Monday, November 10, 2025

‘স্বার্থান্বেষী গোষ্ঠী’ বিচার ব্যবস্থাকে প্রভাবিত করছে, প্রধান বিচারপতিকে চিঠি ৬০০ আইনজীবীর

Date:

Share post:

দেশের বিচার ব্যবস্থাকে প্রভাবিত করার চেষ্টা চলছে। একটি নির্দিষ্ট গোষ্ঠী এই চেষ্টা করছে। এমনটাই দাবি দেশের আইনজীবীদের।শুধু তাই নয়, তারা প্রকাশ্যে ‘বেঞ্চ ফিক্সিং’য়ের মতো শব্দ প্রয়োগ করছে। আদালতকে কায়েমি স্বার্থে ব্যবহারের অভিযোগ তুলে সুপ্রিম কোর্টের প্রধান বিচারপতি ডিওয়াই চন্দ্রচূড়কে চিঠি লিখলেন দেশের ৬০০ জন বিশিষ্ট আইনজীবী। তাঁদের মধ্য রয়েছেন, হরিশ সালভে, মননকুমার মিশ্র, আদিশ আগরওয়ালা, চেতন মিত্তল, পিঙ্কি আনন্দ, হিতেশ জৈন, উজ্জ্বলা পাওয়ার, উদয় হোল্লা এবং স্বরূপমা চতুর্বেদি প্রমুখ।

কী লিখেছেন তারা? দেশের প্রধান বিচারপতিকে লেখা চিঠিতে তাঁরা লিখেছেন, এক কায়েমি স্বার্থ রক্ষাকারী গোষ্ঠী বিচারবিভাগের উপর চাপ সৃষ্টি করছে। যা খুবই উদ্বেগজনক। তারা প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষভাবে প্রভাব খাটাচ্ছে বিচার প্রক্রিয়ায়। অসার যুক্তি এবং রাজনৈতিক উদ্দেশ্যে বিচারবিভাগকে ব্যবহার করে আদালতের মর্যাদাহানি করছে। এই ধরনের গোষ্ঠী ‘বেঞ্চ ফিক্সিং’য়ের মতো তত্ত্ব খাড়া করে দিচ্ছে, যা মোটেই কাম্য নয় বলে মনে করেন দেশের তাবড় আইনজীবীরা। এসব ব্যাপার শুধু অসম্মানজনক তাই নয়, আদালতের সম্মান ও সম্ভ্রমের প্রতিও অমর্যাদাকর। নির্বাচনের আগে যখন দেশের প্রতিটি কোণায় বিরোধী দলগুলির নেতানেত্রীদের বিভিন্ন অভিযোগে ধরে ধরে জেলে পোরা হচ্ছে এবং তাঁদের হেফাজতের মেয়াদ বারবার বাড়ানো হচ্ছে তদন্তের স্বার্থে, তখন দেশের বিশিষ্ট আইনজীবীদের প্রধান বিচারপতি চন্দ্রচূড়কে লেখা এই চিঠি খুবই তাৎপর্যপূর্ণ।

এই ধরনের গোষ্ঠী বিশ্বাস ও সম্প্রীতি বাতাবরণ নষ্ট করতে চাইছে।যার উপর ভিত্তি করে বিচারকার্য পরিচালনা হয়, তা নষ্ট করার চেষ্টা চলছে বলে চিঠিতে তাঁদের অভিযোগ। তাঁরা স্পষ্ট করে বলেছেন, এই চাপের কৌশল চলছে বিশেষত রাজনৈতিক মামলাগুলির ক্ষেত্রে। তার থেকেও বড় বিষয় হচ্ছে দুর্নীতির অভিযোগে রাজনৈতিক ব্যক্তিত্বদের মামলায় অত্যধিক চাপ আসছে। এই কৌশল আদালতের ক্ষতি করছে। দেশের গণতান্ত্রিক কাঠামোকে নষ্ট করছে।

চিঠিতে স্বাক্ষরকারী আইনজীবীরা বলেছেন, কিছু নির্দিষ্ট আইনজীবী বিচারবিভাগকে হাস্যকর করে তোলার কাজে যুক্ত রয়েছেন। তাঁরা বর্তমানের সঙ্গে তুলনা করে অতীতের সুবর্ণযুগ অথবা দারুণ কাজ হতো এসবের মিথ্যা প্রচার করে বেড়াচ্ছেন। এও দেখা যাচ্ছে কিছু আইনজীবী দিনের আলোয় রাজনীতিকদের হয়ে আদালতে দাঁড়াচ্ছেন। রাতে আবার তাঁরাই মিডিয়ার সাহায্য নিয়ে বিচারক বা বিচারপতিদের উপর প্রভাব খাটানোর চেষ্টা করছেন।

চিঠিতে অভিযোগ করা হয়েছে, এই ধরনের আইনজীবীরা সাধারণ মানুষের মন থেকে বিচারবিভাগের প্রতি আস্থা তুলে দেওয়ার চেষ্টা করছেন। আইনের স্বচ্ছ, নিরপেক্ষ প্রয়োগ ক্ষমতা কেড়ে নেওয়ার চেষ্টা করছেন। চিঠির শেষে প্রধান বিচারপতির কাছে তাঁরা আর্জি জানিয়েছেন, ব্যক্তি ও রাজনৈতিক স্বার্থে আদালতকে ব্যবহার করার এই প্রক্রিয়া বন্ধ করা হোক। যার ক্ষতি করতে চাইছে, তাদের বিরুদ্ধ চুপ করে থাকলে অথবা হাত গুটিয়ে বসে থাকলে তারা আরও পেয়ে বসবে। এখন ভদ্র সেজে মুখ বুজে বসে থাকার সময় নয়, লিখেছেন আইনজীবীরা।

 

 

spot_img

Related articles

১ ডিসেম্বর থেকে নয়া হারে আবগারি শুল্ক কার্যকর! রাজ্যে কত হচ্ছে সুরার দাম

শীতের শুরুতে মৌতাতের পরিকল্পনা করলে, সেই আনন্দে কিছুটা ধাক্কা। কারণ পশ্চিমবঙ্গে (West Bengal) বাড়ছে সব ধরনের মদের  দাম...

অচলায়তন ভেঙে মুক্ত চিন্তাভাবনার অঙ্গন হবে বাংলা: রাখি-রিয়াকে শুভেচ্ছা তরুণদের আইকন অভিষেকের

তিনি যুব সমাজের আইকন। তৃণমূলের (TMC) সেনাপতি অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়কে (Abhishek Banerjee) ঘিরে সব সময়ই তরুণ প্রজন্মের জনজোয়ার। আর...

পাঁচবারের কাউন্সিলর, তবু নাম উড়ে গেল ভোটার তালিকা থেকে! চাঞ্চল্য খড়দহে

শেষবার এসআইআর হয়েছিল ২০০২ সালে। সেই তালিকায় তাঁর নাম যে ছিল, তার প্রমাণ, সেবার তিনি কাউন্সিলর (councilor) নির্বাচিত...

চেন্নাই ছেড়ে দিচ্ছে জাদেজাকে! জল্পনার মধ্যেই উধাও ইনস্টাগ্রাম প্রোফাইলও

আগামী ১৫ ডিসেম্বর আইপিএলের মিনি নিলাম(IPL Mini Auction 2026) হতে পারে। গত বছরই মেগা নিলাম হয়েছে। ফলে সব...