ডাক্তারির সর্বভারতীয় প্রবেশিকা পরীক্ষা NEET -এ ব্যাপক দুর্নীতির ঘটনায় এই মুহূর্তে সারা দেশ তোলপাড়। এই পরিপ্রেক্ষিতে বাংলায় NEET বাতিলের দাবিতে আন্দোলন গড়ে উঠছে বাংলা পক্ষর নেতৃত্বে। সেই সঙ্গে বাংলা পক্ষ সংগঠন দীর্ঘদিন ধরেই ডোমিসাইল বি বাতিলের দাবি করে আসছে। ডোমিসাইল ও কাস্ট সার্টিফিকেট জালিয়াতির আশঙ্কাও করছে সংগঠনটি।

আজ, বুধবার বিধাননগরে রাজ্যের স্বাস্থ্য দফতরে ডেপুটেশন ও বিক্ষোভ সভার ডাক দিয়েছিল বাংলা পক্ষ। দাবি ছিল NEET বাতিল করা, ডোমিসাইল-বি বাতিল করা, রাজ্য কোটায় শুধু পশ্চিমবঙ্গে অবস্থিত স্কুল থেকে মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক পাশ করা ছাত্রছাত্রীদের ভর্তি করা এবং আগামী বছর থেকে পশ্চিমবঙ্গে মেডিকেল ভর্তি পশ্চিমবঙ্গ জয়েন্ট এন্ট্রান্স পরীক্ষার মাধ্যমে করা। বাংলা পক্ষর সাধারণ সম্পাদক ডাঃ গর্গ চট্টোপাধ্যায় বলেন “NEET -এর মাধ্যমে বাঙালির করের টাকায় চলা সরকারি মেডিকেল কলেজগুলিতে বাঙালিকেই বঞ্চিত করে উত্তর প্রদেশ, বিহার গুজরাটের লোকজন সুযোগ পাচ্ছে। এই দুর্নীতির শিকড় অনেক গভীরে। প্রকৃত বাঙালি মেধা সুযোগ পাচ্ছে না, টাকার বিনিময়ে র্যাঙ্ক কেনা হচ্ছে। আগামীদিনে বাংলার স্বাস্থ্যব্যবস্থা ভেঙে পড়বে, এখনই প্রতিকার না করলে।”

তিনি যেমন NEET বাতিলের দাবি করেন, তেমনি রাজ্যের ডোমিসাইল-বি কোটা বাতিলের দাবি করেন। NEET র ফলে ১৫% সর্বভারতীয় কোটায় বাইরের রাজ্যের ছাত্রছাত্রীরা ভর্তি হবেই, এরপরও ডোমিসাইল বি-র মাধ্যমে বঞ্চিত করা হচ্ছে রাজ্যের মেধাকে। মুখ্যমন্ত্রী প্রকাশ্যে ঘোষণা করার পরও ডোমিসাইল বি কেন বাতিল হয়নি তিনি জানতে চান। সংগঠনের পক্ষে ডাঃ গর্গ চট্টোপাধ্যায়ের নেতৃত্বে চারসদস্যের প্রতিনিধি দল রাজ্যের স্বাস্থ্যশিক্ষা অধিকর্তা ডা: কৌস্তভ নায়েকের সঙ্গে দেখা করেন। এই দলে ছিলেন সংগঠনের কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক কৌশিক মাইতি, শীর্ষ পরিষদ সদস্য ডা: আব্দুল লতিফ ও বাংলা ছাত্র পক্ষর নেতৃত্ব রানা ভট্টাচার্য। কৌশিক মাইতি বলেন স্বাস্থ্য শিক্ষা অধিকর্তার সঙ্গে সদর্থক আলোচনা হয়েছে, তিনি দাবিগুলির সঙ্গে সহমত পোষণ করেছেন ও ঊর্ধতন কর্তৃপক্ষের সঙ্গে আলোচনা করবেন বলে জানিয়েছেন।

কৌশিক মাইতি আরও বলেন, “মেডিকেলে ভর্তির আগে ডোমিসাইল ও কাস্ট সার্টিফিকেট ভেরিফাই করতে হবে, প্রয়োজনে পুলিশ ভেরিফিকেশন করাতে হবে। মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিক স্তরের পরীক্ষার স্কুল কোন রাজ্যে সেটিও অনুসন্ধান করা জরুরী। ব্যারাকপুর সহ বিভিন্ন মহকুমা শাসকের অফিসে যেভাবে জাল ডোমিসাইল তৈরীর খবর আসছে, তা আশঙ্কাজনক। ডাক্তারির ক্ষেত্রে যাতে এই জাল সার্টিফিকেট ব্যবহৃত না হয় তা সরকারকে নিশ্চিত করতে হবে।” এদিনের প্রতিবাদ সভায় এছাড়াও শীর্ষ পরিষদ সদস্য অরিন্দম চট্টোপাধ্যায়, এমডি সাহিন, উত্তর ২৪ পরগণা শহরাঞ্চলের সম্পাদক পিন্টু রায় সহ শতাধিক সদস্য, NEET পরীক্ষার্থী ও অভিভাবকরাও উপস্থিত ছিলেন।
