বাংলার পরে কেরালা। ফের বামের (Left) ভোট গেল রামে! ২০১৬ থেকে সেখানে ক্ষমতায় CPIM। অথচ লোকসভার ২০টির মধ্যে মাত্র ১টিতে জিতেছে সেই রাজ্যের শাসকদল। ২০১৯-এও একটিতেই জিতেছিল তারা। তবে, ভোটের হার কমেছে এবার। আর এই লোকসভা নির্বাচনেই প্রথম খাতা খুলেছে BJP। তবে, ১৮টি আসন পেয়ে নিজেদের অবস্থান ধরে রেখেছে কংগ্রেসের নেতৃত্বাধীন ইউডিএফ।কেরালায় (Kerala) এবার লোকসভা নির্বাচনে খাতা খুলেছে বিজেপি। ত্রিশূর লোকসভা এবার দখল করেছে গেরুয়া শিবির। তিরুবনন্তপুরমেও জোর লড়াই হয়। তবে, শেষ মুহূর্তে কংগ্রেসের (Congress) শশী থারুরের কাছে হেরে যান প্রাক্তন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী রাজীব চন্দ্রশেখর। একটি আসন নিয়ে ঝুলিতে পুরলেও প্রায় চার শতাংশ ভোট বাড়িয়েছে পদ্ম শিবির। যদিও ত্রিশূরে বিজেপির লড়াই ছিল কংগ্রেসের সঙ্গে। কিন্তু সিপিএমের কেন্দ্রীয় কমিটির বৈঠকে বিজেপির জয়ের দায় কংগ্রেসের উপর চাপিয়ে দেওয়া হয়নি। কেরালার নির্বাচনে ভরাডুবির দায় মানছে সিপিএমও। দলের সদ্য সমাপ্ত কেন্দ্রীয় কমিটির বৈঠকে এই ফলকে বিপর্যয় বলে উল্লেখ করেছে। লিখিত বিবৃতিতে সিপিআইএম জানিয়েছে, পার্টির গড় বলে পরিচিত অনেক এলাকার ভোটই চলে গিয়েছে বিজেপিতে। এটা ভয়ঙ্কর প্রবণতা। কেরালার জনসংখ্যার বড় অংশ খ্রিস্টান সম্প্রদায়ের। কিন্তু সেখানেও বামেদের প্রভাব কমেছে এবং বিজেপির জোর বেড়েছে বলে স্বীকার করেছে সিপিএম।

কেন্দ্রীয় কমিটির বৈঠকে কেরালার বিপর্যয়ে দলের নেতা-কর্মীদের আচরণ ও রাজ্য সরকারের কাজ নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। বলা হয়েছে, কেরালা (Kerala) সরকার পেনশন-সব গরিব মানুষের জন্য যে আর্থিক সহায়তা প্রকল্প চালু করেছিল সেগুলি বন্ধ বা অনিয়মিত হওয়ায় ইভিএম-এ তার ছাপ পড়েছে। খেটে খাওয়া মানুষ শাসকদলের উপর আস্থা হারিয়েছে। যদিও এই দায় সিপিআইএম কেন্দ্রীয় সরকারের উপর চাপিয়ে দিয়েছে। তাদের অভিযোগ, কেন্দ্র রাজ্য সরকারের উপর অর্থনৈতিক অবরোধ সৃষ্টি করায় রাজ্য সরকার সব চাহিদা পূরণ করতে পারেনি। তার জেরে রাজ্য সরকার কল্যাণমূলক প্রকল্পে যথেষ্ট অর্থ বরাদ্দ করতে পারেনা। কিন্তু এক্ষেত্রে উদাহরণ এসেছে বাংলার। প্রশ্ন উঠেছে, একই পরিস্থিতিতে বাংলার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় সাফল্যের সঙ্গে পরিস্থিতি সামলেছেন। কিন্তু পিনারাই বিজয়ন পারেননি। বাংলার একশো দিনের প্রকল্পের টাকা আটকে রেখেছে কেন্দ্র। আবাস যোজনার টাকাও দিচ্ছে না। তা সত্ত্বেও ভোটের আগে একশো দিনের কাজের প্রকল্পের বকেয়া রাজ্যের তহবিল থেকে মিটিয়ে গরিব মানুষের পাশে দাঁড়িয়েছে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সরকার। সেই কারণে কেরালায় দলের ভরাডুবির দায় সেই রাজ্যের সিপিআইএমের উপরই চাপিয়েছে কেন্দ্রীয় কমিটি।