নচিকেতা-রচনা সম্মানিত ‘মহানায়ক’-এ, চলচ্চিত্রে বিশেষ অবদানে প্রসেনজিৎকে সম্মান মুখ্যমন্ত্রীর

বাংলা সিনেমার ম্যাটিনি আইডল উত্তমকুমারের ৪৪-তম প্রয়াণ বার্ষিকীতে গায়ক নচিকেতা চক্রবর্তীকে (Nachiketa Chakraborty) ‘মহানায়ক’ সম্মান প্রদান করলেন বাংলার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় (Mamata Banerjee)। অভিনেত্রী – সাংসদ রচনা বন্দ্যোপাধ্যায়কেও (Rachana Banerjee) ‘মহানায়ক’ সম্মান দেওয়া হয়। যদিও দিল্লিতে থাকার কারণে তিনি এদিন শুরুতেই মঞ্চে উপস্থিত হতে পারেননি। পরে তাঁকে পুরস্কার প্রদানের কথা জানান মুখ্যমন্ত্রী। প্রত্যেক বছরের মতো এবারেও রাজ্য সরকারের তথ্য ও সংস্কৃতি দফতরের তরফে ধনধান্য অডিটোরিয়ামে (Dhano Dhanyo Auditorium) উত্তম স্মরণে এক বিশেষ অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। উপস্থিত ছিলেন মহানায়কের পরিবারের সদস্যসহ চলচিত্র জগতের বিশিষ্টরা। ছিলেন রামকৃষ্ণ মঠ মিশনের মহারাজ, রাজ্যের মন্ত্রী চন্দ্রিমা ভট্টাচার্য, ফিরহাদ হাকিম, অরূপ বিশ্বাস, ইন্দ্রনীল সেন, বিধায়ক দেবাশিস কুমার। এদিনের অনুষ্ঠানে উত্তমকুমারের ছবিতে শ্রদ্ধাজ্ঞাপনের পর বাংলা সিনে জগতে বিশেষ অবদানের জন্য চলচিত্র পুরস্কার প্রদান করা হয়। মুখ্যমন্ত্রী জানান, উত্তমকুমার নামের সঙ্গে তাঁর শৈশবের অনেক স্মৃতি জড়িয়ে আছে। ছোটবেলায় মায়ের সঙ্গে সিনেমা দেখা থেকে মহানায়কের সিনেমার গানের কথা উল্লেখ করেন মমতা। তিনি বলেন, উত্তমকুমারের সঙ্গে বাংলার সংস্কৃতির রক্তের সম্পর্ক। আজকের শিল্পীরা যখন ‘সপ্তপদী’ নায়ককে তাঁর সিনেমার গান গেয়ে সম্মান জানা্‌ সেটাই প্রমাণ করে দেয় বাংলা তাঁর স্বকীয়তা, শিকড়, সংস্কৃতিকে আজও ধরে রেখেছে। প্রত্যেক বছর এই দিনটি মহানায়ককে উৎসর্গ করা হয় কারণ তিনি চিরকালীন ‘নায়ক’। পাশাপাশি নিজেদের অস্তিত্ব বজায় রেখে নতুনত্বের সন্ধানের কথাও বলেন তিনি।

পশ্চিমবঙ্গ সরকারের (Government of West Bengal)উদ্যোগে আয়োজিত উত্তম স্মরণ অনুষ্ঠানে ২০২৩ পর্যন্ত ২৩ জন শিল্পীকে ‘মহানায়ক’ সম্মান দেওয়া হয়েছে। বর্ষসেরা সম্মান পেয়েছেন ৪১ জন, বিশেষ চলচিত্র পুরস্কার পেয়েছেন ১৪১ জন, সারা জীবনের অবদানের জন্য ২১ জনকে সম্মানিত করা হয়েছে বলেও জানান মুখ্যমন্ত্রী। এই মঞ্চ থেকে চলতি বছরের কলকাতা আন্তর্জাতিক চলচিত্র উৎসবের নতুন চেয়ারপার্সন হিসেবে জাতীয় পুরস্কারপ্রাপ্ত পরিচালক গৌতম ঘোষের (Gautam Ghosh)নাম ঘোষণা করেন মমতা। কো-চেয়ারপার্সন হলেন প্রসেনজিৎ চট্টোপাধ্যায় (Prosenjit Chatterjee)।

এদিন থিয়েটার এবং সিনেমায় বিশেষ অবদানের জন্য বর্ষসেরা চলচিত্র সম্মান পেলেন অভিনেতা অম্বরীশ ভট্টাচার্য। মুখ্যমন্ত্রী নিজে তাঁকে উত্তরীয় পরিয়ে দেন। বর্ষসেরা চলচিত্র পুরস্কার পান বিশিষ্ট অভিনেতা শুভাশিস মুখোপাধ্যায়। এই প্রজন্মের অভিনেত্রীদের মধ্যে খুব কম সময়ে অত্যন্ত জনপ্রিয় অভিনেত্রী রুক্মিণী মৈত্র।

বাংলা সিনেমায় তাঁর সামগ্রিক অবদানের স্বীকৃতি স্বরূপ বর্ষসেরা চলচিত্র পুরস্কার তাঁর হাতে তুলে দেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। রাজ্য সরকারের তরফে আধুনিক বাংলা গানের জীবনমুখী ধারার অগ্রগণ্য শিল্পী নচিকেতা চক্রবর্তীকে ‘মহানায়ক’ সম্মান প্রদান করা হয়। চলচিত্র শিল্পে প্রসার থেকে বাংলা সিনেমায় বিশেষ অবদানের জন্য সম্মানিত প্রসেনজিৎ চট্টোপাধ্যায়। বিশিষ্ট শিল্পী সমন্বয়ে এক মনোগ্রাহী সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজনও করা হয়। সঙ্গীত পরিবেশন করেন অরুন্ধতী হোম চৌধুরী, নচিকেতা চক্রবর্তী, শ্রীরাধা বন্দ্যোপাধ্যায়, মনোময় ভট্টাচার্য, লোপামুদ্রা মিত্র, রূপঙ্কর বাগচী, রাঘব চট্টোপাধ্যায়, জোজো-সহ অন্যান্যরা। এদিনের অনুষ্ঠানে ৩০ তম কলকাতা আন্তর্জাতিক চলচিত্র উৎসবের দিনও (৪-১১ ডিসেম্বর ২০২৪) জানিয়ে দেন মুখ্যমন্ত্রী।


Previous articleসরকারের বৈঠকে উঠল আলু ব্যবসায়ীদের ধর্মঘট, হিমঘরের আলু আসছে বাজারে
Next article‘মৌসম’ বদলাচ্ছে, মোদি সরকার টিকবে না: অভিষেক, সংসদে দাঁড়িয়ে শ্বেতপত্র প্রকাশের চ্যালেঞ্জ