বিজেপির ভরসা এখন চন্দ্রবাবু-নীতীশ! মোদির মুখে ‘রাজ্যকে সাহায্যের’ উপঢৌকন

দেশের মানুষ বিজেপির জনবিরোধী নীতিকে ছুঁড়ে ফেলে দিয়েছে, কার্যত সেটা বুঝতে পেরেই ফল প্রকাশের দিন মোদির মুখে সংবিধানের বাণী

গণনা শেষ হওয়ার আগেই মোদির মুখে তৃতীয়বার কেন্দ্রের সরকার গঠনের বুলি। সেই সঙ্গে কেন্দ্রের ক্ষমতায় এলে মোদি-বাহিনীর দলে নাম না লেখালে যে প্রাপ্য অর্থ থেকে বঞ্চিত হবে রাজ্য, সেই প্রচ্ছন্ন হুমকিও চাপা থাকল না দলের কর্মীদের দেওয়া মোদির বার্তায়। একক সংখ্যাগরিষ্ঠতা থেকে অনেক দূরেই থাকতে হবে বুঝতে পেরেই জোটসঙ্গীদের উপর চাপ দেওয়ার খেলায় মেতে উঠলেন মোদি।

একক সংখ্যাগরিষ্ঠতা তো দূরের কথা, গতবারের থেকে পিছিয়ে বিজেপি তথা এনডিএ জোট। দেশের মানুষ সাদরে গ্রহণ করেছেন I.N.D.I.A. জোটকে। সেই পরিস্থিতিতে সরকার গঠনের আগে কখনও হুমকি, কখনও প্রলোভন। এটাই এখন অস্ত্র মোদির। প্রথমেই তিনি প্রয়োগ করেন প্রলোভনের অস্ত্র। যেখানে বিজেপির সরকার গঠন এখন তার জোটসঙ্গীদের উপর নির্ভর করছে সেখানে মোদি বলেন, “এই পবিত্র দিনে এটা নিশ্চিত হল যে এনডিএ তৃতীয়বার ক্ষমতায় আসতে চলেছে। আমি জনগনকে ধন্যবাদ জানাই।” তিনি স্পষ্ট বুঝে গিয়েছেন জোটসঙ্গীরা হাত ছাড়লে ক্ষমতায় আসা সম্ভব না।

সেই সঙ্গে তিনি আলাদাভাবে উল্লেখ করেন অন্ধ্রপ্রদেশ ও বিহারের কথা। চন্দ্রবাবু নাইডুর টিডিপি ও বিহারের নীতীশ কুমারের সমর্থন এনডিএ-র পক্ষে না থাকলে যে তৃতীয়বার মোদি সরকার-এর বুলি বুদবুদের মতো মিলিয়ে যাবে তা তো স্পষ্ট বিজেপির কাছেও। তাই উপঢৌকনের বাণী মোদির মুখে, “যে চার রাজ্যে বিধানসভা নির্বাচন হয়েছে, আমি আশ্বাস দিচ্ছি আমাদের সরকার তাদের উন্নয়নে কোনও ত্রুটি রাখবে না। যার মধ্যে চন্দ্রবাবুর অন্ধ্রপ্রদেশ রয়েছে। নীতীশ কুমারের বিহারও ভালো ফল করেছে।” বিহারে বিধানসভা নির্বাচন না হলেও মোদি বুঝিয়েই দিলেন এখন চন্দ্রবাবু আর নীতীশই তাঁর ভরসা।

সেই সঙ্গে দেশের মানুষ বিজেপির জনবিরোধী নীতিকে ছুঁড়ে ফেলে দিয়েছে, কার্যত সেটা বুঝতে পেরেই ফল প্রকাশের দিন মোদির মুখে সংবিধানের বাণী। এক তৃতীয়াংশ সংখ্যা গরিষ্ঠতা না থাকায় বিজেপির সংবিধান বদলানোর চিন্তা যে মস্তিষ্কেই থেকে যাবে, কার্যকর করা যাবে না, তা বুঝতে পেরেই খানিকটা মানুষের মন জয়ের চেষ্টা। যদিও একবারও সংবিধান না বদলানোর বার্তা দেননি এদিন মোদি। বরঞ্চ সংবিধানকে ‘গাইডলাইন’ হিসাবে মানার কথা বলেন তিনি।