লোকসভা ভোট (Loksabha Election) যত এগিয়ে আসছে ধীরে ধীরে খোলস ছেড়ে বেরোচ্ছে বিজেপি (BJP)। যেমন করেই হোক সরকারে থাকার অ্যাডভান্টেজ নিয়ে ফের গাজোয়ারি শুরু কেন্দ্রের। আর সেই পথে হেঁটেই এবার সরাসরি নির্বাচন কমিশনকেই (Election Commission Of India) নিজেদের তালুবন্দি করতে মরিয়া গেরুয়া শিবির। নির্বাচনের প্রস্তুতি ইতিমধ্যে সব রাজনৈতিক দল শুরু করে দিলেও নির্বাচনের দিনক্ষণ নিয়েই দেখা দিয়েছে নয়া সমস্যা। বাংলার বিরুদ্ধে গেরুয়া ষড়যন্ত্রের অভিযোগ তুলে নির্বাচন কমিশনার পদ থেকে অরুণ গোয়েল ইস্তফা দিতেই বড় বিপদে পড়েছে মোদি সরকার (Modi Govt)। বর্তমানে জাতীয় নির্বাচন কমিশনের সবেদন নীলমণি মুখ্য নির্বাচন কমিশনার রাজীব কুমার। আর রাজীবের সঙ্গে দুই কমিশনারকে অবিলম্বে নিয়োগের দাবিতে সুপ্রিম কোর্টের দ্বারস্থ হয়েছে মোদি সরকার। রবিবারই সূত্র মারফত জানা যায়, আগামী ১৫ মার্চ নতুন দুই কমিশনারকে নিয়োগ করা হবে। তার পাল্টা এবার সুপ্রিম কোর্টের দ্বারস্থ হল কংগ্রেস। নতুন জাতীয় নির্বাচন কমিশনারদের নিয়োগ রুখতে সোমবারই শীর্ষ আদালতে আবেদন জানিয়েছে হাত শিবির (Congress)।

রবিবারই ব্রিগেডের জনগর্জন সভা থেকে নির্বাচন কমিশনার অরুণ গোয়েলের ইস্তফাকে সাধুবাদ জানিয়েছেন বাংলার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তিনি সাফ জানান, বিজেপির অঙ্গুলিহেলনে চলতে অস্বীকার করায় তাঁর উপর চাপ বাড়ছিল। আর সেকারণেই নিজের নীতি, আদর্শ জলাঞ্জলি না দিয়ে যুগান্তকারী পদক্ষেপ নিয়েছেন গোয়েল। তবে ইতিমধ্যে গোয়েলের ইস্তফা নিয়ে এবং তাঁর ছেড়ে যাওয়া জায়গায় দ্রুত কমিশনার নিয়োগের দাবিতে উঠেপড়ে লেগেছে বিজেপি। বিরোধীদের অভিযোগ, মোদি সরকারের গুডবুকে নাম থাকা কাউকে কমিশনের গুরুত্বপূর্ণ পদে বসিয়ে লোকসভার বৈতরণী পার করতে চাইছে বিজেপি। যার বিরোধিতায় ইতিমধ্যে সরব বিরোধীরা। এবার তা আটকাতেই একেবারে সুপ্রিম কোর্টের দ্বারস্থ কংগ্রেস। হাত শিবিরের তরফে এদিন শীর্ষ আদালতে আবেদন জানানো হয়েছে, নতুন নির্বাচন কমিশনার আইনের ৭ ও ৮ ধারার অধীনে কেন্দ্রীয় সরকারকে যেন মুখ্য নির্বাচন কমিশনার ও অন্যান্য কমিশনারদের নিয়োগ করা থেকে বিরত করা হয়।
সোমবার মধ্য প্রদেশের এক কংগ্রেস নেতা পূর্ববর্তী একটি রায়ের উল্লেখ করেই মোদি সরকারকে কমিশনার নিয়োগ করা থেকে আটকাতে সুপ্রিম কোর্টে পিটিশন দাখিল করেছেন। আর তাতেই লোকসভা ভোটের মুখে হালে পানি না পাওয়ার হাল কেন্দ্রের বিজেপি সরকারের। জাতীয় নির্বাচন কমিশনে তিন সদস্য থাকেন, এদের মধ্যে একজন মুখ্য নির্বাচন কমিশনার ও দু’জন জাতীয় নির্বাচন কমিশনার। তবে গত শনিবার নির্বাচন কমিশনার পদ থেকে ইস্তফা দেন অরুণ গোয়েল। পাশাপাশি গত ফেব্রুয়ারি মাসেই অবসর নেন কমিশনের সদস্য অনুপ পাণ্ডেও। সেকারণেই নির্বাচনের মুখে বড় ফ্যাসাদে পড়ে তড়িঘড়ি নিজের মুখ রক্ষার্থে ময়দানে কেন্দ্র। তবে কেন্দ্র চাইলেও এই ইস্যুতে বিরোধীরা যে এক ইঞ্চিও জমি ছাড়বে না তা দিনের আলোর মতো পরিষ্কার। আগামী ১৫ মার্চ প্রধানমন্ত্রীর নেতৃত্বে হতে চলা বৈঠকেই নতুন দুই নির্বাচন কমিশনার নিয়োগ করতে প্রার্থী বাছাই করা হবে এবং তা রাষ্ট্রপতি দ্রৌপদী মুর্মুর কাছে সুপারিশ করা হবে। তা জানতেই এবার সুপ্রিম কোর্টে ঝাঁপাল কংগ্রেস।
