ইন্ডিয়া জোটে গুরুত্ব না পাওয়া নিয়ে অভিযোগ করেছিলেন তৃণমূল নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। এই পরিস্থিতিতে রাজ্যে ইন্ডিয়া জোটের আসন ভাগাভাগি নিয়ে টানাপোড়েন চলছিল। এরই মাঝে এবার বার্তা দিলেন কংগ্রেস সাংসদ রাহুল গান্ধী। স্পষ্ট ভাষায় জানালেন, মমতাজির সঙ্গে অত্যন্ত সুসম্পর্ক। আলোচনা চলছে। জোট হবেই। পাশাপাশি, অধীর চৌধুরীর বাংলার শাসকদলকে লাগাতার আক্রমণের ঘটনাকে গুরুত্ব দেওয়ার বিশেষ দরকার নেই বলে স্পষ্ট বুঝিয়ে দিলেন কংগ্রেসের শীর্ষ নেতা।

অসমের কামরূপ থেকে এদিন সাংবাদিকদের মুখোমুখি হন রাহুল গান্ধী। তাঁকে প্রশ্ন করা হয়, বাংলায় আদৌ আসন সমঝোতা সম্ভব? অধীর চৌধুরী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের দলকে আক্রমণ এবং মমতার পালটা মন্তব্য নিয়েও প্রশ্ন করা হয় তাঁকে। জবাবে রাহুল গান্ধী বলেন, “বাংলায় আমাদের আসন ভাগাভাগির আলোচনা চলছে। খুব শীঘ্রই তা নিয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত প্রকাশ্যে আসবে। মমতাজির সঙ্গে আমার ব্যক্তিগত ভাবে এবং দলেরও খুব ভালো সম্পর্ক। ছোটখাটো বিষয় থাকে। তবে এখানে (অসমে) বসে এনিয়ে কিছু বলার নেই।”
আসন্ন লোকসভা নির্বাচনে আসনরফা নিয়ে কংগ্রেস ও তৃণমূলের মধ্যে টানাপোড়েন চলছে অনেক দিন ধরেই। সূত্রের খবর, কংগ্রেস বাংলায় ১০টি আসনে লড়তে চাইছে। কিন্তু তৃণমূল তাদের জোটশরিককে দুটির বেশি আসন ছাড়তে রাজি নয়। এ বিষয়ে তৃণমূলের তরফে আগেই জানানো হয়েছিল, অসমে নিজের আসন ধরে রাখতে ব্যর্থ কংগ্রেস। আবার বাংলায় আসন নিয়ে আকাশ ছোঁয়ার স্বপ্ন দেখছে তারা। এদিকে অধীর চৌধুরী বারবার একলা চলো নীতির পক্ষেও সওয়াল করেছেন। তৃণমূলের চেয়ে বামেদের হাত ধরতে আগ্রহী। অবশ্য এবিষয়ে অধীরকে বিশেষ পাত্তা দিতে রাজি নন কংগ্রেসের শীর্ষ নেতৃত্ব। এ প্রসঙ্গে অবশ্য অধীরের নাম না নিয়েই রাহুল জানান, “কখনও কখনও এমন হয়, ওঁদের দলের কেউ আমাদের বিষয়ে বিরূপ মন্তব্য করেন আবার আমাদেরও কেউ কেউ কিছু তীর্যক বলে ফেলেন। এগুলো ছোটখাটো বিষয়। গুরুত্ব দেওয়ার দরকার নেই। এর জন্য ইন্ডিয়া জোটের কোনও সমস্যা হবে না।” রাহুলের এই মন্তব্যের পরই রাজনৈতিক মহলের অনুমান, বাংলায় তৃণমূল ও কংগ্রেসের জোট নিয়ে যা কথা তা উপর মহলেই হবে। অধীর এখানে কোনও ফ্যাক্টর নন।

উল্লেখ্য, সোমবারই বাংলায় সংহতি যাত্রা থেকে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, ‘বিরোধী জোটের নাম ইন্ডিয়া আমি দিয়েছি। কিন্তু, বৈঠকে যোগ্য সম্মান পাই না। সিপিএম বিরোধী জোটকে নিয়ন্ত্রণ করে। তা কোনওভাবেই মেনে নেওয়া যায় না।’ পাশাপাশি তিনি আসন ভাগাভাগি প্রসঙ্গে বলেন, ‘আমাকে অনেক অসম্মানিত হতে হয়। আঞ্চলিক দলগুলো যেখানে শক্তিশালী, সেখানে তাদের লড়তে দেওয়া হোক। বিজেপিকে সাহায্য করবেন না। বিজেপিকে সাহায্য করলে আমি মাফ করব না। আমার হিম্মত আছে লড়াই করার মতো। কিন্তু, আমাকে লড়তে দেয় না। যত রক্ত দেওয়ার দেব। কিন্তু, বিজেপিকে একটাও আসন দেব না।’
