‘বিশেষ’ মামলা। প্রশ্ন উঠেছে আর জি করের পদত্যাগী অধ্যক্ষ সন্দীপ ঘোষের বিরুদ্ধে। সেই সঙ্গে কলকাতা হাইকোর্টে কলকাতা পুলিশের তদন্তের অগ্রগতি নিয়েও প্রশ্ন উঠেছে। নির্যাতিতার পরিবারের তোলা প্রশ্নকে বিবেচনায় রেখে আর জি করের ধর্ষণ ও খুনের ঘটনায় সিবিআই তদন্তের নির্দেশ দিলেন কলকাতা হাইকোর্টের প্রধান বিচারপতির ডিভিশন বেঞ্চ। এই ঘটনায় দ্রুত তদন্ত যে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ তা উল্লেখ করে হাইকোর্ট। বুধবার সকাল ১০টার মধ্যে মামলা সিবিআইকে হস্তান্তর করতে হবে। সেই সঙ্গে আন্দোলনকারী ডাক্তারদের আন্দোলন তুলে নেওয়া নিয়েও ভাবনা চিন্তা করার আর্জি জানান প্রধান বিচারপতি।

সোমবারই নির্যাতিতার পরিবারের সঙ্গে দেখা করে তদন্ত ও দোষীদের উপযুক্ত শাস্তির দাবি করেছিলেন খোদ রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্য়ায়। সেই সঙ্গে তিনি নিজেই ইঙ্গিত দিয়েছিলেন সিবিআই-এর হাতে এই তদন্তভার তুলে দেওয়ার। সেই মতো তিনি নিজে কলকাতা পুলিশকে রবিবার পর্যন্ত সময়সীমা বেঁধেও দেন। তবে এবার কলকাতা পুলিশের তদন্তে সময়ের সঙ্গে সামঞ্জস্যের তফাতের বিষয়টি তুলে ধরে তদন্তভার সিবিআই-কে তুলে দেওয়ার রায় কলকাতা হাইকোর্টের। আদালতের পর্যবেক্ষণ এই মামলায় সময় অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। সময়ের সঙ্গে প্রমাণ নষ্টের সম্ভাবনার কথা তোলে আদালত।
আর জি কর মামলায় একদিকে বিচারপ্রার্থীদের সঠিক বিচার পাইয়ে দেওয়া, অন্যদিকে সাধারণ মানুষের বিশ্বাসযোগ্যতা ফিরিয়ে আনার দায়িত্ব রয়েছে বলে পর্যবেক্ষণ হাইকোর্টের প্রধান বিচারপতির। ইতিমধ্যেই একটা বড় অংশের মানুষের মধ্যে ক্ষোভের সঞ্চার হয়েছে। কলকাতা পুলিশের তদন্তের অগ্রগতি নিয়ে প্রশ্ন তোলেন প্রধান বিচারপতি টি এস শিবজ্ঞানম। নির্যাতিতার পরিবার দাবি করেছিলেন তদন্ত ধীর গতিতে হলে তা বিপথে চালিত হওয়ার সম্ভাবনা থাকছে। সেই আর্জিকে মান্যতা দিয়ে সিবিআই তদন্তের নির্দেশ দেন প্রধান বিচারপতির ডিভিশন বেঞ্চ।

হাইকোর্টে মঙ্গলবার কেস ডায়েরি পেশ করে কলকাতা পুলিশ। সেখানে প্রথম সন্দেহ প্রকাশ করা হয় যেখানে হাসপাতালেরই চিকিৎসকের দেহ এভাবে পাওয়া গেল, সেখানে অধ্যক্ষ কেন অভিযোগ দায়ের করলেন না। পুলিশ অস্বাভাবিক মৃত্যুর মামলা দায়ের করল। সেই মামলা তখনই দায়ের হয় যখন কোনও অভিযোগকারী থাকে না, প্রশ্ন হাইকোর্টের। সেখানেই নির্যাতিতার পরিবারের প্রশ্নের সপক্ষে আদালতের দাবি, প্রশাসনের পক্ষ থেকে পরিবারের পাশে দাঁড়ানো হয়নি। এমনকি অধ্যক্ষ কোনও বিবৃতিও দেননি।

কলকাতা পুলিশের তদন্তে উল্লেখযোগ্য কোনও অগ্রগতি না হওয়ার পর্যবেক্ষণ প্রধান বিচারপতির। তবে এই মামলায় আন্দোলনকারী ডাক্তারদের মানসিকতার পক্ষেও পর্যবেক্ষণ প্রধান বিচারপতির। তবে তাঁদের আন্দোলনের জেরে অত্যন্ত দরিদ্র পরিবার থেকে আসা মানুষ পরিষেবা থেকে বঞ্চিত হচ্ছে বলেও তিনি উল্লেখ করেন। তার রাজ্য সরকারের সঙ্গে আলোচনার প্রেক্ষিতে আন্দোলন প্রত্যাহার নিয়েও তাঁদের চিন্তাভাবনার আর্জি জানান প্রধান বিচারপতি। মামলার পরবর্তী শুনানি তিন সপ্তাহ পরে।
