Tuesday, November 11, 2025

বাংলায় ‘বিজেমূল’ তত্ত্বের প্রচারই ডুবিয়েছে বামেদের! ‘শূন্যে’র ব্যাখ্যায় সাফ জানালেন দীপঙ্কর

Date:

Share post:

নির্বাচনের অনেক আগেই বলেছিলেন- বিরোধী নির্দিষ্ট করতে হবে। জানতে হবে বড় শত্রুকে তার বিরুদ্ধেই লড়াইয়ের বার্তা দিতে হবে। এক্ষেত্রে বিজেপিই প্রধান বিপক্ষ। তাদেরকে নিশানা করতে হবে। সিপিআইএমএল-লিবারেশনের (Communist Party of India (Marxist–Leninist) Liberation) সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক দীপঙ্কর ভট্টাচার্যের (Dipankar Bhattcharya) এই ভবিষ্যবাণী কাল দেননি আলিমুদ্দিনের নেতারা। গালভরা ‘বিজেমূল’ তত্ত্ব আওড়ে গিয়েছেন। ফলে যা হওয়ার তাই হয়েছে। এবারও শূন্য। অথচ টার্গেট নির্দিষ্ট করে লড়ে বিহারে দুই তৃতীয়াংশ আসনে জয় পেয়েছে দীপঙ্করের দল। লোকসভা নির্বাচনের ফল ঘোষণার পরে কলকাতায় এসে ফের রাজ্য সিপিআইএম তথা বামফ্রন্টের ‘শূন্যতা’র ব্যাখ্যা দিলেন সিপিআইএমএল-এর সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক। আর তাঁর স্পষ্ট মত, ‘বিজেমূল’ আর ‘সেটিং‘তত্ত্ব থেকে বেরিয়ে না এলে বাংলায় বামেদের শূন্যতা ঘুচবে না।এবারের লোকসভা নির্বাচনে বিহারে ৩টি আসনে প্রার্থী দিয়ে ২টি আসনেই জয় পেয়েছে সিপিআইএমএল লিবারেশনের। বিহারের গত বিধানসভা নির্বাচনেও ১২টি আসনে জয়ী হন লিবারেশনের প্রার্থীরা। কলকাতায় এসে বামফ্রন্টের শূন্য নিয়ে যথেষ্ট চিন্তা ব্যক্ত করেন দীপঙ্কর ভট্টাচার্য (Dipankar Bhattcharya)। তাঁর কথায়, বিজেপি সম্পর্কে সিপিএম নিজের অবস্থান না বদলালে বাংলায় শূন্য থেকে মহাশূন্যের পথে চলে যাবে দল। দীপঙ্কর সাফ জানান, “বিজেমূল তত্ত্ব সোশ্যাল মিডিয়ায় জনপ্রিয় হতে পারে, কিন্তু বাস্তবে তা বিরূপ প্রতিক্রিয়াই তৈরি করে।“

বঙ্গে BJP-র ভরডুবি নিয়ে সন্তোষ প্রকাশ করেন সিপিআইএমএল লিবারেশনের (Communist Party of India (Marxist–Leninist) Liberation) সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক। কিন্তু বামেরা এরাজ্যে দ্বিতীয় স্থানে উঠে আশতে না পারায় সিঁদুরে মেঘ দেখছেন তিনি। কারণ, দীপঙ্করের মতে, কোনও রাজ্যে দীর্ঘদিন ধরে যদি বিজেপি দ্বিতীয় স্থানে থেকে যায় তাহলে এক না একদিন সেই ওয়েটিং লিস্ট কমফার্ম হবেই। কালের নিয়মে তারা ক্ষমতায় আসবে। যেমন ওড়িশা বা ত্রিপুরায় হয়েছে। তাই বিজেপিকে প্রধান বিরোধী আসন থেকেও গেরুয়া শিবিরকে উৎখাত করার ডাক দেন দীপঙ্কর।

