বর্তমান সমাজে বিয়েতে যৌতুক (Dowry) দেওয়া বা নেওয়া দণ্ডনীয় অপরাধ। তবুও দেশের বিভিন্ন প্রান্তে এখনও সেই রীতি চলে আসছে। কিন্তু এবার যৌতুক দেওয়া নিয়ে বড়সড় ঘোষণা এলাহবাদ হাই কোর্টের (Allahabad High Court)। হাই কোর্ট সম্প্রতি এমন এক রায় দিয়েছে যা নিয়ে রীতিমতো হইচই পড়ে গিয়েছে বলে খবর। এলাহবাদ হাই কোর্ট জানিয়েছে মেয়ের শ্বশুরবাড়ির লোকজন যদি ছেলের ব্যবসার জন্য টাকা চায়, তাহলে তাকে যৌতুক হিসাবে ধরা হবে না।

সম্প্রতি এলাহবাদ হাই কোর্টে এক মহিলা দাবি করেন, তাঁর স্বামী এবং শ্বশুরবাড়ির পরিবার নিজের বাড়ি থেকে ২ লক্ষ টাকা নিয়ে আসার জন্য লাগাতার চাপ সৃষ্টি করছিল। অভিযোগ, ছেলে ব্যবসা করবে বলেই নাকি সম্প্রতি ২ লক্ষ টাকা নিজের বাবা-মার থেকে আনতে চাপ দেয় স্বামী এবং শ্বশুরবাড়ির লোকজন। মামলাটি আদালতে উঠলে বিচারপতি অনিশ কুমার গুপ্তার বেঞ্চ পরিষ্কার জানিয়ে দেয়, ভারতীয় দণ্ডবিধির ৪৯৮এ এবং পণ প্রতিরোধ আইনের ৩/৪ ধারায় একে কোনওভাবেই যৌতুক হিসাবে ভাবা যাবে না। বিচারপতি জানিয়েছেন, এফআইআরে মহিলা তাঁর স্বামী ও শ্বশুরবাড়ির লোকেদের বিরুদ্ধে যে অভিযোগ এনেছেন যা একেবারেই পণের আওতায় পড়ে না। ব্যবসার জন্য টাকা নেওয়াকে কখনোই যৌতুক হিসাবে ধরা যায় না।


উল্লেখ্য, ২০১২ সালে বিবাহবন্ধনে আবদ্ধ হয়েছিলেন অভিযোগকারী মহিলা। তাঁর অভিযোগ, বিয়ের ঠিক পাঁচ বছর পরেই টাকার দাবি করে তাঁর উপর নেমে আসে অকথ্য অত্যাচার। মহিলার আরও অভিযোগ, তাঁর পরিবার বিয়ের সময় সব মিলিয়ে ৮ লক্ষ টাকা খরচ করেছিলেন। বিয়ের পর সব ঠিক চললেও আচমকাই তাল কাটে ৫ বছর পর। ব্যবসার জন্য ২ লক্ষ টাকা চেয়ে ওই মহিলার উপর শারীরিক ও মানসিক যন্ত্রণা শুরু করে তাঁর স্বামী এবং শ্বশুরবাড়ির পরিবারের লোকজন। এমনকি লাগাতার অত্যাচারের কারণে একবার তাঁর গর্ভপাতও হয় বলে খবর। তবে দীর্ঘদিন অত্যাচারের পর একপ্রকার নিরুপায় হয়ে প্রথমে পুলিশের দ্বারস্থ হন মহিলা। এরপর স্বামী ও শ্বশুরবাড়ির লোকেদের বিরুদ্ধে দায়ের হয় এফআইআর। পরে মামলা হাই কোর্টে উঠলে বিচারপতি সাফ জানান, ব্যবসার জন্য টাকা দাবি করলে তাকে যৌতুক বলা যাবে না।
