আর জি করে (RG Kar Hospital) তরুণী চিকিৎসক-পড়ুয়ার ধর্ষণ ও খুনের ঘটনায় উত্তাল গোটা রাজ্য। এই ঘটনার প্রতিবাদে সরকারি হাসপাতালগুলির একশ্রেণির জুনিয়র ডাক্তারদের লাগাতার কর্মবিরতি চলছে। যা ১৮দিন পার। কর্মবিরতির জেরে সরকারি হাসপতালগুলিতে লক্ষ লক্ষ রোগী চিকিৎসা পরিষেবা পরিষেবা থেকে বঞ্চিত। ডাক্তারের অভাবে আট থেকে আশি মুমূর্ষ রোগীদের দিক থেকেও মুখ ফেরাচ্ছে হাসপাতালগুলি। বিনা চিকিৎসায় মৃত্যুর ঘটনায় ঘটেছে। রোগীরা পরিবার পরিজনরাও আর জি করের নির্যাতিতার দোষীদের শাস্তি চায়। কিন্তু তাঁদের একটাই বক্তব্য, ধর্ষণ খুনিদের শাস্তি কেন ভোগ করতে হবে নিরপরাধ অসহায় রোগীদের। সুপ্রিম কোর্ট বলার পরও নিজেদের অবস্থানে অনড় জুনিয়র ডাক্তাররা।

আর জি কর (RG Kar Hospital) কাণ্ডের জেরে হাসপাতালে হাসপাতালে চড়কিপাক খেয়েও চিকিৎসা না পাওয়া, হতদরিদ্র রোগীদের মৃত্যু, গরিব মানুষের কান্নার
আওয়াজ পর্যন্ত পৌঁছছে না কর্মবিরতি করা চিকিৎসকদের কানে। কর্মবিরতির এই ১৮ দিনে সরকারি হাসপাতালে চিকিৎসা পরিষেবা থেকে বঞ্চিত হয়েছেন ৬ লক্ষের বেশি মানুষ। বিষয়টি নিয়ে গত ক’দিনে ক্ষোভে ফেটে পড়েছেন রোগীর পরিজনরা। তাঁদের বক্তব্য, প্রতিবাদ চলুক, পরিষেবাও চলুক।

সাধারণ সময়ে রাজ্যের ২৪টি সরকারি মেডিক্যাল কলেজের আউটডোরে প্রতি ১৫ দিনে পরিষেবা পান অন্তত ১০ লক্ষ ২ হাজার রোগী। সেখানে কর্মবিরতির এই ১৮দিনে আউটডোর পরিষেবা নিতে পেরেছেন অর্ধেকের কম—৪ লক্ষ ৮০ হাজার মানুষ। অর্থাৎ, পরিষেবা থেকে বঞ্চিত হয়েছেন ৫ লক্ষ ৪০ হাজারের বেশি মানুষ। একইভাবে বছরের যে কোনও সাধারণ দিনে গড়ে প্রায় সাড়ে ৬ হাজার মানুষ এই সব মেডিক্যাল কলেজগুলিতে ভর্তি হন। তা এখন কমে হয়েছে ৪ হাজার। ইনডোরে ভর্তির সুবিধা থেকেও বঞ্চিত হয়েছেন সাড়ে ৪০ হাজার মানুষ। এমনকী আন্দোলনের জেরে সরকারি মেডিক্যাল কলেজগুলির ইমার্জেন্সিতেও ২৫ হাজার মানুষ কম এসেছেন। আড়াই হাজারেরও বেশি অপারেশন কম হয়েছে। রোজ গড়ে ৫৭ হাজার রোগীর ল্যাবটেস্ট বা রোগ ও রক্তপরীক্ষা হয় রাজ্যের শীর্ষস্তরের সরকারি হাসপাতাল বা মেডিক্যাল কলেজগুলিতে। সেই হিসেবে ১৮ দিনে নিখরচায় টেস্টের সুবিধা পান ৯ লক্ষ মানুষ। ডাক্তারদের কর্মবিরতির জেরে তাও অর্ধেক কমে দাঁড়িয়েছে ৪ লক্ষ থেকে সাড়ে চার লক্ষতে। ভাটা পড়েছে রক্ত সংগ্রহেও।

আরও পড়ুন: চিকিৎসকদের কর্মবিরতি: সরকারি হাসপাতালে জুনিয়র ডাক্তারদের ভূমিকায় নার্স!

