বিবাহিত হয়েও তৃতীয় ব্যক্তির সঙ্গে সহবাস (লিভ ইন) করলে মা – বাবা ও পরিবারের সম্মানে আঘাত লাগে। এই কারণ দেখিয়ে তিন জোড়া লিভ ইন পার্টনারকে নিরাপত্তা দিতে অস্বীকার করল পঞ্জাব ও হরিয়ানা হাই কোর্ট। আদালত জানিয়েছে, আবেদনকারীরা নিজেদের স্বাধীনভাবে বাঁচার অধিকার অর্জন করতে গিয়ে বাবা – মায়ের সসম্মানে বাঁচার অধিকার হরণ করেছেন।পঞ্জাব ও হরিয়ানা হাইকোর্টের বিচারপতি সন্দীপ মুদগল জানিয়েছেন, সংবিধানের ২১ নম্বর অনুচ্ছেদে জীবনের অধিকার ও ব্যক্তি স্বাধীনতার উল্লেখ রয়েছে। সেখানে ব্যক্তিকে সসম্মানে বাঁচতে দেওয়ার কথারও উল্লেখ রয়েছে। কিন্তু আবেদনকারীরা বাড়ি থেকে বেরিয়ে যাওয়ায় পরিবারের বদনাম হচ্ছে। সঙ্গে তারা তাদের বাবা – মায়ের সসম্মানে বাঁচার অধিকার হরণ করছেন। একথা বলে তিন জোড়া সহবাসসঙ্গীকে পুলিশি নিরাপত্তা দিতে অস্বীকার করেন বিচারপতি।

আদালত যুক্তি দিয়েছে, এভাবে বিবাহবহির্ভূত লিভ ইন সম্পর্কে থাকা ব্যক্তিদের পুলিশি নিরাপত্তা দিলে ভারতীয় সমাজের গভীর নৈতিকতাবোধ ও সামাজিক বিধি অগ্রাহ্য করে গড়ে ওঠা এই সম্পর্কগুলি স্বীকৃতি পেয়ে যাবে। আদালত জানিয়েছে, সংবিধানের ২১ নম্বর অনুচ্ছেদে জীবন ও ব্যক্তি স্বাধীনতার অধিকারের উল্লেখ করেছে। বিচারক বলেছেন, এই ধরণের ব্যক্তিদের আবেদন মেনে নিলে বিপথগামীরা উৎসাহিত হবে। এরা বহুগামিতাকে প্ররোচনা দিচ্ছে। যা ভারতীয় দণ্ডবিধির ৪৯৪ ধারা অনুসারে অপরাধ। এছাড়া এরা নিজেদের বিবাহিত জীবনসঙ্গী ও সন্তানদের সসম্মানে বাঁচার অধিকার থেকে বঞ্চিত করছে। আদালত জানিয়েছে, ভারতীয় সমাজের বুননকে ক্ষতিগ্রস্ত করে এমন কোনও লিভ ইন সম্পর্ক মেনে নেওয়া যাবে না। তা শুধুমাত্র বৈধ আইনি পরিসরে কার্যকর হয়।
বিচারপতি সন্দীপ মুদগিল বলেছেন, এক পবিত্র বন্ধনের আইনি পরিণতি হল বিবাহ। ঐতিহ্য ও সংস্কৃতিপূর্ণ আমাদের দেশে নৈতিকতাকে গুরুত্ব দেওয়া হয়। এখন আমরা অনেকেই পশ্চিমি সংস্কৃতিকে গ্রহণ করছি, যা ভারতীয় সংস্কৃতির থেকে অনেকটাই আলাদা। আজকাল আধুনিক জীবনে অভ্যস্ত অনেকেই লিভ-ইন রিলেশনশিপে বিশ্বাসী। তবে একজন বিবাহিত পুরুষ ও মহিলা বা একজন বিবাহিত মহিলা ও পুরুষ লিভ-ইন করলে তা ব্যভিচার হিসাবে গণ্য হবে। স্বামী বা স্ত্রী থাকার পরেও অন্য সঙ্গী বা সঙ্গিনীর সঙ্গে থাকা বেআইনি। ডিভি আইনে এমন সম্পর্কে থাকা ব্যক্তিদের কোনও আইনি রক্ষাকবচ দেওয়া হবে না।
