Wednesday, November 12, 2025

এত বড় একটা মেডিক্যাল কলেজ-হাসপাতাল, এতো মানুষ ছিলেন, এতো ভয়ানক একটা ঘটনা ঘটল- কেউ দেখলেন না, টের পেলেন না! R G Kar Medical College And Hospital-এর চিকিৎসক-পড়ুয়ার ধর্ষণ-খুনের ঘটনা নিয়ে এই প্রশ্ন উঠছিল প্রথম থেকেই। কারণ, প্রথম তদন্তকারী কলকাতা পুলিশ একবারও এই প্রতক্ষ্যদর্শীর কথা বলেনি। আদালতের নির্দেশে তদন্ত করছে কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা CBI। আর সেই তদন্তকারী সংস্থার দাবি, প্রত্যক্ষদর্শীর খোঁজ মিলেছে।কোনও তদন্তের প্রধান দুটি ভিত-তথ্য-প্রমাণ ও প্রত্যক্ষদর্শীর বয়ান। আর জি কর মেডিক্যাল কলেজে তরুণী চিকিৎসকের ধর্ষণ-কাণ্ডে তদন্তভার নেওয়ার পর থেকে কলকাতা পুলিশের থেকে সম্পূর্ণ তথ্য-প্রমাণ না পাওয়ার অভিযোগ করছে CBI। একই সঙ্গে প্রথম দিকে কোনও প্রত্যক্ষদর্শীর উপস্থিতির কথা শোনা যায়নি। কিন্তু তিন সপ্তাহ ধরে অকুস্থলে যাওয়ার পরে কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থার আধিকারিকদের দাবি, প্রত্যক্ষদর্শীর খোঁজ মিলেছে। এই দাবি সত্যি হলে তদন্তে মোড় ঘুরে যাবে।বৃহস্পতিবার সুপ্রিম কোর্টে (Supreme Court) আর জি কর-কাণ্ডের শুনানি হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু বুধবার সন্ধেয় জানা যায়, প্রধান বিচারপতি ডি ওয়াই চন্দ্রচূড় অসুস্থ হওয়ায় বসছে না তাঁর বেঞ্চ। ফলে পিছিয়ে যায় এই মামলার শুনানি। সম্ভবত আগামী সপ্তাহে শুনানি হতে পারে। সেক্ষেত্রে স্টেটাস রিপোর্ট দিতে হাতে আরও কিছু সময় পেল সিবিআই।

সূত্রে খবর, এখনও খুনের সময় নিয়ে ধোঁয়াশা কাটছে না তদন্তকারীদের। কলকাতা পুলিশ জানিয়েছিল, চিকিৎসক খুন হয়েছেন ভোর ৪টে থেকে ৪.৩৫-এর মধ্যে। ময়নাতদন্তের রিপোর্ট অনুযায়ী, ৩টে থেকে ৫টার মধ্যে হত্যা করা হয়েছে। কিন্তু প্রত্যক্ষদর্শী না কি বলছেন অন্য কথা। সিবিআই-এর দাবি, প্রত্যক্ষদর্শীর বয়ান অনুযায়ী, রাত দুটো নাগাদ খুন হয়েছে।

প্রত্যক্ষদর্শীর বয়ানের আরেক গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হল, শেষ কজনের সঙ্গে দেখা গিয়েছিল চিকিৎসক-পড়ুয়াকে? প্রত্যক্ষদর্শীর দাবি, শেষবার তরুণীকে ৫-৬ জনের সঙ্গে দেখা গিয়েছিল। তাঁদের ভূমিকা কি? তাঁরাও কি ঘটনায় জড়িত?

আরও একটি প্রশ্ন ঘোরাফেরা করছে- ধর্ষণের পর মুখ বন্ধ করতেই কি খুন? না কি খুন করাটাই মূল উদ্দেশ্য ছিল? ধর্ষণ শুরু তদন্তের মোড় ঘোরানোর জন্য!

ঘুমন্ত অবস্থায় তিলোত্তমা আক্রান্ত হয়েছিলেন, না কি ঘুমোতে যাওয়ার আগেই ঘটনা ঘটে? সে বিষয় নিয়েও নতুন সূত্র হাতে এসেছে বলে দাবি সিবিআইয়ের তদন্তারীদের।

কে এই প্রত্যক্ষদর্শীর? সিবিআই-এর তরফে স্পষ্ট জানানো হয়েছে, কোনওভাবেই প্রত্যক্ষদর্শীর নাম প্রকাশ করা হবে না। কারণ, তাতে নিরাপত্তাজনিত সমস্যা হতে পারে। তাঁর গোপন জবানবন্দির ব্যবস্থা করা হয়েছে।

শুধু সময় বা অনেক লোকের উপস্থিতির সম্ভাবনাই নয়, ধোঁয়াশা রয়েছে সঞ্জয়ের জামায় লাগা রক্ত নিয়েও। এই কাণ্ডে ধৃত সঞ্জয় রায়ের পলিগ্রাফ টেস্টে জানা গিয়েছে, হাসপাতাল থেকে চতুর্থ ব্যাটালিয়নে ফিরেই জামাকাপড় ধুয়ে ফেলেছিল। তারপরেও কীভাবে রক্তের দাগ থাকল? পলিগ্রাফে সঞ্জয়ের আরও দাবি, ব্যাটালিয়নে ঢোকার সময়ে বাইরে জুতো খুলেছিল সে। তাহলে বাজেয়াপ্ত করার সময় জামাকাপড়ের পাশাপাশি সেই জুতো ব্যাটালিয়নের ভিতরে কীভাবে পাওয়া গেল?

সুপ্রিম কোর্টে স্টেটাস রিপোর্ট পেশ করার জন্য হাতে আরও কিছু সময় পেল কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা। সেই রিপোর্টে এই সময় প্রশ্নের উত্তর পাওয়া যাবে কি না, এখন তার দিকেই চেয়ে আছে সবাই।










Related articles

রাজ্যের সমবায় ব্যাঙ্কে স্বচ্ছতা আনতে চালু অনলাইন অডিট ব্যবস্থা

রাজ্যের সমবায় ব্যাঙ্কগুলির আর্থিক লেনদেনে স্বচ্ছতা আনতে বড় পদক্ষেপ নিল রাজ্য সরকার। এ বার থেকে সমস্ত সমবায় সমিতি...

সরকারি প্রকল্পে স্বচ্ছতা বাড়াতে চালু হচ্ছে জিও ট্যাগিং ব্যবস্থা! নির্দেশিকা জারি নবান্নের 

সরকারি প্রকল্পের বাস্তবায়ন ও তদারকিতে আরও স্বচ্ছতা আনতে বড় পদক্ষেপ নিল রাজ্য সরকার। নবান্নের নির্দেশে এবার থেকে রাজ্যের...

মুখ্যমন্ত্রীকে কটূক্তি! ‘নারীবিদ্বেষী’ শান্তনু ঠাকুরের ইস্তফার দাবি তৃণমূলের

বিজেপি বাংলাকে সম্মান করে না। এই বিজেপি মহিলাদেরও সম্মান করে না, করতে জানেও না। সেটা আরও একবার প্রমাণ...

মৃত ভোটারের নামে ফর্ম জমা পড়লে কঠোর পদক্ষেপের নির্দেশ কমিশনের

মৃত ভোটারের নামে এনুমারেশন ফর্ম জমা পড়লে এবার সরাসরি আইনি ব্যবস্থা নেবে নির্বাচন কমিশন। কমিশনের নতুন নির্দেশিকা অনুযায়ী,...
Exit mobile version