অসুস্থ পুলিশকে ফেরালো বেসরকারি হাসপাতাল, ‘অমানবিক’ চিকিৎসকদের পাশে স্যোশাল মিডিয়া!

সমাজমাধ্যমে (Social media) নিজেদের ব্যক্তিগত মত প্রকাশের স্বাধীনতা সবার রয়েছে। কিন্তু তাই বলে কুৎসা অপপ্রচার আর মনুষ্যত্বহীনতার যে পরিচয় দিচ্ছে এ শহরের তথাকথিত নাগরিক সমাজ, তাকে ধিক্কার দিলেও কম বলা হয়। মানুষকে রক্ষা করার দায়িত্ব নিয়েছেন যাঁরা , সেই পুলিশের (KP) অসুস্থতায় কলকাতা শহরের একের পর এক বেসরকারি হাসপাতাল তাঁকে ভর্তি নিতে অস্বীকার করায় চিকিৎসকদের ‘হিপোক্রেটিক শপথ’ নিয়ে প্রশ্ন উঠছে। এ কেমন নাগরিক সমাজ? অসুস্থ টালা থানার (Tala Police Station) ওসি অভিজিৎ মণ্ডলকে (Abhijit Mondal) ভর্তি নিতে অস্বীকার শহরের ৫টি নামী বেসরকারি হাসপাতালের। আর গোটা ঘটনায় সোশ্যাল মিডিয়ার সমর্থন যেন বারবার করে বুঝিয়ে দিচ্ছে এ সমাজ ভুলেছে তার মানবিকতা। যে চিকিৎসকরা নিজেদের ‘ভগবান’ মনে করেন, তাঁরা সামান্য মনুষ্যত্বের পরিচয়টুকু দিতে ব্যর্থ হলেন।

আর জি কর কাণ্ডের জেরে এই মুহূর্তে পুলিশ প্রশাসনের উপর নিজেদের ক্ষোভ উগরে দিচ্ছে চিকিৎসক মহলের একাংশ। তাঁদের আন্দোলন, কর্মবিরতি এই সব কিছুকে সমর্থন করছেন তথাকথিত শিক্ষিত সমাজের সোশ্যাল মিডিয়া ব্যবহারকারীরা। সেখানে কখনও পুলিশের বিরুদ্ধে গালিগালাজ, আবার কখনও অপর্ণা সেন, ঋতুপর্ণা সেনগুপ্তের মতো অভিনেত্রীকে ‘চটিচাটা’ বলে প্রতিবাদী আন্দোলনে হেনস্থা করাকে সমর্থনের দৃশ্য ধরা পড়ছে। কিন্তু এবার তো আরও ভয়ঙ্কর কাণ্ড। চিকিৎসা ব্রতে যারা শপথ নিয়েছেন তারা নিজেদের আক্রোশ চরিতার্থ করতে গিয়ে একজন অসুস্থ মানুষকে ফিরিয়ে দিলেন শুধুমাত্র তিনি পুলিশকর্মী বলে। আর জি কর হাসপাতালে হামলার ঘটনা থেকে শুরু করে চিকিৎসকের ধর্ষণ খুনে পুলিশের ভূমিকা নিয়ে অনেকের মধ্যেই ক্ষোভ রয়েছে। বিচার চলছে সুপ্রিম কোর্টে (SC), তদন্ত করছে কেন্দ্রীয় এজেন্সি। কিন্তু ডাক্তার নিজের শপথ বলছেন এ ছবিটা বড্ড বেশি বেদনাদায়ক। লালবাজারের পক্ষ থেকে অভিযোগ করে বলা হয়েছে, ‘আর জি কর কাণ্ডের প্রতিবাদে চিকিৎসক সমাজ কার্যত একজোট হয়ে টালা থানার ওসিকে ভর্তি করছে না।’ বুধবার বিকেলে অসুস্থ ওসিকে নিয়ে এক হাসপাতাল থেকে অন্য হাসপাতালে ছুটতে হচ্ছে কলকাতা পুলিসের অফিসারদের। শেষপর্যন্ত শহরের একটি সরকারি হাসপাতালে ঠাঁই হয় অসুস্থ ওসি-র। প্যানিক অ্যাটাকে জ্ঞান হারিয়ে থানার মধ্যে হঠাৎ অসুস্থ হয়ে পড়েন টালা থানার ওসি অভিজিৎ মণ্ডল। তাঁকে দ্রুত নিয়ে যাওয়া হয় সিএমআরআই, কোঠারির মতো একাধিক নামী বেসরকারি হাসপাতালে ছুটে যান। কিন্তু কোনও হাসপাতালই তাঁকে ভর্তি নিতে চায়নি বলে পুলিশের অভিযোগ। কোঠারি হাসপাতাল আবার রোগী ভর্তি করে বেড নম্বর, ভিজিটার পাস ইস্যু করার পর রহস্যজনক ভাবে অ্যাডমিশন বাতিল করে দেয়! পিঠ বাঁচাতে CMRI হাসপাতালের যুক্তি ওসির অসুস্থতা নাকি গুরুতর ছিল না!

R G Kar: প্রত্যক্ষদর্শীর খোঁজ মিলেছে! চাঞ্চল্যকর দাবি CBI-এর

ইতিমধ্যেই আন্দোলনরত চিকিৎসকদের হোয়াটস অ্যাপ গ্রুপের চ্যাট (যদিও সেই চ্যাটের সতত্যা যাচাই করেনি বিশ্ববাংলা সংবাদ)। তাতে টালা থানার ওসি অসুস্থ হওয়া এবং হাসপাতাল থেকে প্রত্যাখান ইস্যুতে উল্লাস নজর এসেছে। এই ঘটনায় বিস্মিত চিকিৎসক মহলেরই একাংশ। নির্যাতিতার বিচারের দাবিতে যারা পথে নেমেছিলেন সেই নাগরিক সমাজের কেউ কেউ স্তম্ভিত হয়ে গেছেন। ডাক্তারদের এই রূপ যে কতটা নিন্দনীয় তা প্রকাশ করার মত ভাষা হারাচ্ছেন অনেক শুভবুদ্ধিসম্পন্ন মানুষই।


Previous articleদলে দুই ডিফেন্ডার ইউস্তে ও আনোয়ার, ডিফেন্স নিয়ে কী বললেন কুয়াদ্রাত?
Next articleনারী নির্যাতনে মাত্র ৩০ শতাংশ দোষীর সাজা! অভিষেকের দাবির মান্যতা NCRB-র পরিসংখ্যানে