শেষমেশ ইজরায়েলের (Israel) ছয় সদস্যের যুদ্ধকালীন মন্ত্রিসভা (Cabinet) ভেঙে দিলেন ইজরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু (Benjamin Netanyahu)। রবিবার সন্ধ্যায় ইজরায়েলের রাজনৈতিক নিরাপত্তা-সংক্রান্ত মন্ত্রিসভার বৈঠকের পর সোমবারই নেতানিয়াহু এই ঘোষণা করেন। কারণ সম্প্রতি নেতানিয়াহুর যুদ্ধকালীন মন্ত্রিসভা থেকে পদত্যাগ করেছেন ইজরায়েলের প্রতিরক্ষামন্ত্রী বেনি গানজ। যা কিনা নেতানিয়াহুর জন্য একটা বড় ধাক্কা। তাই এমন পরিস্থিতিতে ৬ সদস্যের মন্ত্রিসভাই আর রাখলেন না নেতানিয়াহু।

সূত্রের খবর, নেতানিয়াহু সরকারের অতি-ডানপন্থী জোটসঙ্গীরা যুদ্ধকালীন মন্ত্রিসভা ভেঙে দেওয়ার কথা আগেই জানানো হয়েছিল। অবশেষে নেতানিয়াহু যুদ্ধকালীন মন্ত্রিসভা ভেঙে দেওয়ার ঘোষণা করেন সোমবার (১৭ জুন)। ২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর হামাস হামলার পরে ১১ অক্টোবর তৈরি হয় এই মন্ত্রিসভা। অবশ্য ন্যাশনাল ইউনিয়ন পার্টির নেতা বেনি গানজ মন্ত্রিসভা ছাড়ার পর থেকেই নেতানিয়াহুর চরম দক্ষিণপন্থী সহযোগীরা নতুন যুদ্ধ মন্ত্রকের দাবি জানিয়ে এসেছেন। তবে, সেই নিয়ে বিশেষ উচ্চবাচ্য করেননি নেতানিয়াহু। বরং গানজ়ের সঙ্গে জোট বেঁধেই এই মন্ত্রিসভা তৈরি হয়েছিল, তাঁরই অনুরোধে। কিন্তু সেই গানজ যখন নেই তখন এই মন্ত্রিসভা রাখার মানে হয় না। এদিকে ইজরায়েলের বিরোধী দলের নেতা ইয়ায়ির লাপিদের কটাক্ষ, যুদ্ধকালীন মন্ত্রিসভা নয়, বরং ইজরায়েলের বর্তমান সরকারটি অবিলম্বে ভেঙে দেওয়া উচিত।

সংবাদমাধ্যম সূত্রে খবর, ইজরায়েলের প্রতিক্ষামন্ত্রী ইয়োভ গ্যালান্ট ও কৌশলগত বিষয়ক মন্ত্রী রন ডার্মারের সঙ্গে বৈঠকে আপাতত যুদ্ধ সংক্রান্ত সিদ্ধান্ত নেবেন ইজরায়েলি প্রধানমন্ত্রী। এদিকে ইজরায়েলিদের এমন সহিংস রূপ দেখে তাঁদের সঙ্গে সমস্ত সম্পর্ক ছিন্ন করার ঘোষণা করেছে কলম্বিয়া। এদিকে মিশরের রাজধানী কায়রোতে শুরু হয়েছে ইজরায়েল-হামাস যুদ্ধবিরতির আলোচনা। কিন্তু অনেক আগেই ব্যক্তিগতভাবে যুদ্ধবিরতি চুক্তিতে বাধা দিচ্ছেন ইজরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহু। দক্ষিণ গাজায় রাফা শহরে ইজরায়েল অভিযান চালাচ্ছে। যুদ্ধবিরতি চুক্তি কার্যকর করতে সরকারবিরোধী বিক্ষোভ চালাচ্ছে ইজরায়েল। ইতিমধ্যে যুক্তরাষ্ট্রের বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়েও ছড়িয়ে পড়তে শুরু করেছে ইজরায়েল বিরোধী আন্দোলন। কানাডা, যুক্তরাজ্য, অস্ট্রেলিয়া, ফ্রান্সেও প্রভাব পড়েছে এই যুদ্ধের।

তবে এ সবের মধ্যেও গাজায় হামলা একেবারেই বন্ধ হয়নি বলে দাবি করেছেন ইউনাইটেড নেশনস রিলিফ অ্যান্ড ওয়ার্কস এজেন্সি ফর প্যালেস্টাইনের প্রধান ফিলিপ লাজারিনি। গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রকের দাবি, গত ২৪ ঘণ্টায় অন্তত ১০ জন প্রাণ হারিয়েছে বাহিনীর হামলায়। গুরুতর জখম অন্তত ৭৩ জন।
