লক্ষাধিক টাকার মহাপ্রসাদ নষ্ট!বিস্ফোরক অভিযোগ পুরীর গুণ্ডিচা মন্দিরের সেবায়েতের

গুণ্ডিচা মন্দিরে পুজোর আচার-বিধি শুরু হতে দেরি হওয়ায় প্রায় আট লাখ টাকার মহাপ্রসাদ নষ্ট হয়েছে বলে অভিযোগ তাঁর।

এবারের পুরীর রথযাত্রা ঘিরে একাধিক অনিয়মের অভিযোগ সামনে এসেছে। কখনও রথের দড়িতে প্রথম টান দেওয়ার পর শোভাযাত্রা শুরুর সময় মানুষের ভিড়ে পদপিষ্ট হওয়ার মতো পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে। কখনও আবার রথ থেকে নামানোর সময় আচমকাই পড়ে গিয়েছে বলরামের মূর্তি। তাতেই ঘটে বিপত্তি। ঘটনায় আট থেকে ন’জন সেবায়েত আহত হয়েছেন। শুক্রবার গুণ্ডিচা মন্দিরে লাখ লাখ টাকার মহাপ্রসাদ নষ্ট হয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে। সুয়ারা মহাসুয়ারা নিয়োগের সচিব নারায়ণ মহাসুয়ারার অভিযোগ, ৩০ হাজার ভক্তের জন্য ওই মহাপ্রসাদ রান্না করা হয়েছিল। গুণ্ডিচা মন্দিরে পুজোর আচার-বিধি শুরু হতে দেরি হওয়ায় প্রায় আট লাখ টাকার মহাপ্রসাদ নষ্ট হয়েছে বলে অভিযোগ তাঁর।
জানা গিয়েছে, শুক্রবার রাত ১০টা ১০ নাগাদ দ্বিতীয় ভোগমণ্ডপ আচার পালন হয়। মহাপ্রসাদ সময় মতো প্রস্তুত না হওয়ার গুণ্ডিচা মন্দিরে প্রসাদ পাননি ভক্তরা। সময় মতো প্রসাদ না মেলায় স্বভাবতই ভক্তরা রুষ্ট হন। বিপুল পরিমাণ এই ক্ষতির জন্য জগন্নাথ মন্দির কর্তৃপক্ষের থেকে ক্ষতিপূরণের দাবি জানিয়েছেন তিনি। তবে অন্য এক সেবায়েত অবশ্য এই অভিযোগ অস্বীকার করেছেন। ভবানী দাস মহাপাত্র নামে এক সেবায়েত জানিয়েছেন, ভক্ত সমাগম বেড়েই যাচ্ছিল। প্রাথমিক ভাবে ভক্তদের দর্শনের ব্যবস্থা করে দেওয়াই ছিল প্রাধান্য। সেই কারণে গুণ্ডিচা মন্দিরে আচার-রীতি পালনে বেশ কিছুটা দেরি হয়ে যায়। শনিবার বেলা সাড়ে ১২টা নাগাদ গোপালবল্লভ রীতি পালন হয়। এই আচার-বিধি পালন এক দু’ঘণ্টা আগে হয়ে যাওয়ার কথা। তবে এখানে কিছুটা সময় নষ্ট হয়। আচার-রীতি পালনে দেরি হয়েছে কারণ, সেবায়তদের থেকে সেভাবে সহযোগিতা পাওয়া যায়নি। তবে আচার-রীতি পালনে দেরি হলেও মহাপ্রসাদ নষ্ট হয়নি বলে দাবি করেছেন তিনি।

প্রসঙ্গত, মঙ্গলবার বিকেলে গুণ্ডিচা মন্দিরের আদপ মণ্ডপে বলভদ্রের মূর্তি নিয়ে যাওয়ার সময়ই দুর্ঘটনা ঘটে। মাসির বাড়ি গুণ্ডিচায় রথ পৌঁছনোর পর ‘পাহণ্ডি’ আচার পালন করা হচ্ছিল। সেবায়েতরা একে একে জগন্নাথ দেব, বলরাম দেব ও সুভদ্রা দেবীর মূর্তি দোলাতে দোলাতে মন্দিরের ভিতরে নিয়ে যাচ্ছিলেন। সেই সময়ই পিছলে পড়ে যায় বলভদ্রের মূর্তি। পুরী প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, অতিরিক্ত বৃষ্টির কারণে বলরাম দেবের রথ ‘তালধ্বজে’র বিভিন্ন অংশ পিছল হয়ে যায়। রথ থেকে যখন বলভদ্রের মূর্তি নিয়ে গুন্ডিচা মন্দিরে তোলা হচ্ছিল, তখনই আচমকা সেবায়েতরা পিছলে রথের উপর থেকেই পড়ে যান। তাদের হাতে বলভদ্রের মূর্তিটি ধরা ছিল। সেটিকে নিয়েই রথের উপর থেকে নিচে পড়েন তারা।