পাহাড়ে ফের নতুন দল! হামরো পার্টির অবলুপ্তিতে আশঙ্কা গোর্খাল্যান্ড-অশান্তির

হামরো পার্টির (Hamro party) অবলুপ্তি ঘটিয়ে নতুন দলের মাথায় বসতে চলেছেন অজয় এডওয়ার্ড (Ajay Edward)। আর তাতেই অশান্তির আঁচ

0
1
ফাইল ছবি

পাহাড়ে হামরো পার্টির (Hamro Party) অবলুপ্তির পর নতুন দল গঠনের সম্ভাবনা প্রবল। আর তাতেই তৈরি হয়েছে হয়েছে অশান্তির কালো মেঘ। গোর্খাল্যান্ডের (Gorkhaland) জিগির তুলেই যে পাহাড়ে নতুন দল গড়ে উঠছে, তা স্পষ্ট। হামরো পার্টিকে অবলুপ্ত করে দেওয়ার নেপথ্যেই লুকিয়ে রয়েছে সেই সম্ভাবনা।

রাজনৈতিক মহলে খবর, পাহাড়ে নতুন দল আত্মপ্রকাশ করতে চলেছে ৬ নভেম্বর। শিলিগুড়িতে হবে নতুন দলের আত্মপ্রকাশ অনুষ্ঠান। সেই দলের শীর্ষ পদে থাকতে চলেছেন অজয় এডওয়ার্ড। যিনি হামরো পার্টির প্রতিষ্ঠাতা। অর্থাৎ হামরো পার্টির (Hamro party) অবলুপ্তি ঘটিয়ে নতুন দলের মাথায় বসতে চলেছেন অজয় এডওয়ার্ড (Ajay Edward)। আর তাতেই অশান্তির আঁচ পেতে শুরু করেছে পাহাড়।

পাহাড়-রাজনীতিতে হঠাৎ করে উত্থান হয় অজয় এডওয়ার্ডের হামরো পার্টির। তিন মাসের মধ্যে নতুন পার্টি তৈরি করে ক্ষমতায় আসীন হয় তারা। কিন্তু কিছুদিনের মধ্যেই ফের পাহাড়ের রাজনীতিতে বদল আসে। অনীত থাপার দল ভারতীয় গোর্খা প্রজাতান্ত্রিক মোর্চার কাছে মসনদ হারাতে হয় অজয়কে। তারপরই পার্টির অবলুপ্তি ঘটিয়ে অজয় এডওয়ার্ডের নতুন দল গঠনে উদ্যোগী হলেন দু’বছরের মধ্যে। সেখানে শামিল জিটিএ-র একাধিক প্রাক্তন সভাসদ থেকে শুরু করে গোর্খা জনমুক্তি মোর্চার জনা কয়েক নেতা, দলের প্রাক্তন বিধায়ক-সহ অনেকেই। হরকা বাহাদুর ছেত্রীর মতো পাহাড়ের প্রবীণ নেতাদের সঙ্গেও কথা চালানো হচ্ছে এই নতুন দলে শামিল হওয়ার জন্য। ৬ নভেম্বর শিলিগুড়িতে নতুন দলের নাম ও সংবিধান ঠিক করে ফেলা হবে। আর সেখানে যে গোর্খাল্যান্ড জিগির থাকবে তা বলাই বাহুল্য। কেননা গোর্খাল্যান্ড ইস্যুকে হাতিয়ার করেই পাহাড়ের বিরোধী শক্তি এক হতে চাইছে। এই কাজে ইন্ধন দিচ্ছে বিজেপি। বিজেপি চাইছে পাহাড়ে সমীকরণ বদলে অশান্তির বাতাবরণ তৈরি করতে। রাজনৈতিক ফায়দা তুলতেই এই পরিকল্পনা বিজেপি ও তার বন্ধু দলগুলির।

পাহাড়ে জমি হারানো অজয় এডওয়ার্ড, বিমল গুরুংদের (Bimal Gurung) উসকানি দিয়ে রাজনৈতিক প্রভাব বাড়াতে চায় বিজেপি। সূত্রের খবর, নতুন দলের সভাপতি হতে পারেন অজয় এডওয়ার্ড এবং সম্পাদক হতে পারেন স্থানীয় টিভি চ্যানেলের মালিক নরেন্দ্র তামাং। সোমবার অজয় এডওয়ার্ড পরিষ্কার জানিয়ে দেন, ৬ নভেম্বরের পর হামরো পার্টির অবলুপ্তি (abolish) ঘটতে চলেছে। হামরো পার্টির আর অস্তিত্ব থাকবে না। পাহাড়ে নতুন দল গঠন হবে। তিনি জানান, নির্বাচন কমিশনে (Election COmmission of India) হামরো পার্টির রেজিস্ট্রেশন (registration) সম্ভব হচ্ছে না। তাই এই সিদ্ধান্ত। কিন্তু রাজনৈতিক মহল মনে করছে, পাহাড়ে নতুন দল গড়ার ভাবনার পিছনে রয়েছে অন্য কাহিনি। পাহাড় রাজনীতিতে কোণঠাসা হয়ে মাত্র দু’বছরের মধ্যে দল তুলে নিতে বাধ্য হচ্ছেন তিনি। ২০২২ সালের ২৫ নভেম্বর পৃথক গোর্খাল্যান্ড রাজ্যের দাবি সামনে রেখে হামরো পার্টি গঠন করেছিলেন। এবার নতুন দলেও সেই একই দাবি থাকবে। এবং তিনি যাদের শামিল করতে চাইছেন তাঁরাও গোর্খাল্যান্ডের সমর্থনে হাত বাড়িয়ে দিতে প্রস্তুত। অজয় সুস্পষ্টভাবেই জানিয়ে দেন, নতুন দলে শামিল হচ্ছেন জিটিএ-র (GTA) প্রাক্তন সভাসদ সঞ্জয় থুংলং-সহ বেশ কয়েকজন। পাহাড়ের অন্যান্য দলের নেতৃত্ব যোগাযোগ করছেন। আদতে পাহাড়ি বিরোধী দলগুলো জোট বাঁধতে চলেছে অজয়ের মঞ্চে, সেটাই স্পষ্ট। গোর্খাল্যান্ডের পাশাপাশি জিটিএ-র বিরুদ্ধে তীব্র আন্দোলন গড়ে তোলাও থাকছে নতুন দলের অ্যাজেন্ডায়। নরেন্দ্র তামাং গোর্খাদের জোট বাঁধার ডাক দিয়ে জানান, তাঁদের নতুন দলে গোর্খা জনমুক্তি মোর্চার প্রাক্তন বিধায়ক গৌলেন লেপচাও যোগ দেবেন। হরকা বাহাদুর ছেত্রীর সঙ্গেও কথা চলছে। পাহাড়ে ফের পালাবদল স্রেফ সময়ের অপেক্ষা।