সন্দেশখালি যেতে না পেরে চূড়ান্ত নাটক অধীরের, পাত্তা না পেয়ে রাজ্যপালের দ্বারস্থ বিজেপি

বিজেপির (BJP) রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদারের (Sukanta Majumder) দেখানো পথে এবার পা বাড়াতে গিয়ে মহা ফ্যাসাদে পড়লেন প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি অধীর রঞ্জন চৌধুরী (Adhir Ranjan Chaudhury)। শুক্রবার সন্দেশখালিতে (Sandeskhali) ‘গায়ের জোরে’ অশান্তি পাকানোর সব চেষ্টা ব্যর্থ বহরমপুরের ‘রবিনহুডের’। শুক্রবার সন্দেশখালি অভিযানে সকাল সকাল রাস্তায় নেমে পড়েন অধীর। এরপর সন্দেশখালি যাওয়ার পথে ১৪৪ ধারা জারি থাকার কারণে অধীরকে রামপুরের কাছে বাধা দেয় পুলিশ। প্ল্যান ভেস্তে যাওয়ায় রাস্তাতেই চূড়ান্ত নাটক করতে শুরু করেন প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি। পুলিশের উপর চরম ক্ষুব্ধ হয়ে রীতিমতো অশান্তির চেষ্টা করেন কংগ্রেস নেতা। পাশাপাশি পুলিশকেও চরম আক্রমণ করেন অধীর। শুক্রবার সকালে অশান্তির আঁচ পেয়ে রামপুরে মোতায়েন করা হয় বিশাল পুলিশ বাহিনী। এরপর অধীর সন্দেশখালিতে ঢুকতে গেলেই তাঁকে বাধা দেয় পুলিশ। সাফ জানিয়ে দেয় ১৪৪ ধারা জারি থাকার কারণে এখনই সেখানে কাউকে প্রবেশ করতে দেওয়া হবে না। পাশাপাশি পুলিশের অভিযোগ, পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রনে সবরকম চেষ্টা চালানো হলেও বিরোধী দলের নেতারা জোর করে পরিস্থিতি অশান্ত করে তুলছে। আর সেকারণেই সময় গড়ালেও পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে সমস্যা হচ্ছে পুলিশের। যদিও সন্দেশখালির ঘটনায় যারা দোষী, বা যারা ঘটনার সঙ্গে যুক্ত ছিল বলে সিসিটিভি ক্যামেরায় দেখা গিয়েছে তাদের সবাইকেই গ্রেফতার করা হয়েছে। তবুও প্রতিদিনই বিজেপি,কংগ্রেস, সিপিএমের মতো বিরোধী দলের নেতারা জোর করে সন্দেশখালিতে ঢুকতে চেয়ে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করছে। আর ১৪৪ থাকা সত্ত্বেও পুলিশ তাঁদের বাধা দিলেই শুরু হচ্ছে অশান্তি। তবে পুলিশ যে কোনও পরিস্থিতি আয়ত্তে আনতে সবসময় সচেষ্ট।

