বদলেছে রাজ্যের শিক্ষাপদ্ধতি। মার্চ মাসে স্কুল শিক্ষা দফতরের অনুমোদন পাওয়ার পর উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা সংসদের (WBBHSE) তরফে একাদশ ও দ্বাদশ শ্রেণীতে সেমিস্টারের (semester system) মাধ্যমে ছাত্র-ছাত্রীদের মূল্যায়নের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। কিন্তু সেই পদ্ধতি কার্যকরি করতে গিয়ে নয়া জটিলতার মুখে সংসদ (WBBHSE) । একাদশ বা দ্বাদশ শ্রেণীর সেমিস্টারের মধ্যে যেকোনো একটিতে পাশ করলেই উত্তীর্ণ হওয়া যাবে বলে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছিল। কিন্তু কোন সেমিস্টারে যদি কেউ শূন্য পায় তাহলেও কি তাঁকে পাস করিয়ে দেওয়া হবে? ব্যাকলগ ক্লিয়ার (Backlog clearence issue) হবে কী করে? চিন্তায় উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা সংসদ।

দুটি সেমিস্টারের মধ্যে যদি কোনও একটিতে পাশ করলেই তাঁকে উত্তীর্ণ বলে সার্টিফিকেট দেওয়া যায় সেক্ষেত্রে পরীক্ষার্থীর মান নিয়ে একটা বড় সংশয় তৈরি হচ্ছে। শিক্ষা মহলের এই প্রশ্নের মুখে পড়ে সাময়িকভাবে সংসদ তরফে বলা হয়েছিল ন্যূনতম ৩০ শতাংশ নম্বর পেতেই হবে। কিন্তু মার্চ পেরিয়ে এপ্রিলের মাঝামাঝি হয়ে গেল, এখনও এই বিষয়ে অফিশিয়ালি কোনও ঘোষণা করা গেল না। সংসদ সভাপতির চিরঞ্জীব ভট্টাচার্য (Chiranjib Bhattacharya) বলছেন, স্কুল শিক্ষার সার্বিক মানের কথা ভেবেই সেমিস্টার পিছু পাশ ফেলের কথা ভাবা হয়েছে। কিন্তু ব্যাকলগ ক্লিয়ার করা নিয়ে জটিলতা তৈরি হচ্ছে। গত তিন দিন ধরে আলোচনা করেও সমাধান সূত্র বের করা যায়নি। আসলেই ব্যাকলগের ক্ষেত্রে সময় একটা বড় ফ্যাক্টর। আগে গ্রাজুয়েশনে তিন বছরের কোর্স হতো কিন্তু নতুন শিক্ষানীতি (New Education Policy) অনুসারে চার বছরের ডিগ্রি কোর্স হচ্ছে। এতে কলেজ স্তরে সমস্যা কমেছে। কিন্তু একাদশ এবং দ্বাদশে দুটো সেমিস্টারের কারণে কেউ যদি প্রথমটাই কম নম্বর পায় অর্থাৎ প্রথম সেমিস্টারে ফেল করে গেলে সেই পরীক্ষার্থীর কাছে দ্বিতীয় সেমিস্টারই শেষ ভরসা। এখন প্রথম সেমিস্টারে যেহেতু MCQ তে পরীক্ষা হবে তাই সেখানে যদি কেউ ফেল করে পরবর্তী সেমিস্টারে শর্ট বা ব্রড কোয়েশ্চেনের উত্তর দেওয়ার পর প্রথম সেমিস্টারের ব্যাকলগ ক্লিয়ার করা সহজ নয়। স্কুল শিক্ষা দফতরের কর্তারা আশঙ্কা করছেন, বিকল্প ব্যবস্থা না করতে পারলে স্কুল ছুট পড়ুয়াদের সংখ্যা বাড়বে এবং উচ্চমাধ্যমিকে সেমিস্টার চালুর উদ্দেশ্য সফল হবে না। বহু স্কুলেই প্রথম এবং দ্বিতীয় সেমিস্টারের মাঝে সাপ্লিমেন্টারি পরীক্ষা নেওয়ার মতো পরিকাঠামো নেই। স্নাতকের মতো যদি ব্যাকলগ ক্যারেড ফরোয়ার্ড হয় তাহলে পরবর্তীতে পড়ুয়ারা সেটা ক্লিয়ার করবেন কীভাবে তা নিয়ে জটিলতা তৈরি হয়েছে।
