আরজি কর নিয়ে সুপ্রিম ‘খটকা’, ফের স্ট্যাটাস রিপোর্ট দেওয়ার নির্দেশ সিবিআইকে 

কলকাতার আর জি কর হাসপাতালে (RG Kar Medical College and Hospital) চিকিৎসক খুনের ঘটনায় কলকাতা পুলিশের প্রাথমিক তদন্ত প্রক্রিয়ায় একাধিক ‘খটকা’ সুপ্রিম কোর্টের প্রধান বিচারপতির ডিভিশন বেঞ্চের। রাজ্যের তরফ থেকে ঘটনাক্রমের যে টাইমলাইন দেওয়া হয়, সেখানে একাধিক জায়গায় সংশয় প্রকাশ করেছে প্রধান বিচারপতি ডি ওয়াই চন্দ্রচূড় (DY Chandrachud), বিচারপতি জেবি পারদিওয়ালা ও বিচারপতি মনোজ মিশ্রের বেঞ্চ। মূলত ময়নাতদন্তের সময় এবং অস্বাভাবিক মৃত্যুর মামলা রুজু করার টাইমিং এর মধ্যে কোন রহস্য লুকিয়ে আছে তার দিকেই দৃষ্টি আকর্ষণ করে অসন্তোষ প্রকাশ করে ডিভিশন বেঞ্চ। এদিন মামলার প্রথম পর্বে সিবিআই-এর (CBI)তরফে জমা দেওয়া রিপোর্টে বলা হয়েছিল অপরাধস্থল পরিবর্তন করার জন্য তদন্তে সমস্যা হচ্ছে। যদিও রাজ্যের তরফে সেই দাবি নস্যাৎ করে বলা হয় সমস্ত ঘটনার ভিডিওগ্রাফি করা আছে। কিন্তু ময়নাতদন্তের পর কীভাবে অস্বাভাবিক মৃত্যুর মামলার রুজু হলো তা নিয়ে সন্ধিহান প্রধান বিচারপতি। আগামী ৫ সেপ্টেম্বর এই মামলার পরবর্তী শুনানিতে ফের স্ট্যাটাস রিপোর্ট দিতে হবে সিবিআইকে। চিকিৎসকদের নিরাপত্তায় প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ করতে হবে রাজ্যকেই।

এদিন শুনানি চলাকালীন রাজ্যের আইনজীবী কপিল সিব্বলের (Kapil Sibbal) কাছে বিচারপতি পারদিওয়ালা জানতে চান, “আপনার টাইমলাইন অনুযায়ী ময়নাতদন্ত কখন হয়েছে? আইনজীবী সিব্বল জানান, সন্ধ্যা ৬.১০ মিনিট থেকে ৭.১০ মিনিট। বিচারপতি তখন জানতে চান, সন্ধ্যায় ময়নাতদন্ত হয়ে যাওয়ার পর কীভাবে একটি অস্বাভাবিক মৃত্যু মামলা রুজু হল? আর যদি একটি অস্বাভাবিক মৃত্যু মামলা না-ই হয়ে থাকে, তাহলে ময়নাতদন্তের কী প্রয়োজন ছিল?” বিচার প্রতি স্পষ্ট বলেন যখন ময়না তদন্ত হচ্ছে তার মানে হলো এটি অস্বাভাবিক মৃত্যু। এক্ষেত্রে সন্ধ্যা সাতটা দশে ময়নাতদন্ত শেষ হয়ে যাওয়ার পর রাত সাড়ে এগারোটায় কেন মামলা রুজু হল? এতক্ষণ পুলিশ কী করছিল? এই কেসে কলকাতা পুলিশ (Kolkata Police) এবং রাজ্য প্রশাসনের ভূমিকার যথেষ্ট সমালোচনা করে শীর্ষ আদালত। এরপর অভিযুক্তের পলিগ্রাফ টেস্ট আপডেট জানতে চান বিচারপতি। সিবিআই আইনজীবী জানান, মঙ্গলবার শিয়ালদহ আদালতে আবেদন করা হয়েছে। এরপরে সুপ্রিম কোর্ট নির্দেশ দেয় ২৩ তারিখ (শুক্রবার) বিকেল ৫টার মধ্যে এই আবেদন বিবেচনা করতে হবে শিয়ালদহ এসিজেএমকে। চিকিৎসকদের কাছে কাজে ফেরার আবেদন জানান প্রধান বিচারপতি। রাজ্যকে সাধারণ মানুষের নিরাপত্তা নিশ্চিত করার নির্দেশ দেন ডি ওয়াই চন্দ্রচূড়। এই সময় কেন্দ্রের সলিসিটর জেনারেল তুষার মেহতা এবং রাজ্যের আইনজীবী কপিল সিব্বলের মধ্যে বাকবিতণ্ডা তৈরি হয়। তুষার বলেন, “পশ্চিমবঙ্গের এক মন্ত্রী বলেছেন, আমাদের নেতার বিরুদ্ধে কোনও কথা বললে আঙুল কেটে দেব।” পাল্টা কপিল জানান, বিরোধী দলনেতার শুভেন্দু অধিকারী গুলি চালানোর কথা বলেছেন। এরপরই প্রধান বিচারপতি বিষয়টিতে হস্তক্ষেপ করেন এবং এই ঘটনা নিয়ে রাজনীতি না করার অনুরোধ করেন। আগামী ৫ সেপ্টেম্বর সিবিআইকে মুখবন্ধ খামে তদন্তের অগ্রগতি সংক্রান্ত রিপোর্ট জমা দিতে হবে। ওই দিনই এই কেসের দায়িত্বে থাকা টালা থানার অফিসারকেও আদালতে হাজির করানোর নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।


Previous articleচিকিৎসা আর বিচারব্যবস্থা ধর্মঘট করতে পারে না, AIIMS-কে কড়া বার্তা সুপ্রিম কোর্টের
Next articleরেকর্ড গড়লেন রোনাল্ডো, তবে মাঠে নয় মাঠের বাইরে