শুক্রবার সন্দেশখালি (Sandeshkhali) যাওয়ার আগে সরবেড়িয়ায় গাড়ি আটকে দেওয়া হয় অধীরের। এরপরই গাড়ি থেকে নেমে পড়ে অধীর হেঁটে সন্দেশখালির উদ্দেশে তিনি রওনা দেন। কিন্তু কিছুক্ষণ পরেই রামপুরের কাছে তাঁকে আটকে দেয় পুলিশ। সেখানেই গাজোয়ারি দেখালে কংগ্রেস কর্মীদের সঙ্গে প্রবল ধ্বস্তাধ্বস্তি শুরু হয় পুলিশের। এর মাঝেই সন্দেশখালির প্ল্যান বানচাল হয়ে যেতেই নিজের মান রক্ষা করতে রাস্তায় দাঁড়িয়েই নিজের পথসভা করেন অধীর। তবে তাতে লাভের লাভ কিছুই হয়নি। উল্টে খালি হাতে নিরাশ হয়েই ফিরতে হয় প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতিকে। তবে এদিন শুধু কংগ্রেসই নয়, সন্দেশখালিতে অশান্তি পাকানোর উদ্দেশ্যে পা বাড়াতে গেলে পুলিশি বাধার মুখে পড়তে হয় বিজেপির (BJP) কেন্দ্রীয় প্রতিনিধি দলকে। কোনোরকম অনুমতি ছাড়া কোনও প্রতিনিধি দলকে সন্দেশখালিতে ঢুকতে দেওয়া হবে না বলেও পুলিশের তরফে সাফ জানানো হয়েছে। যেখানে রাজ্য পুলিশ এবং রাজ্য প্রশাসন অশান্তি রুখতে সবরকম প্রচেষ্টা চালাচ্ছে সেখানে বঙ্গ বিজেপি-সহ বিরোধীদের একের পর এক পদক্ষেপে অশান্ত হয়ে উঠছে পরিস্থিতি। তবে এদিন বিজেপির কেন্দ্রীয় প্রতিনিধি দলকে রামপুরে (Rampur) পুলিশ বাধা দিলে চরম নাটক শুরু করেন বিজেপি বিধায়ক অগ্নিমিত্রা পাল-সহ বিজেপির প্রতিনিধি দল। এরপরই রামপুর থেকেই কলকাতায় ফিরে এসে রাজভবনে যান অগ্নিমিত্রা পাল-সহ বিজেপির প্রতিনিধিরা। এদিন সকালে সন্দেশখালির উদ্দেশে রওনা দেন বিধায়ক অগ্নিমিত্রা পাল, কেন্দ্রীয় মন্ত্রী অন্নপূর্ণা দেবী, কেন্দ্রীয় মন্ত্রী প্রতিমা ভৌমিক-সহ বিজেপির প্রতিনিধিরা। কিন্তু ১৪৪ ধারার নির্দেশিকা দর্শিয়ে রামপুরে তাঁদের আটকে দেওয়া হয়। তার জেরে পুলিশের সঙ্গে বচসায় জড়িয়ে পড়েন অগ্নিমিত্রিরা। তাঁরা প্রস্তাব দেন যে পাঁচজনকে যেতে দেওয়া হোক। তাতেও পুলিশ রাজি হয়নি বলে অভিযোগ। তাঁরা দাবি করেন, মাত্র দু’জন সদস্যকে যেতে দেওয়ার অনুরোধ করা হয়েছিল। কিন্তু তাতেও রাজি হয়নি পুলিশ। তবে এদিন সন্দেশখালি যেতে না পারলেও রাজভবনে গিয়ে রাজ্যপালের হাতে রিপোর্ট জমা দেন তাঁরা। পরে রাজভবন থেকে বেরিয়ে অগ্নিমিত্রা জানান, সন্দেশখালিতে আগামী কিছু দিনের মধ্যেই ফের যাবেন তাঁরা।

এদিকে সন্দেশখালিকাণ্ডে রাষ্ট্রপতির কাছে বাংলায় রাষ্ট্রপতি শাসন জারির সুপারিশ করল জাতীয় তফসিলি কমিশন বা এসসি কমিশন। কমিশনের চেয়ারম্যান ইনচার্জ অরুণ হালদার জানান, সরকার মানুষকে সুরক্ষা দিতে ব্যর্থ হলে রাষ্ট্রপতি শাসন জারি হতে পারে। তাঁর অভিযোগ, বাংলায় নিরাপত্তা বিঘ্নিত। আইনিভাবে রাষ্ট্রপতি শাসনের মত পরিস্থিতি আছে। বৃহস্পতিবারই সন্দেশখালি পরিদর্শন করে রাষ্ট্রপতি দ্রৌপদী মুর্মুর কাছে রিপোর্ট জমা দেন কমিশনের সদস্যরা।

Previous articleরঞ্জিট্রফির গুরুত্বহীন ম্যাচে দাপট বাংলার
Next articleসরফরাজের দুরন্ত ইনিংস, বাবা নওশাদ খানকে গাড়ি উপহার আনন্দ মাহিন্দ্রার