Monday, August 25, 2025

কমিশনের নিষেধাজ্ঞাকে তোয়াক্কা না করেই ফের বিভাজনের রাজনীতি! মোদিকে তোপ বিরোধীদের 

Date:

Share post:

নির্বাচন কমিশনকে (Election Commission of India) রীতিমতো বুড়ো আঙুল দেখিয়ে লোকসভা ভোটের (Loksabha Election) প্রচারে হিন্দু-মুসলমান নিয়ে বিভাজনের রাজনীতির পরে এবার খ্রিস্টান ও মুসলমানদের মধ্যে বিভেদ তৈরিতে হাত ধুয়ে নেমে পড়লেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি (Narendra Modi)। মঙ্গলবার কলকাতায় যাওয়ার আগে ঝাড়খণ্ডের দুমকায় প্রচার করেন প্রধানমন্ত্রী। সেখানেই তাঁর বিরুদ্ধে প্রচারে খ্রিস্টান ও মুসলিমদের মধ্যে সংঘাতের আবহ তৈরির অভিযোগ ওঠে। দুমকার ওই সভায় প্রধানমন্ত্রীর দাবি, ঝাড়খণ্ডের একটি জেলায় চিরাচরিত ছুটির দিন রবিবারের পরিবর্তে শুক্রবারকে ছুটির দিন ঘোষণা করা হয়েছে। পাশাপাশি ‘লাভ জেহাদে’র প্রসঙ্গ টেনে এনেছেন মোদি। ঝাড়খণ্ডে ‘সংখ্যাবৃদ্ধির’ জন্য শাসক ঝাড়খণ্ড মুক্তি মোর্চাকে দায়ী করে মোদি বলেন, অনুপ্রবেশকারী (মুসলিম)-দের কারণে জনজাতি সমাজের মেয়েরা ‘লাভ জেহাদে’র শিকার হচ্ছেন। তবে বিরোধীদের মতে, চলতি ভোটে হার নিশ্চিত জেনেই গাজোয়ারি করতে পিছপা হননি প্রধানমন্ত্রী।
তবে বিরোধীদের মতে, এটা মেরুকরণের নির্লজ্জ উদাহরণ। এতদিন হিন্দু-মুসলমানের মধ্যে মেরুকরণ করার চেষ্টা করেছেন প্রধানমন্ত্রী। কিন্তু যেহেতু ঝাড়খণ্ডের জনজাতি সমাজের বড় অংশ খ্রিস্টান, সেই কারণে সেই সমাজের ভোট পেতে এ বার খ্রিস্টান-মুসলিমে বিভাজন তৈরির কৌশল নিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী। সম্প্রতি নির্বাচন কমিশন বিজেপির সর্বভারতীয় সভাপতি জেপি নাড্ডাকে চিঠি দিয়ে সতর্ক করে জানিয়েছিল, তাঁর দলের তারকা প্রচারকেরা যেন ধর্মভিত্তিক প্রচার না চালান। কিন্তু মোদি বারবার বুঝিয়ে দিয়েছেন শেষ দফা ভোটেও ধর্মভিত্তিক প্রচারেই ভরসা রাখতে চান তিনি।
আজ দুমকার প্রচারে গিয়ে মোদী বলেন, ‘‘রবিবার কোনও দিন হিন্দুদের ছুটির দিন ছিল না। বরং রবিবার দিনটিকে ছুটির দিন হিসেবে পালন করা খ্রিস্টান প্রথা। খ্রিস্টানরা যখন এ দেশে শাসন করত, তখন থেকে ওই প্রথা শুরু হয়। যা প্রায় দু’শো-তিনশো বছর ধরে চলে আসছে। কিন্তু এখন হঠাৎ এ রাজ্যের একটি জেলায় রবিবারের পরিবর্তে ছুটির দিন শুক্রবার করার কথা বলা হয়েছে। এখন খ্রিস্টানদের সঙ্গেও লড়াই শুরু হয়েছে। এ সব কী হচ্ছে।’’
সম্প্রতি ঝাড়খণ্ডের একটি জেলা প্রশাসন স্থানীয়দের চাপে প্রায় ৪৩টি সরকারি স্কুলে রবিবারের পরিবর্তে শুক্রবার ছুটির দিন বলে ঘোষণা করেছিল। রাজ্য জুড়ে সমালোচনার কারণে প্রশাসন সেই আদেশ প্রত্যাহার করে নেয়। ভোটের মুখে এবার মোদি সেই ঘটনার কথা মনে করান। পাশাপাশি তিনি সরব হয়েছেন তথাকথিত ‘লাভ জেহাদ’ নিয়েও। বিজেপির অভিযোগ, হিন্দু মেয়েদের পরে এখন জনজাতি সমাজের মেয়েদের ভুলিয়ে নিয়ে গিয়ে বিয়ে করছেন মুসলিম যুবকেরা। তারপরে তাঁদের ধর্ম পরিবর্তন করা হচ্ছে। অধিকাংশ ক্ষেত্রে এ ধরনের ঘটনায় অত্যাচারের শিকার হচ্ছেন ওই জনজাতি মেয়েরা এবং একাধিক মৃত্যুর ঘটনাও সামনে এসেছে বলে বিজেপির দাবি।
তবে কংগ্রেস নেতৃত্বের মতে, বার্তা স্পষ্ট। হিন্দু-মুসলমানের পরে এ বারে খ্রিস্টান-মুসলমানে বিভাজন তৈরিতে নেমে পড়েছেন মোদি। কিন্তু মানুষ বোকা নয়। দেশের মানুষ মেরুকরণের ফাঁদে পা দেবেন না।

spot_img

Related articles

কলকাতার সর্বজনীন পুজো ডিরেক্টারি: দু-মলাটে বাংলার দুর্গোৎসবের ৪৩৪ বছরের ইতিহাস

রবিবাসরীয় সন্ধেয় গড়িয়াহাটের একটি ব্যাঙ্কয়েটে আড্ডার আবহে প্রকাশিত হল সাংবাদিক-লেখক সম্রাট চট্টোপাধ্যায়ের বই 'কলকাতার সর্বজনীন পুজো ডিরেক্টারি'। উপস্থিত...

তৃণমূল–সমাজবাদী পার্টির পথে এবার আম আদমি পার্টি! জেপিসিতে থাকছে না আপও 

সংবিধান সংশোধনী বিল খতিয়ে দেখতে গঠিত যৌথ সংসদীয় কমিটি (জেপিসি) থেকে দূরে থাকার সিদ্ধান্ত নিল আম আদমি পার্টি।...

মোদির বিরুদ্ধে সরব! হিটলারি কোপে লাদাখের সোনম ওয়াংচু

দফা এক দাবি এক। লাদাখের জন্য একই দাবিতে আজও অনড় সমাজকর্মী সোনম ওয়াংচু (Sonam Wangchuk)। লাদাখের জমি, যা...

শান্তিপুরে মহিলা স্বয়ম্ভর গোষ্ঠীর ভোটে গোহারা বিজেপি! ২৬-৪-এ জয়ী তৃণমূল 

এসআইআর ইস্যু নিয়ে রাজ্যে বিজেপির মাতামাতির মধ্যে নদিয়ার শান্তিপুরে মহিলা স্বনির্ভর গোষ্ঠীর ক্লাস্টার কমিটির নির্বাচনে বড় সাফল্য পেল...