সংরক্ষণ বিরোধী আন্দোলনের জের? জামাত-ই ইসলামি-সহ শাখা সংগঠনকে নিষিদ্ধ করল বাংলাদেশ সরকার

সংরক্ষণ বিরোধী আন্দোলনের জের। জামাত-ই ইসলামি, বাংলাদেশ ইসলামি ছাত্রশিবির-সহ তাদের শাখা সংগঠনকে নিষিদ্ধ করল বাংলাদেশ সরকার (Bangladesh Government)। বৃহস্পতিবার, একটি বিজ্ঞপ্তি জারি করে একথা জানায় সে দেশের স্বরাষ্ট্র মন্ত্রক। সংরক্ষণ বিরোধী আন্দোলনে ২০০-র বেশি মানুষের প্রাণ হারিয়েছেন। ছাত্রদের সামনে রেখে বিচ্ছিন্নতাবাদী শক্তিগুলি অশান্তি ছড়িয়ে বলে আগেই অভিযোগ করে বাংলাদেশ সরকার (Bangladesh Government)। বিএনপি এবং জামাত-ই-ইসলামির ইন্ধনের অভিযোগ তোলে শেখ হাসিনা (Shekh Hasina) সরকার ও তাঁর দল আওয়ামি লিগ। এর পরেই এদিন নিষিদ্ধ করার জামাত-ই ইসলামি, বাংলাদেশ ইসলামি ছাত্রশিবিরকে নিষিদ্ধ করার বিজ্ঞপ্তি করা হল।এ বিষয়ে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রক আইনি পরামর্শ পাঠানোর পরে আইনমন্ত্রী আনিসুল হক সাংবাদিকদের জানান, জামাত-ই ইসলামি, ইসলামি ছাত্রশিবির এবং তাদের শাখা সংগঠনকে নিষিদ্ধ করা হল। গত সোমবার আওয়ামি লিগের নেতৃত্বাধীন ১৪টি দলের সভায় জামাতকে নিষিদ্ধ করার বিষয়ে ঐক্যমত্য হয়। আওয়ামি লিগের সভাপতি তথা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সভাপতিত্বে সেই বৈঠক হয়। সেই বৈঠকে সিদ্ধান্তের পরে জামায়ত ও ছাত্রশিবিরকে নিষিদ্ধ করা হল।

২০১৩ সালে আদালতের রায়ে নির্বাচন কমিশন জামাতকে বাতিল করে। হাইকোর্টের রায়ের বিরুদ্ধে সুপ্রিম কোর্টে (Suparna Court) আপিল করে জামাত। ২০২৩-এর ১৯ নভেম্বর সেই আবেদন খারিজ করে দেয় শীর্ষ আদালত। সেই সিদ্ধান্ত বহাল রয়েছে। এবার সন্ত্রাসবিরোধী আইনের ১৮ (১) ধারা অনুযায়ী জামাত-ই ইসলামি, ছাত্রশিবির ও তাদের অন্যান্য শাখা সংগঠনকে নিষিদ্ধ করা হয়েছে।

বিজ্ঞপ্তিতে লেখা হয়েছে-
“এস.আর.ও নং ২৮১-আইন/২০২৪।– যেহেতু, আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল কর্তৃক প্রদত্ত
ICT-BD Case No. 06 of 2011, ICT-BD Case No.02 of 2012, ICT-BD Case No.
03 of 2012-সহ কয়েকটি মামলার রায়ে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী (পূর্বনাম জামায়াত-ই- ইসলামী/জামায়াতে ইসলামী বাংলাদেশ) এবং উহার অঙ্গ সংগঠন বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্রশিবির (পূর্বনাম ইসলামী ছাত্রসংঘ)-কে ১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধকালে সংঘটিত গণহত্যা, যুদ্ধাপরাধ ও মানবতা বিরোধী অপরাধে দায়ী হিসাবে গণ্য করা হইয়াছে; এবং
যেহেতু, বাংলাদেশের সুপ্রীম কোর্টের হাইকোর্ট বিভাগ রিট পিটিশন নং-৬৩০/২০০৯-এ ০১/০৮/২০১৩ তারিখের প্রদত্ত রায়ে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী এর রাজনৈতিক দল হিসাবে বাংলাদেশ নির্বাচন কমিশন কর্তৃক প্রদত্ত/প্রাপ্ত নিবন্ধন বাতিল করিয়া দিয়াছে এবং বাংলাদেশ সুপ্রীম কোর্টের আপীল বিভাগ, হাইকোর্ট বিভাগের উক্ত রায়কে বহাল রাখিয়াছে; এবং
যেহেতু, সরকারের নিকট যথেষ্ট তথ্য প্রমাণ রহিয়াছে যে, বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী এবং উহার অঙ্গ সংগঠন বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্রশিবির সাম্প্রতিককালে সংঘটিত হত্যাযজ্ঞ, ধ্বংসাত্মক কার্যকলাপ ও সন্ত্রাসী কর্মকান্ডে সরাসরি এবং উসকানির মাধ্যমে জড়িত ছিল; এবং
যেহেতু, সরকার বিশ্বাস করে যে, বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী এবং বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্রশিবিরসহ উহার সকল অঙ্গ সংগঠন সন্ত্রাসী কার্যকলাপের সহিত জড়িত রহিয়াছে;
সেহেতু, সরকার, সন্ত্রাস বিরোধী আইন, ২০০৯ এর ধারা ১৮(১) এ প্রদত্ত ক্ষমতাবলে, বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী এবং বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্রশিবিরসহ উহার সকল অঙ্গ সংগঠনকে রাজনৈতিক দল ও সংগঠন হিসাবে নিষিদ্ধ ঘোষণা করিল এবং উক্ত আইনের তফসিল-২ এ বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী ও বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্রশিবিরসহ উহার সকল অঙ্গ সংগঠনকে নিষিদ্ধ সত্ত্বা হিসাবে তালিকাভুক্ত করিল।
২। ইহা অবিলম্বে কার্যকর হইবে।“






Previous articleঅলিম্পিক্সে বেলজিয়ামের কাছে হার ভারতের, কোয়ার্টার ফাইনালে কি পৌঁছাবে হরমনপ্রীতরা ?
Next articleবাম ভোট রামে, নির্বাচনী বিপর্যয়ের পর্যালোচনায় “বিভীষণ” চিহ্নিত করছে সিপিএম!