বিহারে তাঁর দল পারলেও ৩৪ বছর ক্ষমতায় থাকলেও কেন আর ঘুরে দাঁড়াতে পারছে না বামপন্থীরা? দীপঙ্কর মনে করেন, “বিজেপিকে আর পাঁচটা রাজনৈতিক দলের মতো করে দেখাই সিপিআইএমের সবচেয়ে বড় ভুল। বিজেপি আর তৃণমূলকে (TMC) এক সঙ্গে নিশানায় রেখে  প্রচার, বিজেমূল তত্ত্ব, সোশ্যাল মিডিয়ায় শুনতে ভালো লাগে। কিন্তু বাস্তবে তা বিরূপ প্রতিক্রিয়াই তৈরি করে।“ একই সঙ্গে সিপিআইএমএল নেতা মতে করেন, “গ্রাম, কৃষক, গরিব“ এই তিনই ছিল সিপিএম তথা বামেদের জনসমর্থনের ভিত্তি। কিন্তু সেই জায়গা থেকে অনেক সরে গিয়েছে তারা। এখন আর সেই সব প্রান্তিক মানুষের কাছে পৌঁছতে পারছেন না আলিমুদ্দিনের নেতারা। তাঁর কথা, “বিজেপিকে হারাতে সক্ষম-সিপিএম এই বার্তা দিতে পারলে তবেই মানুষ তাদের ভরসা করবে।“ অষ্টম বামফ্রন্ট সরকার গঠন হবে- এই ধরনের দাম্ভিকতা থেকে বেরিয়ে এসে সাধারণ মানুষের পাশে গিয়ে আন্দোলন করতে হবে। অর্থাৎ বাংলার মানুষ তৃণমূল বিরোধিতা ভালো চোখে দেখছে না।

তবে, দীপঙ্করের মতকে বিশেষ পাত্তা দিচ্ছে না বঙ্গ সিপিআইএম নেতৃত্ব। সিপিএমের রাজ্য সম্পাদক মহম্মদ সেলিম কিছুটা কটাক্ষ করেই বলেন, “ওঁর আশঙ্কা, আতঙ্ক, ভয়, পরামর্শ শুনলাম। প্রতিটি নির্বাচনের পর আমরা ফলাফল নিয়ে পর্যালোচনা করি। এবারও করছি।“ তবে দীপঙ্করের মতে যে সবটা ফেলে দেওয়ার নয়, সেটাই স্বীকার করেছেন সিপিএমের রাজ্য সম্পাদক।





spot_img

Related articles

স্বাস্থ্য ক্ষেত্রে বিপ্লব, রাজ্যে ১৪ বছরে ৭০ হাজার কোটি টাকার বিনিয়োগ : মুখ্যমন্ত্রী 

রাজ্যের স্বাস্থ্য পরিকাঠামোয় গত ১৪ বছরে আমূল পরিবর্তন এসেছে বলে দাবি করলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। স্বাস্থ্যভবন থেকে এক...

দিল্লি বিস্ফোরণ থেকে সতর্ক লালবাজার, ইডেনে বর্জ্র-আটুঁনি

ভারত-দক্ষিণ আফ্রিকা টেস্টের(IND vs SA Test) আগে ইডেন পরিদর্শনে নগরপাল মনোজ বর্মা(Manoj Varma)। দিল্লি বিস্ফোরণ কাণ্ডের পর সতর্ক...

Kiff: মঙ্গল-সন্ধ্যায় সিনে আড্ডায় হঠাৎ হাজির মুখ্যমন্ত্রী, শোনালেন ‘দুষ্টুমির গল্প’

সিনে প্রেমীদের এখন তীর্থক্ষেত্র নন্দন-রবীন্দ্রসদন চত্বর। সেখানে চলছে ৩১তম কলকাতা আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্র উৎসব (Kiff)। মঙ্গলবার, সন্ধেয় আচমকাই নন্দন...

ইডেনে পুরানো বন্ধুর সঙ্গে দেখা গিলের, হাসি-মজায় মাতলেন দুই পঞ্জাব পুত্র

ইডেনের ক্লাব হাউসে হঠাত দেখা দুই পঞ্জাব পুত্রের। ক্রিকেটের নন্দন কাননে দুই বন্ধুর রিইউনিয়ন। বর্তমানে ভারতীয় ক্রিকেটের পোস্টার...