প্রমাণ হল চক্রান্তের তত্ত্ব! তৃণমূলের চাপে পড়ে পিছু হটতে বাধ্য হল রেল

প্রবল চাপের মুখে পড়ে পিছু হটতে বাধ্য হলো রেল। দেদার ট্রেন বাতিলের সিদ্ধান্ত থেকে পিছিয়ে এসে বিজ্ঞপ্তি জারি করে জানিয়ে দিল, ২১ তারিখ কোনও ট্রেন বাতিল হচ্ছে না। স্বাভাবিকভাবেই প্রশ্ন উঠছে, রাতারাতি কি এমন হলো যে রেল পরিষেবা স্বাভাবিক রাখার ঘোষণা। রেলের এই সিদ্ধান্তে একটা জিনিস স্পষ্ট, তৃণমূল যে অভিযোগ করেছিল তা প্রমাণ করে দিল বিজেপি।

কেন্দ্রের অঙ্গুলিহেলনে ট্রেন বাতিল করে তৃণমূলের একুশে জুলাই এর কর্মসূচিকে বাধা দেওয়ার যে চক্রান্ত করা হয়েছিল তা জলের মতো স্পষ্ট। একের পর ট্রেন বাতিলের খবর আসার পর তৃণমূল নেতা কুণাল ঘোষ স্পষ্ট জানান, এর আগেও ব্রিগেডের সভার সময় একই পন্থা নিয়েছিল বিজেপি। কিন্তু তাদের মুখে ঝামা ঘষে দিয়ে সফল ব্রিগেড করে তৃণমূল দেখিয়ে দিয়েছিল এভাবে তাদের আটকানো যায় না। এবারও সেই একই পথ নিলেও , তৃণমূলের প্রবল সমালোচনার চাপে পিছু হটতে বাধ্য হলো রেল।

শুক্রবার একটি বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ্যে আসে যাতে একাধিক লোকাল ট্রেন বাতিলের কথা উল্লেখ করা হয়। বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, আগামিকাল অর্থাৎ ২০ জুলাই আপ-ডাউন মিলিয়ে এক জোড়া নৈহাটি-ব্যান্ডেল, এক জোড়া শিয়ালদহ-শান্তিপুর, এক জোড়া শিয়ালদহ-রানাঘাট, এক জোড়া কল্যাণী সীমান্ত-নৈহাটি লোকাল বাতিল করা হয়েছে। রবিবার (২১ জুলাই ২০২৪) আপ-ডাউন মিলিয়ে চার জোড়া নৈহাটি-ব্যান্ডেল, দু’জোড়়া শিয়ালদহ-কৃষ্ণনগর, দু’জোড়া শিয়ালদহ-শান্তিপুর, এক জোড়়া শিয়ালদহ-রানাঘাট লোকাল। তা ছাড়াও রবিবার বাতিল থাকছে দু’জোড়া শিয়ালদহ-কল্যাণী সীমান্ত লোকাল, এক জোড়া রানাঘাট-নৈহাটি লোকাল এবং একটি নৈহাটি-কল্যাণী সীমান্ত লোকাল বাতিল করার কথা বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়েছে। বালিয়া-শিয়ালদহ এক্সপ্রেস, যোগবাণী-কলকাতা এক্সপ্রেস, গোরক্ষপুর-কলকাতা পূর্বাঞ্চল এক্সপ্রেস, মালদহ টাউন-শিয়ালদহ গৌড় এক্সপ্রেস, জয়নগর-শিয়ালদহ গঙ্গাসাগর এক্সপ্রেস নৈহাটির পরিবর্তে ডানকুনি হয়ে যাবে। তিস্তা তোর্সা এক্সপ্রেসের সূচি বদল করা হচ্ছে বলেও জানা গিয়েছে।

এই পোস্টের কিছুক্ষণের মধ্যেই নড়েচড়ে বসে রেল। সপ্তাহান্তে ট্রেন বাতিলের খবর ‘রটে গেলেও’ তা ‘সত্যি নয়’ বলেই দাবি করেন পূর্ব রেলের জনসংযোগ আধিকারিক কৌশিক মিত্র। তাঁর কথায়, “আমরা কিছু কিছু জায়গা থেকে খবর পাচ্ছি, ২০ এবং ২১ জুলাই শিয়ালদহ ডিভিশনে কিছু কিছু ট্রেন বাতিল হয়েছে বলে খবর রটেছিল। এটা একেবারেই সত্যি নয়। শিয়ালদহ ডিভিশনে ২০ এবং ২১ জুলাই কোনও ট্রেন বাতিল হচ্ছে না। শনি এবং রবিবার যেমন ট্রেন চলে, তেমনই চলবে।”

রবিবার একুশে জুলাই। তৃণমূলের শহিদ সমাবেশ। ইতিমধ্যেই রাজ্যের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে দলের কর্মী সমর্থকরা আসতে শুরু করেছেন। তবে বেশিরভাগ লোকই আগের দিন এবং অনুষ্ঠানের দিন সকালে আসেন। আর বেছে বেছে এই দুটো দিনই শিয়ালদহ ডিভিশনে লোকাল ও দূরপাল্লার ট্রেন বাতিল এবং বেশ কিছু এক্সপ্রেস ট্রেনের যাত্রাপথ পরিবর্তনের খবরে স্বাভাবিকভাবেই জোর শোরগোল পড়ে যায়।

প্রসঙ্গত, এর আগে গত ১০ মার্চ তৃণমূলের ব্রিগেড সমাবেশের দিনও ঠিক একই ভাবে রাজ্যের শাসকদলের কর্মী সমর্থকদের আটকাতে হাওড়া – শিয়ালদহ ডিভিশনে একাধিক ট্রেন বাতিল করা হয়। কিন্তু এত কিছু করেও জোড়াফুলকে আটকানো যায়নি, সড়কপথে লক্ষ লক্ষ মানুষের স্বতঃস্ফূর্ত উপস্থিতিতে ঐতিহাসিক ব্রিগেড করে দেখিয়েছেন মমতা- অভিষেক। ভোটে বিজেপিকে জবাব দিয়েছেন বাংলার মানুষ। মাস খানেক আগেই প্ল্যাটফর্ম সম্প্রসারণের নামে এক সপ্তাহ ধরে শিয়ালদহ ডিভিশনে ভোগান্তির শিকার হলেন নিত্যযাত্রীরা। প্রতি মাসে রেল দুর্ঘটনায় আর ট্রেন বিভ্রাটে যেভাবে যাত্রী সুরক্ষার নামে ছেলেখেলা চলছে তাতে কেন্দ্রীয় সরকারের অপদার্থতা স্পষ্ট হয়ে গেছে।

আরও পড়ুন- জয় দিয়ে এশিয়া কাপের অভিযান শুরু ভারতের, পাকিস্তানকে হারাল ৭ উইকেটে

 

Previous articleজয় দিয়ে এশিয়া কাপের অভিযান শুরু ভারতের, পাকিস্তানকে হারাল ৭ উইকেটে
Next articleনিরাপত্তা আঁটসাঁট করতে পদক্ষেপ, এবার কালো কাচ লাগানো গাড়িতে নিষেধাজ্ঞা বিধানসভায়