December 26, 2025

মাছে-ভাতে বাঙালির সেরা আকর্ষণ, টাটকা থেকে শুটকিতে সাজানো ‘মাছের মেলা’

Date:

Share post:

বাঙালি বাড়িতে অতিথি এলে সবার আগে চিন্তা শুরু হয় কী মাছ খাওয়ানো হবে। এমনকি পরিবারের সদস্য দীর্ঘদিন পর বাড়ি ফিরলেও তার প্রিয় মাছ পরিবেশন করেই আনন্দ ভাগ করে নেওয়া হয়। অবাঙালি মহলে এই নিয়ে বাঙালি ‘বদনাম’ও রয়েছে বেশ। তবে তাতে কি আসে যায়। এই বাংলাই ৫০০ বছর ধরে আজও আয়োজন করে চলেছে মাছের মেলাও।

এমনিতেই শীতকালে রকমারি মাছে ভরে থাকে বাজার। তার ওপর এটাই মেলা বসানোর আদর্শ সময়। তবে হুগলির দেবানন্দপুরের (Devanandapur) মাছের মেলা বসে অন্য ঐতিহ্য নিয়ে। সেখানেও সেই ঘরে ফেরা আপনজনের মাছ খাওয়ার আবদারে ঐতিহ্যই রয়েছে। ১লা মাঘ ৫১৬ বছরের ঐতিহ্য ধরে রেখে মঙ্গলবার আয়োজন করা হল সেই মাছের মেলার।

দেবনন্দপুরের কেষ্টপুরের জমিদার ছিলেন গোবর্ধন গোস্বামী। তাঁর ছেলে রঘুনাথ সংসার ত্যাগ করে সন্ন্যাস গ্রহণের সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন। তিনি দীক্ষা নেওয়ার জন্য পানিহাটিতে স্বামী নিত্যানন্দের কাছে গিয়েছিলেন। কিন্তু, তাঁর বয়স মাত্র ১৫ হওয়া দীক্ষা দেননি তিনি। বরং তাঁর ভক্তির পরীক্ষা নিয়ে বাড়ি ফিরে যেতে বলেন নিত্যানন্দ। দীর্ঘ নয় মাস পর বাড়ি ফেরেন তিনি। ছেলে বাড়ি ফিরে কাঁচা আমের ঝোল ও ইলিশ মাছ খাওয়ার আবদার করে। ছেলে ফেরার আনন্দে সাথে সাথে গাছ থেকে আম ও পাশের জলাশয়ে জাল ফেলার নির্দেশ দেওয়া হয়। জালে ধরা পড়ে জোড়া ইলিশ। এরপর থেকেই প্রতিবছর মাছের মেলার আয়োজন করা হয়।

৫০০ বছর ধরে ১লা মাঘ রাধাগোবিন্দ মন্দিরে পুজো দেওয়া হয়। আর মানুষ মেতে ওঠে মাছের মেলার আনন্দে। চুনোপুটি থেকে ৫০ কিলো পর্যন্ত মাছ বিক্রি হয় সেখানে। দূর দূরান্ত থেকে বহু মাছ ব্যবসায়ী নদী,পুকুর ছাড়াও বিভিন্ন সামুদ্রিক মাছের পসরা নিয়ে আসেন। রুই, কাতলা, ইলিশ, ভেটকি, ভোলা থেকে শুরু করে শুটকি – কোনও মাছই বাকি থাকে না মেলার নামকে সার্থক করতে। মেলায় যোগ দিতে শুধু হুগলির মানুষ না, বর্ধমান, হাওড়া, নদিয়া, উত্তর ২৪ পরগনা,বাঁকুড়া থেকেও মানুষ এই মেলায় লোকজন ভিড় করেন। ৫০০ টাকা থেকে ১৫০০ টাকা কেজি দরে সেখানে মাছ বিক্রি হয়। আবার অনেকেই মেলা থেকে টাটকা মাছ কিনে পাশের বাগানে টাটকা টাটকা পিকনিকও সেরে ফেলেন। মঙ্গলবার ঐতিহ্যবাহী এই মেলা ঘুরে দেখেন বিধায়ক অসিত মজুমদার।

spot_img

Related articles

জনসমুদ্র পার্ক স্ট্রিটে: বড়দিনের আলোয় শহর মাতোয়ারা, রাত বাড়তেই ভিড়ের ঢল

কনকনে ঠান্ডাকে সঙ্গী করে বড়দিনের আনন্দে মেতে উঠেছে গোটা বাংলা। জেলা থেকে শহর—সর্বত্রই উৎসবের আমেজ, তবে প্রতি বছরের...

স্পষ্টতা চেয়ে ফেডারেশনকে চিঠি ক্লাব জোটের, সূচি নিয়ে ক্ষোভ ইস্টবেঙ্গলের

সাফ ক্লাব কাপ জয়ী মহিলা দলের ফুটবলার, কোচ অ্যান্টনি আ্যন্ড্রিউজ এবং সাপোর্টিং স্টাফদের  সংবর্ধিত করল   ইস্টবেঙ্গল ক্লাব(East Bengal)...

বেঙ্গল সুপার লিগ: উত্তর ২৪ পরগনাকে হারিয়ে জয়ে ফিরল ব্যারেটোর দল

জমজমাট  শ্রাচি আয়োজিত বেঙ্গল সুপার লিগ(Bengal Super League)। বড়দিনের দুপুরেও ছিল লিগের ম্যাচ। কল্যাণী স্টেডিয়ামে হাওড়া হুগলি ওয়ারিওর্সের(Howrah-Hooghly...

কেন্দ্রের প্রকল্পকে তোয়াক্কা নয়: বাংলা জুড়ে সবুজ বিল্পব

বাংলায় বিজেপির নেতারা যখন কেন্দ্রীয় প্রকল্প বাংলায় লাগু না করার জন্য প্রতিবাদে সামিল হচ্ছেন, তখন পরিসংখ্যানই বলে দিচ্ছে...