নৈরাজ্যের নবান্ন অভিযানে আক্রান্ত পুলিশ! রক্তাক্ত হয়েও সংযত থেকে কর্তব্যে অবিচল

আর জি কর (RG Kar Hospital) কাণ্ডের প্রতিবাদে আজ, নবান্ন অভিযানের ডাক দিয়েছিল “পশ্চিমবঙ্গ ছাত্র সমাজ” নামের একটি সংগঠন। যদিও নিজেদের “অরাজনৈতিক” বলে দাবি করা এই সংগঠনের নাম বা অস্তিত্ব আগে কেউ জানে বলে মনে করতে পারছে না। কিন্তু ঝুলির মধ্যে থেকে বিড়াল বেড়িয়ে পড়েছে। আসলে এটি ছিল বিজেপি স্পনসর একটি আপাদ মস্তক পলিটিকাল জঙ্গি পলিটিক্যাল মুভমেন্ট। শান্তিপূর্ণ পূর্ণ নবান্ন অভিযানের নামে নৈরাজ্য ও অশান্তি সৃষ্টি করাই ছিল মূল উদ্দেশ্য। নির্যাতিতার বিচার নয়, বরং প্রতিবাদের নামে চেয়ারের দখলই তাঁদের উদ্দেশ্য। লাশের রাজনীতি করতে নেমেছিল তারা। ফলে এই অভিযানকে বিজেপির অভিযান বলতে কোনও অসুবিধা নেই।

আর জি কর (RG Kar Hospital) ইস্যুকে সামনে রেখে রাজনৈতিক ফায়দা তোলার তাগিদে বিজেপির এমন নবান্ন অভিযানে এদিন বার বার আক্রান্ত হল পুলিশ। শুরু থেকেই আন্দোলনকারীদের নিশানায় ছিল কর্তব্যরত পুলিশ। গঙ্গার এপার ওপারে রক্তগঙ্গা বইয়ে দেওয়াই ছিল তাদের লক্ষ্যে। সেই লক্ষ্যে তারা অনেকটাই সফল। আক্রান্ত একের পর এক পুলিশ। রক্ত ঝরেছে উর্দিধারীদের। কিন্তু সংযম হারায়নি পুলিশ। ধৈর্য রেখে ঠাণ্ডা মাথায় আইনের মধ্যে থেকে এই জঙ্গি আন্দোলনকে নিয়ন্ত্রণ করার চেষ্টা করে গিয়েছে পুলিশ।

হাওড়া ময়দানে পুলিশকে তাড়া আন্দোলনকারীদের। পুলিশকে রাস্তায় ফেলে মারধর করা হয়। ওদিকে অভিযানের শুরুর দিকেই সাঁতরাগাছিতে পুলিশকে লক্ষ্য করে আন্দোলনকারীদের ছোড়া ইঁটে মাথা ফাটে একজন RAF কর্মীর। হাওড়ায় আক্রান্ত হন ২ জন।

এদিকে কলকাতায় বাবুঘাটে নিরস্ত্র ট্রাফিক পুলিশের উপরও আক্রমণ করেন আন্দোলনকারীরা। রীতিমতো লাঠি হাতে ধাওয়া করতে দেখা যায় ওই ট্রাফিক পুলিশের পিছনে। তারপর ওই ট্রাফিক পুলিসকে লক্ষ্য করে লাঠি ছুঁড়ে মারতেও দেখা যায়। বাবুঘাটে ৩ জায়গায় ৩ জন পুলিশ আক্রান্ত বলে জানা গিয়েছে। ওদিকে শিয়ালদহতেও আহত এক পুলিশকর্মী। তাঁর মাথা ফেটে গিয়েছে বলে খবর। সুরেন্দ্রনাথ কলেজের সামনেও একজন পুলিশকর্মী আক্রান্ত বলে খবর। এভাবে জায়গায় জায়গায় পুলিশ আক্রান্ত হওয়ায় স্বাভাবিকভাবেই প্রশ্ন উঠছে, এটা শান্তিপূর্ণ আন্দোলন? ছাত্রের নামে এরা কারা? যেখানে বিজেপি নেতা অর্জুন সিং থেকে কৌস্তুভ বাগচিকে কিছু কিছু জায়গায় নেতৃত্ব দিতে দেখা গিয়েছে।

আর জি কর কাণ্ডে ন্যায়বিচারের দাবিতে বিজেপির নবান্ন অভিযানের শুরুতেই এদিন রণক্ষেত্র হয়ে ওঠে সাঁতরাগাছি। ব্যারিকেড ভেঙে ফেলেন আন্দোলনকারীরা। সাঁতরাগাছিতে দেখা যায় আন্দোলনকারীদের। তুমুল উত্তেজনা ছড়ায়। আন্দোলনকারীদের ছত্রভঙ্গ করতে পুলিস জলকামান দাগে। তারপর মুহুর্মুহু কাঁদানে গ্যাসের শেল ফাটায়। বাধ্য হয়ে মৃদু লাঠিচার্জও করে পুলিশ। উত্তেজনা ছড়ায় হাওড়া সেতুতেও। হাওড়া সেতুতে পুলিশের ব্যারিকেড ভাঙার চেষ্টা করেন বিক্ষোভকারীরা। ব্যারিকেডের একাংশ ভাঙতেই জলকামান চালাতে শুরু করে পুলিশ। ব্যবহার করা হয় কাঁদানে গ্যাসও। লাঠিচার্জও করে পুলিস। পুলিসের ত্রিমুখী আক্রমণে ছত্রভঙ্গ হয়ে যায় বিক্ষোভকারীরা।

এরপর সময় গড়াতেই গন্ডগোল, উত্তেজনা ছড়ায় আরও নানা জায়গা। হেস্টিংস মোড়ে ঝামেলা বাঁধে। ফোরশোর রোডেও নতুন করে ঝামেলা হয়। কাজিপাড়ায় ঝামেলা হয়। ওদিকে লক অ্যান্ড কী করে দেওয়া হয় নবান্নের প্রতিটি গেটে।

আরও পড়ুন: বাংলাকে অচল করার অপচেষ্টা বরদাস্ত নয়, বনধ মানা হবে না: আলাপন

 

Previous articleবেপরোয়া-বিশৃঙ্খল তাণ্ডবে মিলেছে পেট্রল বোমা! তথ্য় দিল পুলিশ, বনধ আটকাতে সব ব্যবস্থা
Next articleবিজেপির মুখোশ খুলে গিয়েছে, যেটা হয়েছে সেটা ফ্লপ শো!নবান্নে সরব মন্ত্রীরা