তরুণ মুখদের সামনে এনে শূন্যের গেরো কাটাতে চেয়েছিল সিপিআইএম (CPIM)। কিন্তু লোকসভা নির্বাচনেও সেই ফাঁড়া কাটলো না। দুই বর্ষীয়ান নেতা মহম্মদ সেলিম (Md Selim) ও সুজন চক্রবর্তী (Sujan Chakraborty) ছাড়া আর কেউ জামানত রক্ষা করতে পারেননি। এই হারের কারণ ব্যাখ্যা করতে গিয়ে শনিবার মৌলালি যুব কেন্দ্রে সুজন স্বীকার করলেন শক্তিশালী বিকল্প হয়ে উঠতে পারেনি বামেরা আর সেলিমের মতে নবপ্রজন্মের উৎসাহ সোশ্যাল মিডিয়ার বিপ্লবে বেশি। এদিন ছাত্রসংগ্রামের ৫৯তম প্রতিষ্ঠা দিবসের মঞ্চে প্রকাশিত হয় ছাত্রসংগ্রাম ৫৯তম বর্ষের বিশেষ সংখ্যা এবং ‘স্কুল বাঁচাও মূল বাঁচাও’ আন্দোলনের পরিকল্পনা।

সিপিএমের (CPIM) রাজ্য সম্পাদক তথা পলিটব্যুরো সদস্য বলেন, ‘‘বামপন্থীদের যতটা সাফল্য আশা করা গিয়েছিল, সৃজন, সুজন, সেলিম, দীপ্সিতাদের মিছিলে লোক দেখে যে আশা জেগেছিল, তা বাস্তবায়িত হয়নি।’’ তরুণ প্রজন্মের ফেসবুক বিপ্লব নিয়ে কিছুটা ক্ষোভের সঙ্গেই সেলিম বলেন, ‘‘কেউ বলছেন আমরা শূন্য, কেউ নামের আগে লিখছেন হার্মাদ। এগুলো কোনও কাজের কথা নয়। অতি উৎসাহের ফল।’’ অর্থাৎ বামেদের নতুন প্রজন্ম যে মাঠে নেমে লড়াইয়ের বদলে সোশ্যাল মিডিয়ায় বেশি নির্ভরশীল হয়ে পড়ছে তা সেলিমের কথা থেকেই স্পষ্ট।


CPIM রাজ্য সম্পাদকমণ্ডলীর তরফে দলের ছাত্র ফ্রন্টের দায়িত্বে রয়েছেন সুজন চক্রবর্তী। তিনি স্পষ্ট স্বীকার করেন, ‘‘বিজেপিকে হারাতে বাংলায় মানুষ তৃণমূলকে ভোট দিয়েছেন। আর তৃণমূলকে হারাতে বিজেপিকে ভোট দিয়েছেন।’’ অর্থাৎ কোনও পক্ষের কাছেই শক্তিশালী বিকল্প হয়ে উঠতে পারেনি সিপিআইএম তথা বামেরা। রাজনৈতিক মহলের মতে, মানুষ যে বামেদের দিকে ভিড়ছে না, তা এক প্রকার মেনে নিয়েছেন সুজন।

কয়েকদিন আগে কলকাতায় এসে সিপিআইএমএল লিবারেশনের নেতা দীপঙ্কর ভট্টাচার্য স্পষ্ট জানিয়েছিলেন, সিপিআইএমকে তাদের শত্রু চিহ্নিত করতে হবে। একইসঙ্গে বিজেপি আর তৃণমূলকে নিশানা করলে কখনওই সাফল্য আসবে না। এক্ষেত্রে দীপঙ্করের দেওয়াই ছিল, বিজেপিকে হটাতে লড়াইয়ে নামতে হবে বামেদের। কারণ বাংলার মানুষের কাছে তারাই বহিরাগত। এবার লোকসভা নির্বাচনের প্রচারে বহিরাগতদের বিসর্জন স্লোগান তুলেছিল তৃণমূল। এবার দু নৌকায় পা দিয়ে চলতে গিয়েই যে ভরাডুবি হয়েছে তা কার্যত মেনে নিচ্ছে আলিমুদ্দিন। ১৯-২০ জুন সিপিএম রাজ্য কমিটির প্রথম বৈঠকে বসতে চলেছে। সেখানে এই শূন্য থেকে মহাশূন্যে বিলীন হয়ে যাওয়ার কি ব্যাখ্যা নেতারা দেন সেটাই দেখার।

