গ্রামবাসীদের কে থামাবে? হরিয়ানায় বাংলার যুবক খুনে সাফাই মুখ্যমন্ত্রী সাইনির

গণপিটুনিকে মান্যতা দিতে গোহত্যার নিন্দার তত্ত্ব নিয়ে এলেন বিজেপির মুখ্যমন্ত্রী। তিনি স্পষ্ট বলেন, "এটাকে গণপিটুনির ঘটনা বলা যাবে না।

হরিয়ানায় (Haryana) বাংলার যুবককে পিটিয়ে খুনের ঘটনায় গ্রামবাসীদের উপর থেকে সব দোষ কার্যত তুলে নিলেন বিজেপির মুখ্যমন্ত্রী নওয়াব সিং সাইনি (Nayab Singh Saini)। গোরক্ষক গ্রামবাসীদের কে কীভাবে আটকাবে কেউ, উল্টে সেই প্রশ্ন তুলে পিটিয়ে মানুষ খুনের মত ঘটনায় খুনিদের পক্ষ নিলেন বিজেপি রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী। একের পর এক বিজেপি শাসিত রাজ্যে বাংলার পরিযায়ী শ্রমিকরাই যে শুধু অত্যাচারের শিকার তা নয়। মহারাষ্ট্রে (Maharashtra) ট্রেনের মধ্যে গোরুর মাংস নিয়ে যাওয়ার সন্দেহেই বৃদ্ধকে চরম নিগ্রহের শিকার হতে হল। যদিও ভোটমুখি মহারাষ্ট্রে দ্রুত এই ঘটনায় অপরাধীদের গ্রেফতার করে মারাঠা পুলিশ।

বাংলা থেকে পরিযায়ী শ্রমিকের কাজে হরিয়ানার চরকি দাদরি জেলায় যাওয়া যুবককে পিটিয়ে খুন করা হয়। স্থানীয় বাসিন্দারা দাবি করেন, বাংলার যুবক সেখানে গো মাংস খেয়েছিলেন। বাংলা থেকে ঘটনার প্রবল প্রতিবাদ করা হলেও ঘটনায় নিরুত্তাপ বিজেপি শাসিত রাজ্যের প্রশাসন। একধাপ এগিয়ে হরিয়ানা (Haryana) মুখ্যমন্ত্রী সাইনি দাবি করেন, “গরুর রক্ষায় বিধানসভায় কড়া আইন পাশ হয়েছে, এবং তার সঙ্গে কোনওরকম সমঝোতা করা হবে না। যদি কেউ সেই নিয়ম ভাঙেন তবে গ্রামের লোকেদের গরুর প্রতি যে টান তা বুঝতে পারবেন।”

কার্যত গণপিটুনিকে মান্যতা দিতে গোহত্যার নিন্দার তত্ত্ব নিয়ে এলেন বিজেপির মুখ্যমন্ত্রী। তিনি স্পষ্ট বলেন, “এটাকে গণপিটুনির ঘটনা বলা যাবে না।” পাশাপাশি আরও বলেন, “গ্রামবাসীরা যদি জানতে পারেন কেউ গোহত্যা করেছে, তবে তাঁদের কে আটকাতে পারে। আমি বলতে চাই এই ঘটনা হওয়া উচিত নয়। ভবিষ্যতে মানুষকে এধরনের পদক্ষেপ থেকে নিরস্ত থাকতে বলব।”

তবে শুধু হরিয়ানা নয়, বিজেপি ও তার দোসরদের শাসিত সব রাজ্যেই ধর্মীয় উৎপীড়নের শিকার সাধারণ মানুষ থেকে সংখ্যালঘুরা। মহারাষ্ট্রে (Maharashtra) চলন্ত ট্রেনের মধ্যে এক বৃদ্ধকে রীতিমত মারধর করার ভিডিও ভাইরাল হয়। ধুলে এক্সপ্রেসে (Dhule Express) বসার আসন নিয়ে বচসা থেকে বৃদ্ধের ব্যাগে রাখা কৌটোর দিকে নজর ঘোরে প্রায় এক ডজন যুবকের। কল্যাণ ও ইগনপুরি স্টেশনের মাঝেই বিভিন্ন ভাবে হেনস্থা করা, শেষে বৃদ্ধের গায়ে হাত তোলে ওই যুবকরা। শেষে মারধর করে ট্রেন থেকে নামিয়ে দেওয়া হয়। ভিড় ট্রেনের বহু যাত্রী দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে সেই দৃশ্য হাসতে হাসতে উপভোগও করে।

পরে পুলিশ অভিযোগ জানান ৭২ বছরের বৃদ্ধ ও তাঁর পরিবার। ভোটমুখি মহারাষ্ট্রে এখন সব ধরনের পরিস্থিতিতে রাজ্যের মানুষকে শান্ত রাখার প্রয়াস জারি এনডিএ জোট প্রশাসনের। এই পরিস্থিতিতে ৭২ বছরের সংখ্যালঘু বৃদ্ধের হেনস্থায় দ্রুত তিন অভিযুক্তকে গ্রেফতার করে পুলিশ। সেই সঙ্গে ভাইরাল ভিডিও পরীক্ষার জন্য পাঠানো হয় তদন্তের স্বার্থে। বাকি অভিযুক্তদের খোঁজেও তল্লাশি শুরু করেছে পুলিশ।