অগ্নিগর্ভ বাংলাদেশের (Bangladesh) পরিস্থিতি নিয়ে চিন্তা বাড়ছে। গত ২৪ ঘণ্টায় যেভাবে বদলেছে প্রতিবেশী রাষ্ট্রের পরিস্থিতি তাতে চিন্তায় নয়া দিল্লিও। দেশ ছেড়েছেন শেখ হাসিনা (Sheikh Hasina)। বাংলাদেশের দখল নিয়েছে সেনা। মঙ্গলের সকালে অনেকটাই ছন্দে ফেরার চেষ্টা করছে পদ্মাপাড়ের দেশ। এই অবস্থায় অন্তর্বর্তীকালীন জাতীয় সরকারের প্রস্তাব দিতে চাইছে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতারা। সোমবার বাংলাদেশের সেনাপ্রধান জানান যে , অন্তর্বর্তী সরকার গঠনের মাধ্যমেই দেশ চালানোর পরিকল্পনা করা হয়েছে। সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি ও সরকারি সম্পত্তি রক্ষায় এগিয়ে আসার আহ্বান রাষ্ট্রপতি শাহাবুদ্দিন। কিন্তু সংবাদমাধ্যমের মুখোমুখি হয়ে আন্দোলনকারী ছাত্ররা সাফ জানিয়েছেন যে, সেনা সমর্থিত সরকার বা জরুরি অবস্থা দিয়ে রাষ্ট্রপতি শাসিত সরকার, এ ধরনের কোনও সরকারকে বিপ্লবী ছাত্র-জনতা গ্রহণ করবে না।

উত্তাল বাংলাদেশে সেনার নির্দেশ অনুযায়ী আজ থেকেই সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান, সরকারি–বেসরকারি অফিস খুলছে। সোমবার দুপুরে বোন রেহানাকে নিয়ে ঢাকার সরকারি বাসভবন ‘গণভবন’ ছাড়েন শেখ হাসিনা। ঘণ্টাখানেকের মধ্যেই গণভবনে চড়াও হন কয়েক হাজার মানুষ। চলতে থাকে যথেচ্ছ লুটপাট। দুপুর থেকে রাত পর্যন্ত চরম বিশৃঙ্খলা ছবি গোটা দেশ জুড়ে। সেনাপ্রধান এবং রাষ্ট্রপতির তরফে যতই শান্তি রক্ষার আহ্বান জানানো হোক না কেন শ্রীপুর, বরিশাল, যশোর-সহ নানা জেলায় হিংসার বলির সংখ্যা ক্রমশ বাড়ছে। অভিনেতা থেকে ক্রিকেটার সকলেই আক্রান্ত। এই অবস্থায় ছাত্র আন্দোলনের অন্যতম প্রধান সমন্বয়ক নাহিদ ইসলাম জানিয়েছেন, আগামী ২৪ ঘণ্টার মধ্যে একটি অন্তর্বর্তীকালীন জাতীয় সরকারের প্রস্তাব পেশ করবেন তাঁরা। সেখানে অভ্যুত্থানকারীদের অংশ থাকবে এবং নাগরিক সমাজ-সহ সবার প্রতিনিধিত্ব নিশ্চিত করে সেই সরকারে কারা থাকবে তাঁদের নাম প্রকাশ করা হবে। আন্দোলনকারী ছাত্র-নাগরিকের সমর্থিত বা প্রস্তাবিত সরকার ছাড়া আর কোনও ধরনের সরকারকে (সেনা সমর্থিত সরকারই হোক কিংবা জরুরি অবস্থার ঘোষণা করে রাষ্ট্রপতি শাসিত সরকার ) তাঁরা সমর্থন করবেন না বলেও সোমবার স্পষ্ট করে জানিয়ে দেওয়া হয়েছে। কোটা সংস্কারের দাবিতে পড়ুয়াদের আন্দোলন শেষ পর্যন্ত পরিণত হয়েছে রক্তক্ষয়ী রাজনৈতিক পালবদলে। এর শেষ কোথায়, এখন সেটাই সবচেয়ে বড় প্রশ্ন।
