দুটি কক্ষে কয়েক হাজার কেজি সোনা! পুরীর মন্দিরের রত্নভাণ্ডারে আর কী আছে?

রবিবার কাঁটায় দুপুর ১টা বেজে ২৮ মিনিট। শেষমেশ জল্পনার অবসান ঘটিয়ে খোলে ৪৬ বছর ধরে বন্ধ পড়ে থাকা জগন্নাথ মন্দিরের (Jagannath Temple) রত্নভাণ্ডার (Ratna Bhandar)। এতদিন বন্ধ থাকায় প্রাণভয়েই রত্নভাণ্ডারের ভিতর প্রবেশ করেন বিশেষজ্ঞ প্যানেলের সদস্যরা। ছিলেন হাতেগোনা কয়েকজন সেবায়েতও। তবে পরিদর্শন শেষ হলেও রত্ন ভান্ডার থেকে একদিকে এদিন যেমন কিছুই বের করা সম্ভব হয়নি ঠিক তেমনই জানা যায়নি ভাণ্ডারে রত্নের আসল পরিমাণ। তবে রত্নভাণ্ডার খুলতেই এবার প্রকাশ্যে এল আসল তথ্য‌। ঠিক কী কী রয়েছে পুরীর (Puri) জগন্নাথ মন্দিরের রত্নভাণ্ডারে? এবার সেই সত্য সামনে এনেছে ওড়িশা রিভিউ নামে এক পত্রিকা। সেখানেই পুরীর জগন্নাথ মন্দিরের সঞ্চিত রত্নের পরিমাণ শুনলে মাথা খারাপ হওয়ার জোগাড় দেশবাসীর।

জেনে নেওয়া যাক কী রয়েছে রত্নভাণ্ডারে?

বাইরের ভাণ্ডারে রয়েছে জগন্নাদেবের একটি সোনার মুকুট এবং তিনটি সোনার মালা। প্রতিটি প্রায় দেড় কেজি সোনা দিয়ে তৈরি।

ওড়িশার রাজা অনঙ্গভীম দেব জগন্নাথদেবের অলঙ্কার তৈরির জন্য প্রায় দেড় হাজার কেজি সোনা দিয়েছিলেন।

জগন্নাথ এবং বলভদ্রের সোনার তৈরি শ্রীভুজ বা সোনার হাত রয়েছে।

জগন্নাথ এবং বলভদ্রের সোনার পা রয়েছে।

ভিতরের ভাণ্ডারে রয়েছে ৭৪ সোনার গহনা। প্রতিটির ওজন কমপক্ষে ১ কেজির বেশি।

রয়েছে সোনা, হিরে, প্রবাল, মুক্তো দিয়ে তৈরি প্লেট।

রয়েছে ১৪০টি ভারী রুপোর গয়নাও।

রয়েছে সোনার তৈরি ময়ূরের পালক, কপালে পরার জন্য সোনার পট্টি।

রয়েছে জগন্নাথের সোনার কানের দুল শ্রীকুণ্ডল। সোনার কদম্ব মালা, সোনার চক্র, সোনার গদা, সোনার পদ্ম এবং সোনার শঙ্খ।

উল্লেখ্য, রত্নভান্ডারের ভিতরে দু’টি রত্নকক্ষ রয়েছে। একটি বাইরের এবং অন্যটি ভিতরের। দু’টি কক্ষের ভিতরেই রয়েছে জগন্নাথ, বলভদ্র এবং সুভদ্রার অলঙ্কারসামগ্রী। তবে রবিবার বাইরের কক্ষ থেকে যাবতীয় অলঙ্কার সিন্দুকে ভরে অস্থায়ী ভল্টে রাখা হলেও ভিতরের কক্ষ থেকে কিছুই বার করে আনা যায়নি। মন্দির কর্তৃপক্ষ জানিয়েছেন , সময় পেরিয়ে যাওয়ার কারণেই মাঝপথে কাজ বন্ধ করতে হয়েছে। তবে তালা ভেঙে ভিতরের কক্ষটিতে প্রবেশ করা গিয়েছে। সেখানে কবে কাজ হবে, তার দিনক্ষণ পরে ঠিক করে জানিয়ে দেওয়া হবে। তবে কী কী পাওয়া গিয়েছে রত্নভান্ডার থেকে? এ বিষয়ে ১১ সদস্যের দলের প্রতিনিধিরাও মুখে কুলুপ এঁটেছেন।

এদিকে, ছয় বছরেরও বেশি সময় ধরে খোঁজ মেলেনি রত্ন ভাণ্ডারের চাবির। ফলে ডুপ্লিকেট চাবি নিয়ে এদিন তালা খোলার চেষ্টা করা হয়। যদিও বিফল হয় প্রচেষ্টা। শেষ পর্যন্ত রত্ন ভাণ্ডারের অন্তর্ভাগের কুঠুরির তালা ভেঙে ভিতরে প্রবেশ করা হয়। রত্ন ভাণ্ডার নিয়ে জগন্নাথদেবের ভক্তদের কৌতুহলের শেষ নেই। দীর্ঘ কয়েক দশক ধরে এই রত্ন ভাণ্ডারের অন্দরে কী আছে তা জানতে আগ্রহী সকলেই। আপাতত ৬টি বড় সিন্দুকে সমস্ত সোনাদানা সরিয়ে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে। এরপর শুরু হবে রত্ন ভাণ্ডারের অন্দরের সংস্কারের কাজ। যদিও এই ভাণ্ডার কী কী রত্ন রয়েছে, তা এখনই জানা যাবে না।

Previous articleকোপা চ্যাম্পিয়ন আর্জেন্তিনা, ফাইনালে ১-০ গোলে হারাল কলম্বিয়াকে
Next articleঅনন্ত-রাধিকার বিয়েতে বোমা বিস্ফোরণের হুমকি! অপ্রীতিকর ঘটনা এড়াতে তৎপর মুম্বই পুলিশ