রাজ্য প্রশাসন কখনও বিচারকের ভূমিকা নিতে পারে না! বুলডোজার (Bulldozer) নীতিকে নৈরাজ্যের লক্ষণ বলে জানিয়ে গাইডলাইন তৈরি করে দিল দেশের শীর্ষ আদালত। বুধবার সুপ্রিম কোর্ট রায় (verdict) দেয়, অপরাধ করলেই বুলডোজার দিয়ে তার বাড়ি ভাঙা নৈরাজ্যের লক্ষণ। রাজ্য প্রশাসনের কোনও অধিকার নেই বিচারকের ভূমিকায় বসে অভিযুক্তের বিচার সম্পন্ন হওয়ার আগেই বেসরকারি ও বাণিজ্যিক সম্পত্তিকে গুঁড়িয়ে দেওয়ার।

বিরোধীরা বারবার অভিযোগ করে এসেছে বিজেপিশাসিত রাজ্যগুলিতে বুলডোজার দিয়ে অভিযুক্তদের বাড়ি ভাঙা হচ্ছে কোনও নিয়ম-নীতির তোয়াক্কা না করেই। উত্তরপ্রদেশের (Uttarpradesh) মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথের তো নামই হয়ে গিয়েছে বুলডোজার বাবা। এ প্রসঙ্গে স্পষ্ট ভাবে সুপ্রিম কোর্ট (Supreme Court) বেআইনি ও দখলীকৃত নির্মাণ ধ্বংসের ক্ষেত্রে গাইডলাইন বেঁধে দিল। জানিয়ে দিল ১৫ দিনের নোটিশ না দিয়ে কোনওভাবেই বাড়ি ভাঙা যাবে না। এই ঘটনার ভিডিও রেকর্ডিংও করতে হবে। সুপ্রিম কোর্টের (Supreme Court) সোজাসাপ্টা পর্যবেক্ষণ, প্রশাসন বিচারকের ভূমিকা নিতে পারেন না। সংবিধান তাঁকে সেই অনুমতি দেয়নি। তাই যত দাগী অপরাধীই হোক না কেন তার বাড়িঘর বুলডোজার (bulldozer) দিয়ে ভেঙে দিয়ে হাততালি কোড়াতে পারেন না কোনও প্রশাসক।

সুপ্রিম কোর্টে বিচারপতি গাওয়াই ও বিচারপতি কেভি বিশ্বনাথনকে নিয়ে গঠিত বেঞ্চ রায় দেয়, কারও কোনও অপরাধে প্রশাসক বাড়িতে বুলডোজার চালালে বুঝতে হবে তিনি আইনবিরুদ্ধ কাজ করছেন। এরকম ঘটনার দায় সেই প্রশাসকের উপরই বর্তাবে। কারণ সংবিধানে এবং বিচারব্যবস্থায় স্বেচ্ছাচারিতার কোনও স্থান নেই। কারণ নাগরিক অধিকারে কোনওভাবেই লঙ্ঘন করা যাবে না। শীর্ষ আদালতের এই নির্দেশ বিজেপিশাসিত উত্তরপ্রদেশ ও মধ্যপ্রদেশ সরকারের জন্য বড় ধাক্কা বলেই মনে করছে রাজনৈতিক মহল। উল্লেখ্য যোগী-রাজ্যেই প্রথম এই বুলডোজার সংস্কৃতি শুরু হয়েছিল, ক্রমেই তা সংক্রামিত হয়েছিল বিজেপিশাসিত মধ্যপ্রদেশ-সহ অন্য রাজ্যে। সুপ্রিম-রায়ে যোগী ও শিবরাজ তাই জবরদস্ত ধাক্কা খেলেন বুধবার। বুলডোজার দিয়ে বাড়ি ভেঙে দেওয়ার ঘটনা নিয়ে একটি মামলা দায়ের হয়েছিল সুপ্রিম কোর্টে। সেই মামলার দীর্ঘ শুনানির পর বুধবার রায় ঘোষণা করেন বিচারপতিদ্বয়।
