তিন মাস জলে থাকলেই বয়স কমবে ১০ বছর! অবাক কাণ্ড ঘটালেন ‘অ্যাকোয়াম্যান’

জানলে অবাক হবেন যে এখনও পর্যন্ত এই বিশ্বের একাধিক মহাসাগরের তলদেশের ৮০ শতাংশ অংশে পৌঁছতেই পারিনি বিজ্ঞান!

বয়স একটা সংখ্যা মাত্র, সময়ের সঙ্গে সঙ্গে যে সংখ্যাটার উর্ধ্বমুখী অবস্থান মানুষ মেনে নিতে পারে না। আসলে বয়স যত বাড়বে তত সমস্যা জর্জরিত হবে শরীর। তাই সতেজ থাকার জন্য কী করে বয়স কমানো যায় বা যৌবন ধরে রাখা যায় সে চেষ্টা রয়ে যায় আজীবন। কিন্তু আপনি জানলে অবাক হবেন যে সমুদ্রের নীচে তিন মাস কাটাতে পারলেই ১০ বছর পর্যন্ত কমে যেতে পারে বয়স! গল্প নয় সত্যি, যা বাস্তবে প্রমাণ করেছেন ‘অ্যাকোয়াম্যান’ জোসেফ দিতুরি (Joseph Dituri)।

প্রাক্তন নৌবাহিনীর অফিসার জোসেফ বিশ্বের ইতিহাসে সবথেকে বেশি দিন জলের নীচে থাকার রেকর্ড গড়ে ফেলেছেন। মানুষ আজ চাঁদে পৌঁছে গেছে, মঙ্গলে রকেট পাঠিয়েছে এমনকি সূর্যের পাড়াতেও মহাকাশযান স্থাপন করতে পেরেছে। কিন্তু জানলে অবাক হবেন যে এখনও পর্যন্ত এই বিশ্বের একাধিক মহাসাগরের তলদেশের ৮০ শতাংশ অংশে পৌঁছতেই পারিনি বিজ্ঞান! এবার সেই সমুদ্রের তলদেশ থেকেই উঠে এলো এক যুগান্তকারী তথ্য। জলের নীচে বেশ কয়েক মাস কাটাতে পারলেই নাকি নাকি মানুষের বয়স কমে যাচ্ছে। গোটা পৃথিবীকে এই চমৎকার তথ্য যিনি দিয়েছেন তার নাম ডক্টর ডিপ সি (Deep Sea)। হ্যাঁ জোসেফ দিতুরিকে এই নামেই চেনে পৃথিবী। জল তাকে অসম্ভব আকর্ষণ করে। অতল আটলান্টিকের রহস্য ভেদ করা সহজ কথা নয় কিন্তু এই বিষয়টাকেই চ্যালেঞ্জ হিসেবে গ্রহণ করেছিলেন তিনি। জোসেফ একসময় আমেরিকার নৌবাহিনীর কমান্ডার অফিসার ছিলেন। প্রায় ২৮ বছর নৌবাহিনীতে কাজ করেছেন। তিনি চাকরিজীবন থেকেই ভাবতেন যে সমুদ্রের নীচে যদি কোনও মানুষ থাকেন তাহলে জলের প্রচন্ড চাপে মানবদেহে কোন কোন পরিবর্তন সম্ভব? এমন কিছু ঘটতে পারে কি যাতে সেই ব্যক্তি সুপার হিউম্যান হয়ে যেতে পারেন? চাকরি থেকে অবসর নেওয়ার পর তিনি বায়োমেডিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং নিয়ে পড়াশোনা করে পিএইচডি ডিগ্রি লাভ করেন। নানা গবেষণা করে তিনি বোঝার চেষ্টা করেন যে জলের নীচে মানুষের শরীর দীর্ঘদিন থাকতে পারে কিনা। ২০২৩ সালে জলের তলায় চেম্বার বানিয়ে ১০০ দিন থেকে আসেন তিনি। জলের তলায় দীর্ঘদিন থেকে সমতলে আসার পর নিজের শরীরের উপর নানা পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে আমেরিকার বায়ো মেডিক্যাল গবেষক (American Bio Medical Researcher) দিতুরি বোঝেন তাঁর দেহের অভ্যন্তরে অনেক পরিবর্তন হয়েছে আর সবটাই হয়েছে জলের চাপের কারণে। এই পরীক্ষা চালানোর কিছুদিন পর সিদ্ধান্ত নেন মহাসাগরের নীচে থাকবেন। পরীক্ষা-নিরীক্ষা, গবেষণা এবং তাঁর দলবল আটলান্টিক মহাসাগরের (Atlantic Ocean) নীচে এক আন্ডারওয়াটার বল তৈরি করে ফেলেন। এর মধ্যে তৈরি করা হয় বিশেষ চেম্বার।

এখানেই ৯৩ দিন কাটিয়ে আসার পর বিজ্ঞানীরা জোসেফের শরীরের পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে দেখেন ৫৬ বছর বয়সী এই মানুষটির শরীর এখন ৪৬ বছরের হয়ে গেছে। কমেছে কোলেস্টেরলের মাত্রা,পরিবর্তিত হয়েছে ডিএনএ (DNA)। হজম শক্তি বেড়েছে এবং আগের থেকে অনেক ভাল ঘুমোচ্ছেন এই গবেষক। তবে অসাধারণ অভিজ্ঞতার মধ্যে খারাপ খবর একটাই, তিন মাসের বেশি সময় মহাসাগরের গভীরে থাকার ফলে প্রাক্তন নৌ বাহিনীর অফিসারের উচ্চতা হাফ ইঞ্চি কমে গেছে।

এই তথ্য প্রকাশ্যে আসার পরে চাঞ্চল্য ছড়িয়ে পড়েছে। সকলেই চায় বয়স ধরে রাখতে। আর সেটা যদি এমন উপায়ে করা সম্ভব হয় তাহলে তো বিশ্বের ধনী ব্যক্তিরা সকলেই মহাসাগরের নীচে থাকার জন্য উৎসাহিত হয়ে পড়বেন। দিতুরি নিজেও বলছেন দীর্ঘদিন একটা শান্ত পরিবেশের মধ্যে কাটালে মানসিকভাবে অনেক ফুরফুরে লাগে আর সেটা সমুদ্রের তলদেশের থেকেই তিনি অনুভব করেছেন।

 

Previous articleপ্রবল দুর্যোগের দিনেও ‘উল্লাস’ বিজেপির! তীব্র নিন্দা তৃণমূলের
Next articleমমতা ম্যাজিকে বৃষ্টিভেজা কলকাতায় উপচে পড়া ভিড়, বেলেঘাটা থেকে মানিকতলা পদযাত্রা