ক্যানেলের ধারে পড়ে দেহ। শরীরের নিচের অংশ নেই। মুখ পুড়ে ক্ষতবিক্ষত। এভাবে কী চাইবেন কেউ নিজের সন্তানকে দেখতে? কিন্তু ঘরে ঘরে যেভাবে নাবালকদের মধ্যে মোবাইল গেমের প্রতি আকর্ষণ বাড়ছে তাতে অনেক মা-ই ইতিমধ্যে সন্তান হারিয়েছেন। এবার পালা মুর্শিদাবাদের ফরাক্কার ব্যারেজ প্রোজেক্ট এলাকার বাসিন্দা পাপাই দাসের পরিবারের। পাপাইকে খুনের ঘটনায় তাঁরই চার বন্ধুকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ।
প্রায় এক সপ্তাহ আগে এক সন্ধ্যেবেলায় বন্ধুদের সঙ্গে পিকনিকের নাম করে বেরিয়ে যায় পাপাই। তারপর ঘরে না ফেরায় পুলিশে খবর দেন পাপাইয়ের পরিবার। পুলিশ জিজ্ঞাসাবাদের জন্য পাপাইয়ের চার বন্ধু অনিক কর্মকার, রৌশন জমাদার, আব্বাস শেখ ও শুভজিৎ মাঝিকে আটক করে। পুলিশের কাছে এই চার বন্ধু যা স্বীকার করে তাতে যে কোনও বাবা-মা নিজেদের সন্তানকে বন্ধুদের সঙ্গে মোবাইলে গেম খেলতে দেওয়া নিয়ে হাজারবার ভাববেন।
পুলিশ জানতে পারে ফ্রি ফায়ারের একটি আইডি ছিল পাপাইয়ের। তার থেকে খেলার জন্য সেই আইডি নেয় অনিক। কিন্তু খেলার নামে নিয়ে আইডি বদলে দেয় অনিক ও রৌশন। সেই থেকেই তাদের মধ্যে শুরু হয় অশান্তি। তারপরই ধৃত চার বন্ধু মিলে পাপাইকে ডেকে নিয়ে গিয়ে খুন করে। দেহ জঙ্গলে তুলে নিয়ে গিয়ে পুড়িয়ে দেয়। তারপর ক্যানালে ফেলে দেওয়া হয়।
সেই দেহ উদ্ধারের পরই নিজেদের সন্তানকে চিনতে বুকের ট্যাটুর সাহায্য নিতে হল, এতটাই বিকৃত হয়ে যায় পাপাইয়ের শরীর। নাবালক বন্ধুরা কারো সন্তানের সঙ্গে এরকম করতে পারে তা হয়তো কল্পনাও করেননি পূর্ণিমা দাস। কিন্তু যখন বুঝতে পারলেন তখন সব শেষ। ছেলেকে ‘খুঁজে’ পাওয়া তাঁর আর হল না।