শহরের দুই সরকারি হাসপাতালে চিকিৎসা না পেয়ে পথেই মৃত্যু দুর্ঘটনায় জখম তরুণের

এ কেমন প্রতিবাদের ভাষা, যেখানে শুরু হয় মৃত্যু মিছিল! অসহায়, গরিব মানুষ পাচ্ছে না চিকিৎসা পরিষেবা! আর জি করের ঘটনায় সবাই মর্মাহত। সকলেই দোষীদের শাস্তি চাইছে। কিন্তু একের পর এক প্রাণ বলি দিয়ে প্রতিবাদ! সুপ্রিম কোর্ট বলার পরেও উঠছে না চিকিৎসকদের কর্মবিরতি! এর বিচার কে করবে? জুনিয়র চিকিৎসকদের কর্মবিরতির (Dictor Strike) বলি হতে হল এক দরিদ্র তরুণকে।

জানা গিয়েছে, উত্তর ২৪ পরগণার হিঙ্গলগঞ্জের কাঁটাতলার বাসিন্দা তোফাজ্জেল গাজি নামে ওই যুবক বাইক দুর্ঘটনায় গুরুতর জখম হয়েছিলেন সপ্তাহখানেক আগে। প্রথমে তাঁকে টাকি, পরে বসিরহাট মহকুমা হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। তবে শারীরিক অবস্থার অবনতি হলে নিয়ে আসা হয় এসএসকেএমের ট্রমা কেয়ারে ভর্তির জন্য। কর্মবিরতি (Doctor Strike) চলায় তোফাজ্জেলকে ফিরিয়ে দেওয়া হয়। উদ্ভ্রান্তের মতো পরিবারের লোক শহরের এ প্রান্ত থেকে ওপ্রান্তে ঘুরতে থাকে জখম তোফাজ্জেলকে নিয়ে। সঠিক সময় চিকিৎসা না পেয়ে ক্রমশ সংকটজনক হয়ে ওঠে সে। নিয়ে যাওয়া হয় ন্যাশনাল মেডিক্যাল কলেজে। সেখানেও কর্মবিরতি। ফলে একই অবস্থা। অগত্যা তোফাজ্জেলের বাবা ছেলেকে বাঁচাতে নিউটাউনের একটি বেসরকারি হাসপাতালে ভর্তি করেন। ততক্ষণে ছেলে কোমায় চলে গিয়েছেন।

এদিকে নার্সিংহোমে দু’দিনে বিল উঠে যায় ১ লক্ষ ২০ হাজার টাকা। তোফাজ্জেলের বাবা ইটভাটার শ্রমিক। বিলের এই পরিমাণ টাকা তাঁদের কাছে কম নয়। এদিকে ছেলের অবস্থার কোনও উন্নতি হয় না। সেখানকার চিকিৎসকরা জানান, বিশেষ কিছু করার নেই। কম খরচের কোনও নার্সিংহোমে তাঁকে সরিয়ে নেওয়াই ভালো। তখন তোফাজ্জেলকে কদম্বগাছির একটি নার্সিংহোমে ভর্তি করায় পরিবার। সেখানে ভেন্টিলেশনে ছিলেন তিনি। সেখানকার চিকিৎসকেরা জানান, ব্রেন ডেথ হয়ে গিয়েছে তোফাজ্জেলের। ভেন্টিলেশন খুলে দিলেই মৃত্যু হবে। পরিবারের হাতে সিদ্ধান্ত ছেড়ে দেওয়া হয়। তরুণকে নিয়ে বাড়ির দিকে যাওয়ার পথে মৃত্যু ঘটে তাঁর।

আরও পড়ুন: সরকারি হাসপাতালে কর্মবিরতি, বিনা চিকিৎসায় অকাল মৃত্যু কিশোরীর