মোদির রাজভবনে পৌঁছনোর আগেই রাজ্যপালের বিরুদ্ধে শ্লীলতাহানির অভিযোগ! দ্রুত পদক্ষেপের আর্জি তৃণমূলের 

রাজ্যের মন্ত্রী শশী পাঁজার অভিযোগ, একটি মেয়ের শ্লীলতাহানি হয়েছে। এটা তো ক্ষমাযোগ্য নয়। এটার তো বিহিত হওয়া দরকার।

শুক্রবার চতুর্থ দফার ভোটের জন্য ফের ডেইলি প্যাসেঞ্জারি করতে বাংলায় আসছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি (Narendra Modi)। আর শুক্রে সভা থাকলেও বৃহস্পতিবার রাতেই কলকাতায় এসে পৌঁছেছেন প্রধানমন্ত্রী। এদিন রাজভবনে (Rajbhawan) রাত্রিবাস করবেন মোদি। কিন্তু তার কয়েক মুহূর্ত আগেই ঘটে গেল নজিরবিহীন ও চরম নিন্দনীয় ঘটনা! মোদির রাজভবনে আসার আগেই এবার রাজ্যপাল (Governor) সি ভি আনন্দ বোসের (CV Ananda Bose) বিরুদ্ধে উঠল শ্লীলতাহানির মতো চাঞ্চল্যকর অভিযোগ। সূত্রের খবর, রাজ্যপাল বোসের বিরুদ্ধে শ্লীলতাহানির অভিযোগ তুললেন এক মহিলা। নিজেকে রাজভবনের অস্থায়ী কর্মচারী বলে দাবি করে ওই মহিলা বৃহস্পতিবার হেয়ার স্ট্রিট থানায় অভিযোগ দায়ের করেছেন। যদিও রাজভবন এ নিয়ে এখনও পর্যন্ত কোনও বিবৃতি দেয়নি।

তবে তৃণমূল (TMC) নারী নির্যাতনের ঘটনায় তীব্র প্রতিবাদ জানিয়ে রাজ্যপালের সমালোচনায় ইতিমধ্যে সরব। এদিন রাজ্যের মন্ত্রী চন্দ্রিমা ভট্টাচার্য ঘটনার তীব্র প্রতিবাদ জানিয়ে দ্রুত পদক্ষেপের দাবি জানান। চন্দ্রিমা বলেন, বাংলায় কোনও রাজ্যপালের বিরুদ্ধে আগে কখনও এমন অভিযোগ সামনে আসেনি। উনি এবং বিজেপি যেখানে সবসময় নারী সুরক্ষার কথা বলেন সেখানে কীভাবে এমন নিন্দনীয় ঘটনা ঘটল তা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন তিনি। অন্যদিকে রাজ্যের মন্ত্রী শশী পাঁজার অভিযোগ, একটি মেয়ের শ্লীলতাহানি হয়েছে। এটা তো ক্ষমাযোগ্য নয়। এটার তো বিহিত হওয়া দরকার। এতে কোনও পদই অভিযুক্তকে রক্ষাকবচ দিতে পারে না। এখন যে অভিযোগ উঠেছে, তা নিয়ে অবিলম্বে বাংলার মানুষের মুখ খোলা দরকার। এ সবের জন্য বাংলার বদনাম হচ্ছে। বাইরে থেকে এসে বাংলাকে কলঙ্কিত করা হচ্ছে। এছাড়া তৃণমূলের রাজ্যসভার সাংসদ সাগরিকা ঘোষ এক্স হ্যান্ডেলে পোস্ট করেন, বাংলার রাজ্য সিভি আনন্দ বোসের বিরুদ্ধে শ্লীলতাহানির অভিযোগ উঠেছে। বিষয়টি ভয়াবহ! প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি কলকাতায় যাচ্ছেন। তাঁর রাজভবনে রাত্রিবাস করার কথা। তার মধ্যেই এক মহিলা অভিযোগ করেছেন যে, তিনি আজ যখন রাজভবনে যান রাজ্যপালের সঙ্গে দেখা করতে, তখনই তাঁর শ্লীলতাহানি করা হয়েছে। অভিযোগকারিণীকে হেয়ার স্ট্রিট থানায় নিয়ে যাওয়া হয়েছে।

এদিকে শুক্রবারই চতুর্থ দফার ভোটের আগে বর্ধমান-দুর্গাপুর, কৃষ্ণনগর এবং বোলপুর কেন্দ্রে প্রধানমন্ত্রীর জনসভার আয়োজন করা হয়েছে। সেকারণেই বৃহস্পতিবার রাতেই তিনি কলকাতায় চলে আসছেন।বিজেপি সূত্রে খবর, বৃহস্পতিবার কলকাতা বিমানবন্দর থেকে রাত ৯টা ১০ নাগাদ রাজভবনে পৌঁছবেন তিনি। সেখানেই রাত্রিবাস করবেন। এর পর শুক্রবার সকালে হেলিকপ্টারে রওনা দেবেন বর্ধমানের উদ্দেশে। সম্ভাব্য সূচি অনুযায়ী, শুক্রবার সকাল ১০টা নাগাদ তিনি রাজভবন থেকে বেরিয়ে গাড়ি করে পৌঁছবেন রেস কোর্সের হেলিপ্যাডে। সেখান থেকে এমআই-১৭ হেলিকপ্টারে উড়ে যাবেন বর্ধমানের উদ্দেশে। বর্ধমান-দুর্গাপুরের সাঁই কমপ্লেক্সে তাঁর সভার আয়োজন করা হয়েছে। বর্ধমান-দুর্গাপুরের বিজেপি প্রার্থী দিলীপ ঘোষ এবং বর্ধমান পূর্বের বিজেপি প্রার্থী অসীমকুমার সরকারের সমর্থনে প্রচার করবেন তিনি। এদিকে বর্ধমানের সভা শেষ করে মোদি পৌঁছে যাবেন কৃষ্ণনগরের উদ্দেশে। কৃষ্ণনগরের বিজেপি প্রার্থী তথা কৃষ্ণনগর রাজপরিবারের সদস্য অমৃতা রায় এবং রানাঘাটের বিজেপি প্রার্থী জগন্নাথ সরকারের সমর্থনে প্রচার করবেন মোদি। কৃষ্ণনগরের সভা শেষ করে মোদির যাওয়ার কথা বোলপুরে। দুপুর আড়াইটে নাগাদ সেখানে বোলপুর কেন্দ্রের বিজেপি প্রার্থী পিয়া সাহা এবং বীরভূমের বিজেপি প্রার্থী দেবতনু ভট্টাচার্যের সমর্থনে প্রচার সারবেন তিনি।

কিন্তু বাংলায় এসে লাগাতার নারী সুরক্ষা -সহ একাধিক ইস্যুতে মোদি ভাঁওতাবাজির রাজনীতি করলেও লোকসভা ভোট চলাকালীন এমন ঘটনায় বিজেপির মুখ পুড়ল বলা চলে। লোকসভা ভোটের আবহে এমন ঘটনাকে কেন্দ্র করে বাংলা নতুন করে অশান্ত হয়ে ওঠার আশঙ্কা করা হচ্ছে।

Previous articleশুক্রেই হাই মাদ্রাসা-আলিম-ফাজিলের ফলপ্রকাশ! কোন ওয়েবসাইটে দেখা যাবে রেজাল্ট?
Next articleকোহলির স্ট্রাইক রেট নিয়ে এবার মুখ খুললেন রোহিত শর্মা এবং অজিত আগারকার, কী বললেন তারা?