জুনিয়র ডাক্তারদের আন্দোলন জিইয়ে রাখতে বাম-রাম উস্কানি, ফের ই-মেল নবান্নে

মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে মুখোমুখি আলোচনার ‘রেকর্ড’ হাতে পেয়েছেন জুনিয়র ডাক্তারেরা। কিন্তু সেটা নিয়েও তাদের অভিযোগ।

আরজি কর কাণ্ডে জুনিয়র ডাক্তারদের প্রতি আন্দোলনের প্রথম দিন থেকেই সহানুভূতিশীল ও মানবিক দৃষ্টিভঙ্গি রেখেছেন স্বয়ং মুখ‌্যমন্ত্রী। তারই নির্দেশে জুনিয়র ডাক্তারদের নবান্নে প্রথম ই-মেল পাঠিয়ে আলোচনার জন‌্য ডেকে পাঠানো হয়। তাদের দাবি মেনে ইতিমধ্যেই রাজ্যের বিভিন্ন হাসপাতালে চালু হয়েছে রেফারেল সিস্টেম।রাজ্যের তরফে সুপ্রিম কোর্টে জানিয়ে দেওয়া হয়েছে, এখনও পর্যন্ত কোন কোন সিস্টেম চালু করা হয়েছে।এত স্বচ্ছতার পরেও তাদের দাবির শেষ নেই। তাদের এই আন্দোলন জিইয়ে রাখার পিছনে যে রাম বাম জোটের উস্কানি আছে,তা স্পষ্ট হয়ে গিয়েছে।এমনকী,মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে মুখোমুখি আলোচনার ‘রেকর্ড’ হাতে পেয়েছেন জুনিয়র ডাক্তারেরা। কিন্তু সেটা নিয়েও তাদের অভিযোগ।

সেদিনের আলোচিত কিছু বিষয়ের উল্লেখ ‘রেকর্ডে’ নেই বলে জানিয়েছেন তারা। প্রায় দু’সপ্তাহ পরে এই বিষয়ে মুখ্যসচিব মনোজ পন্থকে ফের ইমেল করেছে পশ্চিমবঙ্গ জুনিয়র ডক্টর্‌স ফ্রন্ট।আরজি করে মহিলা চিকিৎসককে ধর্ষণ-খুনের ঘটনার প্রতিবাদে বিচার চেয়ে এবং স্বাস্থ্য ক্ষেত্রে একাধিক পরিবর্তনের দাবি নিয়ে ধর্মতলায় অনশনে বসেছিলেন জুনিয়র ডাক্তারেরা। তাদের প্রতিনিধিদের সঙ্গে গত ২১ অক্টোবর মুখ্যমন্ত্রী বৈঠক করেন নবান্নে। সেই বৈঠকের সরাসরি সম্প্রচার হয়েছিল। বৈঠকে কী কী আলোচনা হয়েছে, তা ‘রেকর্ড’ আকারে পরে জুনিয়র ডাক্তারদের হাতে তুলে দেওয়া হয়। সেই ‘রেকর্ড’ নিয়েই পাল্টা ইমেল করে করেছেন তারা মুখ্যসচিবকে।

জুনিয়র ডাক্তারেরা জানিয়েছেন, মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে বৈঠকে রাজ্যের প্রতিটি মেডিক্যাল কলেজে ‘রেসিডেন্ট ডক্টর্‌স’ অ্যাসোসিয়েশন’ গঠনের কথা বলা হয়েছিল। কিন্তু রেকর্ডে তার উল্লেখ নেই। নির্দিষ্ট দিনক্ষণ না বললেও বৈঠকের রেকর্ডে ২০২৫ সালের মার্চ মাসের মধ্যে মেডিক্যাল কলেজগুলিতে ছাত্র সংগঠনের নির্বাচন হবে বলে উল্লেখ করা হয়েছে। ওই নির্বাচনের জন্য আরডিএ গঠন অত্যন্ত জরুরি, জানিয়েছেন জুনিয়র ডাক্তারেরা। তাদের বক্তব্য,২১ তারিখের বৈঠকে এই বিষয়টি নিয়ে আলোচনা হয়েছিল। কিন্তু তা রেকর্ডে রাখা হয়নি। তাদের অনুরোধ, আরডিএ-র বিষয়টি উল্লেখ করে নতুন করে আলোচনার রেকর্ড পাঠানো হোক।

ইমেলে ডাক্তারেরা আরও জানিয়েছেন, বৈঠকের ‘রেকর্ড’ অনুযায়ী, মেডিক্যাল কলেজগুলির সমস্ত অভিযোগ প্রথমে শোনার কথা হাসপাতালের অধ্যক্ষের। তার পর তার রিপোর্ট স্বাস্থ্য দফতরের মাধ্যমে যাবে মুখ্যসচিবের কাছে। কিন্তু এ ক্ষেত্রে ন্যাশনাল মেডিক্যাল কমিশনের উল্লেখ করে ডাক্তারেরা বলেছেন, ওই অভিযোগগুলি অধ্যক্ষের কাছ থেকে সরাসরি মেডিক্যাল কাউন্সিলের কাছে পাঠানো উচিত। রাজ্য সরকারের কাছে নয়।

ওবিসি সংরক্ষণ নিয়ে মামলার কারণে নিয়োগপ্রক্রিয়া আটকে আছে বলে ‘রেকর্ডে’ জানানো হয়েছে। জুনিয়র ডাক্তারদের বক্তব্য, কোনও একটি সংরক্ষণের মামলার কারণে গোটা নিয়োগপ্রক্রিয়া বন্ধ হতে পারে না। ডাক্তারেরা আরও জানিয়েছেন, সে দিনের বৈঠকে আলোচনা হলেও কলেজ স্তরের অংশীদারদের (স্টেকহোল্ডার) কমিটির বৈঠক এখনও কোথাও হয়নি। এখনও কলেজ পর্যায়ের কোনও অভিযোগ নিষ্পত্তি সেল তৈরি হয়নি বলে জানানো হয়েছে।

হাসপাতালে স্বাস্থ্যকর্মী এবং ডাক্তারদের নিরাপত্তা সুনিশ্চিত করা হবে বলে বলা হয়েছিল।সেই সংক্রান্ত কোনও উদ্যোগ নেওয়া হয়নি বলে উল্লেখ করা হয়েছে। এখনও অধিকাংশ হাসপাতালেই দেখা মেলেনি ‘উইনার্স টিম’ এবং ‘শক্তি টিম’-এর।রাজ্য সরকারের তরফে তাদের দাবি মেনে অনেক কাজই হয়েছে, কিন্তু তাদের দাবির শেষ নেই। মুখ‍্যমন্ত্রী স্পষ্ট বলেছেন , বাম ও রাম একত্রিত হয়ে গন্ডগোল করেছে। ছাত্রদের কোনও দোষ নেই।মৃত্যু বেদনাদায়ক। এটা একটা সামাজিক ব্যাধি। প্রকৃত দোষী যেন শাস্তি পায়। নিরাপরাধ যেন শাস্তি না পায়।

3.
4.
5.
6.
7.
8.
9.
10.