“বিরোধীরা দেশের কন্ঠস্বর”! ধ্বনি ভোটে জয় পেতেই স্পিকারকে ‘সংবিধান রক্ষার’ পাঠ সুদীপ-রাহুলদের

ভোটাভুটি চায়নি বিরোধীরা। আর সেকারণেই ধ্বনি ভোটে ভর করেই বুধবার দ্বিতীয়বারের জন্য লোকসভার (Loksabha) স্পিকার (Speaker) পদে নির্বাচিত হলেন ওম বিড়লা (Om Birla)। তবে এদিন স্পিকার পদে বসতেই ওম বিড়লার প্রশংসায় পঞ্চমুখ হয়ে নিজের সরকারের জায়গান গাইলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি (Narendra Modi)। এদিন প্রধানমন্ত্রীর ভাষণে ওম বিড়লার প্রশংসা করে তিনি বলেন, “আপনার কাজ অনুপ্রেরণামূলক। কোটায় মানবসেবায় কাজ করেছেন আপনি। গ্রামে গ্রামে স্বাস্থ্য পরিষেবা পৌঁছে দিয়েছেন। গরিব মানুষদের কম্বল, ছাতা দিয়ে উপকৃত করেছেন। খেলাধুলায় অনুপ্রেরণা জোগান আপনি। আপনার নেতৃত্বে à§§à§­ তম লোকসভায় ইতিহাস তৈরি হয়েছে। ভারতের ভবিষ্যতকে নতুন দিশা দেওয়ায় আপনার নেতৃত্ব ইতিহাসে জায়গা পাবে”।

তবে প্রধানমন্ত্রী স্পিকারের সমর্থনে লাগাতার ঢাল হয়ে দাঁড়ালেও দ্বিতীয়বারের জন্য নির্বাচিত হতেই ওম বিড়লাকে শুভেচ্ছা জানালেও মোদি সরকারের লাগাতার কন্ঠরোধের তীব্র বিরোধিতা করেন বিরোধী জোটের সাংসদরা। এদিকে মঙ্গলবারই লোকসভার বিরোধী দলনেতা হিসাবে রাহুল গান্ধীর নামে আনুষ্ঠানিকভাবে সিলমোহর পড়তেই ফের লোকসভায় পুরনো মেজাজে ধরা দিলেন সোনিয়া তনয়। তিনি স্পিকারকে অভিনন্দন জানিয়ে সংবিধান রক্ষা ও সরকারের সঙ্গে হাতে হাত মিলিয়ে কাজের প্রতিশ্রুতি দিলেও বিরোধীদের কন্ঠরোধ না করার পক্ষে আর্জি বিরোধী দলনেতার। এরপরই মোদির বক্তব্যকে হাতিয়ার করে পাল্টা রাহুল বলেন, “এই সংসদ দেশের কণ্ঠ। সরকারের হাতে ক্ষমতা রয়েছে, কিন্তু বিরোধীরাও দেশের জনগণের কণ্ঠস্বর। বিরোধীরা চায় সংসদ অধিবেশন ভালভাবে হোক। বিরোধীদের কণ্ঠ পৌঁছে দেওয়া জরুরি। আশা করি, আপনি আমাদের কথা বলার সুযোগ দেবেন। সংসদ কত ভালভাবে চলল, সেটা প্রশ্ন নয়। বরং প্রশ্ন হল, বিরোধীদের কণ্ঠস্বর কতটা শোনা হল। আশা করি, আপনি নিজের দায়িত্ব পালন করবেন।”

তবে শুধু রাহুল গান্ধীই নন, এদিন বিরোধী দলনেতার পরই স্পিকারকে শুভেচ্ছা জানান তৃণমূল সাংসদ সুদীপ বন্দ্যোপাধ্যায় ও সমাজবাদী পার্টি সুপ্রিমো অখিলেশ যাদব। এদিন সুদীপ সাফ জানান, ১৫০ সাংসদকে সাসপেন্ড করেছেন। মাথানত করেছেন শাসক দলের কাছে। কিন্তু বিরোধীদের লাগাতার কন্ঠরোধ না করার পক্ষেই আর্জি জানিয়েছেন তৃণমূল সাংসদ। পাশাপাশি অখিলেশের বক্তব্যেও পরোক্ষে রাখঢাক না রেখেই মোদি সরকারের ভাঁওতাবাজিকে কাঠগড়ায় তুলে বিরোধীদের কথা বলার সুযোগ দেওয়ার কথা বলেন অখিলেশ।

বুধবার ১৮ তম লোকসভার স্পিকার নির্বাচিত হলেন ওম বিড়লা। অন্যদিকে, কংগ্রেস-সহ ইন্ডিয়া জোটের তরফে প্রার্থী ছিলেন প্রবীণ সাংসদ কে সুরেশ। তিনি কংগ্রেসের এমপি। লক্ষণীয় হল স্বাধীনতার পর এই প্রথম স্পিকার নির্বাচনে লড়াই হলেও বিরোধীরা শেষ পর্যন্ত ডিভিশন বা ভোটাভুটি চায়নি। যার জেরে ধ্বনি ভোটে নির্বাচিত হল ওম বিড়লা। তবে এদিন বিরোধী জোটের একাধিক শরিক ভোটাভুটি চায়নি। তাদের বক্তব্য ছিল, ভোটাভুটি করে এনডিএ প্রার্থীকে বাড়তি কৃতিত্ব দেওয়া হবে। বরং ওম বিড়লা যে সর্বসম্মত স্পিকার নন এই বার্তা লড়াইয়ের মাধ্যমেই দেওয়া গেছে।